ধান কাটলো শাবিপ্রবির শিক্ষার্থীরা

রাজীব হোসেন,শাবিপ্রবি প্রতিনিধিঃ

কৃষকের উৎপাদিত ধানের ন্যায্য দাম না পাওয়ায় ধানে আগুন দিয়ে দেশের বিভিন্ন জায়গাতে যখন প্রতিবাদ চলে এমতাবস্থায় কৃষকের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের দুঃখের ভাগীদার হয়ে কৃষকের পাকা ধান কেটে দিয়েছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) শিক্ষার্থীরা।বৃহস্পতিবার শাবিপ্রবির বেগম সিরাজুন্নেছা চৌধুরী ছাত্রী হলের সামনে গাজী কালুর টিলার পাশে অবস্থিত কৃষক আব্দুল মতিনের জমির পাকা ধান কেটে দেন তারা।

বৃহস্পতিবার ১১টা থেকে প্রায় দুপুর ২টা পর্যন্ত কাজ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী টিলারগাঁও এলাকার কৃষক আব্দুল মতিনের জমি থেকে পাকা ধান কেটে ঘরে তুলে দেন শাবি শিক্ষার্থীরা।এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের ১৫-১৭ শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন।

ধান কাটতে আসা শাবিপ্রবির সিএসই বিভাগের ছাত্র মোহাম্মদ ফয়সাল আহমেদ জানান, সরকার থেকে ১ হাজার ৫০ টাকা দাম নির্ধারণ করে দিলেও কৃষক এই দাম পাচ্ছেন না। কৃষক প্রতি মণে পাচ্ছেন বড়জোর ৫ শত টাকা। এটার মূল কারণ সরকার মধ্যস্বত্বভোগীদের মাধ্যমে কৃষকদের কাছ থেকে ধান কিনছেন।

Post MIddle

এতে মধ্যস্বত্বভোগীরা কৃষকের ধানের নানান দোষ ধরে ধানের ন্যায্য দাম দিচ্ছেন না।গত বছরে আমাদের দেশে ধানের ফলন একটু খারাপ হয়েছিল। সেজন্য সরকার চাহিদা পূরণের করতে অতিরিক্ত চাল আমদানি করে। যেখানে আমাদের মোট ঘাটতি ছিলো ৮ লক্ষ মেট্রিক টন সেখানে সরকার আমদানি করছিলো ২৯ লক্ষ মেট্রিক টন।

এই যে অতিরিক্ত আমদানি এটাও দায়ী এই অবস্থা তৈরিতে। এই অবস্থায় সরকার চাইলেই এটার সুষ্ঠু পদক্ষেপ নিতে পারেন কিন্তু সরকার আসলে কৃষকদের জন্য কিছুই করছেন না।

কৃষকের ধান কাটার কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া ইংরেজি বিভাগের ছাত্র মোহাম্মদ শাহিন জানান, আমাদের এখানে আসার মূল কারণ হলো কৃষকদের উৎসাহিত করা। তারা রাষ্ট্রে নিজেদেরকে কখনো একা ভেবে কৃষি কাজে নিরুৎসাহিত যেন না হয় এবং তাদের বুঝানোর জন্য যে আমরা তাদের সাথে আছি। তারাই আমাদের অন্ন যোগান দেয়। তাদের বাদ রেখে তো আমরা বেশি দূর যেতে পারবো না কারণ বেলা শেষে আমাদের কিন্তু কৃষকের উৎপাদিত ফসলের ভাত খেয়েই বাঁচতে হবে।

এবিষয়ে কৃষক আব্দুল মতিনের বলেন, খুব ভালো লাগছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ভাইয়েরা এসে আমাদের সাথে কাজ করছে, আমাদের পাশে দাড়িয়েছে। কিন্তু, আমাদের উৎপাদিত ধানের দাম কম। এই দামে ধান বিক্রি করলে শ্রমিকের খরচই উঠে না। এরকম অবস্থা চলতে থাকলে আমাদেরকে চাষআবাদ বাদ দিয়ে অন্য পেশা খুঁজতে হবে।

পছন্দের আরো পোস্ট