হারিয়ে যাচ্ছে ডাংগুলি খেলা

আধুনিক সব খেলাধুলার চাপে হারিয়ে গেছে গ্রাম বাংলার জনপ্রিয় ডাংগুলি খেলা । সেকালে মাঠ ঘাটে দাবড়ি বেড়ানো শিশু কিশোরা দল বেঁধে মাঠে নেমে মেতে উঠতো ডাংগুলি খেলায়। রাস্তায় আর মাঠের কাছে নিরাপদ দুরুত্ব বজায় রেখে শত শত দর্শক উপভোগ করতে সেকালের জনপ্রিয় ওই খেলা। গ্রামীণ জনপদে আর সেই খেলা আর দেখা যায় না। এই খেলার স্থান দখল করে নিয়েছে একালের ক্রিকেট।

এযুগের শিশু কিশোর আর বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের কাছে আজকের দিনের ক্রিকেট খেলা ধীরে ধীরে জনপ্রিয় হতে চললেও প্রবীণদের কাছে এখনো ডাঙ্গুলি খেলার স্মৃতি চোখে ভাসে। গ্রামীণ জনপদের প্রবীণরা আজমের প্রজন্মের সাথে যখন বসে তখন নিজেদের স্মৃতি পাতা থেকে বলে হায় হুতাস করে। সেই সময়কালের ঐতিহ্যবাহী বলি খেলা, গরুর লড়াই, তুম্বুরু খেলা ,বাইস্কোপ, ডাংগুলি, হা-ডু-ডু, খেলার মত জনপ্রিয় খেলার স্মৃতিচারণ করার মাধ্যমে মনে ভাব প্রকাশ করে ফিরে যেতে মন চাই বলে জানায় আজকে বয়সের ভারে নুয়ে পড়া প্রবীণজনরা।

Post MIddle

গ্রাম- অঞ্চলের ডাঙ্গুলি খেলার বর্ণনা দিয়ে প্রবীণরা জানায়, সেকালের শিশু শিশোরদের জনপ্রিয় এই খেলাটিতে খেলার উপকরণ হিসেবে ব্যবহৃত হত দেড় থেকে দুই ফুট লম্বা একটি লাঠি। সাথে ব্যবহার করা হতো ছয় ইঞ্চি সাইজের আরেকটি লাঠি(গোলা)। একদল এক প্রান্ত থেকে ছোট লাঠিটি ছুড়ে মারতো অপর প্রান্তে থাকা প্রতিপক্ষের দিকে।

লম্বা লাঠি হাতে থাকা দলের একজন ছুড়ে দেয়া ছোট লাঠিটি লম্বা লাঠির মাধ্যমে পিঠিয়ে বহু দুরে নিক্ষেপের চেষ্টা করতো। একে বলে ডাং বা ডাণ্ডা, অপরটি গুলি- যা নামে গোল মনে হলেও গোল নয় এটি , প্রায় ৩-৫ ইঞ্চি লম্বা আরেকটি ছোট লাঠি বা কাঠি যার দুই প্রান্ত কিছুটা সুচালো করা থাকে যা পরিচিতি হল (গোলা)।

খবর নিয়ে জানা যায়, চট্টগ্রামের যেসব উপজেলায় আধুনিকতা ছোঁয়া লেগেছে সেখান থেকে পুরানো দিনে সব খেলাধুলা হারিয়ে গেছে। এখনো দুর্গম যেসব উপজেলায় রয়েছে সেখানে শুধু ঠিকে আছে এসব জনপ্রিয় খেলাধুলা। গ্রামীণ জনপদের সচেতন লোকজন মনে করে আধুনিক সমাজে জনপ্রিয় খেলাধুলার সাথে আগের দিনের সাড়া জাগানো খেলাধুলা ঠিকে রাখা খুবই জরুরী। এসব খেলাধুলার মাধ্যমে ফুটে উঠতে পারে গ্রাম বাংলার আদি সংস্কৃতি।

পছন্দের আরো পোস্ট