হুমকির মুখে সফটওয়্যার ও স্টার্টআপ খাত

নিজস্ব প্রতিবেদক।

এ বছরের জুন মাসে শেষ হচ্ছে সফটওয়্যার ও তথ্যপ্রযুক্তি সার্ভিস খাতে আয়কর অব্যাহতি সুবিধার মেয়াদ। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এই অব্যাহতির মেয়াদ বৃদ্ধি না করলে হুমকির মুখে পড়তে যাচ্ছে সম্ভবনাময় এই খাতের বিকাশ।  এতে সরকারের ঘোষিত স্মার্ট বাংলাদেশ পরিকল্পনা বাস্তবায়নও  ক্ষতিগ্রস্ত হবে।এমনই আশঙ্কা করেছেন এই খাতের উদ্যোক্তারা।

আজ ডেইলি ষ্টার মিলনায়তনে “টেক স্টার্টআপ : ইনকাম ট্যাক্স পলিসি সাপোর্ট” শীর্ষক একটি গোলটেবিল আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।  অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন দেশের ২০টি উদীয়মান স্টার্টআপ উদ্যোক্তা, স্টার্টআপ সেক্টরে বিনিয়োগকারী বেশকিছু প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি, ট্যাক্স বিশেষজ্ঞ ও বেসিসের নেতৃবৃন্দ।

বক্তারা বলেন,আমাদের পার্শবর্তী দেশগুলোতে টেকনোলজি খাতে নতুন স্টার্টআপ বিনিয়োগ উৎসাহিত করতে উদ্যোক্তাদের অনেক ধরণের প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছেI দীর্ঘমেয়াদি কর অব্যাহতি এইরকম প্রণোদনার মধ্যে সবচেয়ে বেশি কার্যকরI আমাদের দেশেও গত ৫ বছরে টেকনোলজি স্টার্টআপ সেক্টরে প্রায় ১ বিলিয়ন ডলার বিদেশী বিনিয়োগ এসেছে। এই বছরের জুন মাসের পরে যদি অব্যাহতি সুবিধা তুলে নেওয়া হয়, তাহলে একদিকে যেমন বিনিয়োগ কমে যাবে, অন্যদিকে সফটওয়্যার রপ্তানির অনেক টাকা দেশে না আসার শঙ্কা তৈরী হবে, যাতে আরো চাপ পড়বে দেশের ডলার রিজার্ভের উপর।

অনুষ্ঠানের মূল সঞ্চালনকারী বেসিসের সাবেক সভাপতি ফাহিম মাসরুর বলেন,জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের হিসাব অনুযায়ী সরকার আইসিটি খাতে কর অব্যাহতি বাবদ প্রতি বছর প্রায় ১,৪৭০ কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে। এই হিসাবে এই খাতের কোম্পানিগুলো বছরে ৫ হাজার কোটি টাকার লাভ করছে।

Post MIddle

তিনি বলেন,এই হিসাব কোনোভাবেই বাস্তব চিত্রের প্ৰতিফলন না। বর্তমানে সফটওয়্যার ও তথ্যপ্রযুক্তি সেবার ৫ হাজারের বেশি ক্ষদ্র উদ্যোক্তা সব মিলিয়ে বছরে সর্বোচ্চ ১,০০০ কোটি টাকা মুনাফা করে যা থেকে সর্বোচ্চ ৩০০ কোটি টাকা সরকার পাবে কর অব্যাহতি সুবিধা তুলে নিলে।

তিনি রাজস্ব বোর্ডের কাছে আহবান করেন যাতে কোম্পানি লেভেলে জরিপ করে এই সেক্টরের প্রকৃত মুনাফার হিসাব নিরুপন করা হয়।

অনুষ্ঠানে বেসিসের সাবেক সভাপতি শামীম আহসান বলেন,সরকার ইতিমধ্যেই যে সকল পলিসি সাপোর্ট তথ্যপ্রযুক্তি খাতে দিয়ে আসছে তার সুফল সবেমাত্র আসা শুরু হয়েছে। যে কর অব্যাহতি অনির্দিষ্টকাল পর্যন্ত থাকুক সেটা এই খাতের কেওই চায় না। তবে এখনই তুলে নিলে সরকার অতি স্বল্প মেয়াদে যে পরিমান সামান্য অতিরিক্ত কর পাবে, তার থেকেও বেশি কর হারাবে আগামী পাঁচ থেকে দশ বছরে।

এছাড়াও অনেক উদ্যোক্তা দেশে ব্যবসা করা ছেড়ে বিদেশে চলে যেয়ে ব্যবসা শুরু করবে, যাতে সবচেয়ে বড় ক্ষতি হবে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টির।

অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন বেসিসের বেসিসের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি সামিরা জুবেরী হিমিকা, ভেঞ্চার ক্যাপিটাল এসোসিয়েশনের পরিচালক শওকত হোসেন, পলিসি গবেষণা প্রতিষ্ঠান আই-আই-ডির প্রধান সায়ীদ আহমেদ। এছাড়াও বক্তব্য দেন ২০টি স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠানের ফাউন্ডার ও কে-ফাউন্ডার। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন স্টার্টআপ ব্যবসা ও ট্যাক্স বিশেষজ্ঞ স্নেহাশীষ বড়ুয়া।

পছন্দের আরো পোস্ট