স্বপ্ন পুরনে পড়তে পারেন ইবিতে

হাজারো স্বপ্ন আর আশা নিয়ে মানুষের জীবন। মানুষকে স্বপ্ন পূরণে সর্বদা তৎপর থাকতে হয়। ছাত্রজীবন ভবিষ্যৎ জীবনের স্বপ্ন বুননের প্রকৃত সময়। এ সময়ই স্থির করতে হয় শিক্ষার্থীকে তার ভবিষ্যৎ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য। অনেকে স্বপ্ন দেখেন মেডিকেলে পড়ার, কেউ প্রকৌশলে, কেউবা স্বপ্ন দেখেন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার। দেশের বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর মধ্যে আসন সংখ্যায় ৬ষ্ঠ বৃহত্তম ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়। একুশতকের উন্নত বিশ্বে যুগোপযোগী জনসম্পদ তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়।

প্রাকৃতির অপরুপ সৌন্দর্যের চাদরে ঘেরা স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয় এটি। কুষ্টিয়া শহর থেকে ২৪কি.মি ও ঝিনাইদহ শহর থেকে ২২কি.মি দূরে ১৯৭৯ সালে কালি নদীর তীরে শান্তিডাঙ্গা-দুলালপুর নামক স্থানে নিবীড় পল্লীতে প্রতিষ্ঠিত হয় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়। প্রাকৃতিক পরিবেশ যেভাবে সৌন্দর্যে দিয়ে আগলে রেখেছে তেমনি শিক্ষা প্রদানের ক্ষেত্রেও পিছিয়ে নেই ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়।

দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর মত আধুনিক শিক্ষার সাথে তাল মিলিয়ে শিক্ষা প্রদান করে আসছে বিশ্ববিদ্যালটি। বর্তমানে পাঁচটি অনুষদের অধীনে ৩৩ টি বিভাগ রয়েছে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে। আধুনিক শিক্ষার বিভিন্ন শাখার সাথে সংযোগ ও গভীর সম্পর্ক নিয়ে শিক্ষা প্রদান করছে বিশ্ববিদ্যালয়ের থিওলজি এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ অনুষদ। এ অনুষদের অধীন তিনটি বিভাগ চালু আছে। আল-কুরআন এন্ড ইসলামিক স্টডিজ, আল-হাদিস এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ এবং দাওয়া এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ। সাহিত্য, ইতিহাস, সরকার ব্যবস্থা, উন্নয়ন অধ্যায়নসহ বিভিন্ন কারিকুলামে শিক্ষা প্রদান করা হয় মানবিক ও সমাজ বিজ্ঞান অনুষদে। অনুষদে দশটি বিভাগ রয়েছে। বিভাগগুলো হচ্ছে-বাংলা, ইংরেজি, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি, লোক-প্রশাসন, অর্থনীতি, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, আরবি ভাষা ও সাহিত্য, লোক-সাহিত্য, উন্নয়ন অধ্যায়ন এবং সোসাল ওয়েলফেয়ার বিভাগ। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় এবং দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা পেশায় নিয়োজিত আছেন এ অনুষদের শিক্ষার্থীরা। এছাড়াও বিসিএস, কোম্পানী, শিল্পকারখানাসহ বিভিন্ন সরকারী বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে প্রধান হিসেবে কর্মরত আছেন এ অনুষদের শিক্ষার্থীরা।

আইন ও শরিয়াহ অনুষদে রয়েছে তিনটি বিভাগ-আইন, আল-ফিকহ এন্ড লিগ্যাল স্টাডিজ বিভাগ, আইন ও ভূমি ব্যবস্থাপনা। বিশ্ববিদ্যালয়ের এ অনুষদের শিক্ষার্থীরা বিচারক, আইনজীবীসহ বিভিন্ন সরকারী বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে আইন বিষেশজ্ঞ হিসেবে অবদান রাখছেন।

Post MIddle

ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদে ৬টি বিভাগ রয়েছে- হিসাব বিজ্ঞান ও তথ্য পদ্ধতি, ব্যবস্থাপনা, ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং, মার্কেটিং, মানব সম্পদ উন্নয়ন ব্যবস্থাপনা, হসপিটালিটি ম্যানেজম্যান্ট বিভাগ। এ অনুষদের শিক্ষার্থীরা বিসিএস, ব্যাংকিং, বীমা, কোম্পানীসহ দেশে এবং দেশের বাইরে গড়েছেন উন্নত ক্যারিয়ার।

ফলিত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি অনুষদে রয়েছে ৯টি বিভাগ। বিভাগগুলো হচ্ছে- ইলেক্টট্রিক্যাল এন্ড ইলেক্ট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং, ফলিত রসায়ন ও কেমিকৌশল ইঞ্জিনিয়ারিং প্রযুক্তি, কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, ইনফরমেশন এন্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং, বায়োটেকনোলজি এন্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং, ফলিত পুষ্টি ও খাদ্য, গণিত, পরিসংখ্যান বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং, ফার্মেসী বিভাগ। বিজ্ঞান অনুষদের শিক্ষার্র্থীরা টেলিকমিউনিকেশন, ওয়ার্লেস, নেটওয়ার্কিং, সফটওয়্যার ফার্ম, শিল্পকারখানাসহ দেশের বিভিন্ন পর্যায়ে কর্মরত আছেন। এছাড়াও জাপান, জার্মানীসহ দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছেন এ অনুষদের শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্সিটিটিউড অব কোয়ালিটি অ্যাসোরেন্স সেলের মাধ্যেমে প্রতিটি বিভাগে শিক্ষার মান উন্নয়ন বিষয়ক কর্মশালার মাধ্যেমে তদারকি করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কর্মশালার মাধ্যেমে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি বিভাগকে মান-সম্মত শিক্ষা পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের যুগোপযুগী করে গড়ে তোলা হচ্ছে।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শুধু দেশেই নয় বাইরের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথেও গড়েছে অটুট সম্পর্ক। ২০১৫ সালে জাপানের নাগাসকি বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবরেটরি অব ওরাল মলিকুলার বায়োলজি বিভাগের সাথে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এছাড়াও ২০১৬ সালে চীনের কনফুসিয়াস ইন্সিটিটিউডের সাথে একটি চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের। বিভিন্ন সেমিনার আয়োজনের মধ্যে দিয়ে একসাথে কাজ শুরু করছে জাপানের নাগাসকি বিশ্ববিদ্যালয় এবং চীনের কনফুসিয়াস ইন্সিটিটিউড। বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইআইইআর এর অধীনে চায়নিজসহ বিভিন্ন ভাষা শিক্ষা কোর্স চালু রয়েছে।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রাশিদ আসকারী বলেন,‘মানসম্মত শিক্ষক, বিশ্বমানের একাডেমিক কারিকুলাম নিয়ে সম্পূর্ণ সেশনজট মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়। সময় উপযোগী বিভিন্ন বিভাগ চালু করা হয়েছে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে। এছাড়াও চায়নিজ ও জাপানিজ ভাষা শিক্ষার অবারিত সুজোগ রয়েছে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে।’
উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. শাহিনুর রহমান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের স্বচ্ছতা ও কর্মদক্ষতা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত হচ্ছে। মান সম্মত শিক্ষকদের পঠন পাঠনের মাধ্যেমে উন্নত স্থান দখল করতে সক্ষম হচ্ছে আমাদের শিক্ষার্থীরা।’

পছন্দের আরো পোস্ট