“ছিন্নমূল শিশু”

f639768f-03b2-4812-91e9-bdf727e77dd9

স্বপ্নের নাটাই আজ কোথায়? আপনার, আমার কারও জানা নেই। নাটাই বিহীন ঘুরি আজ আপনার আমার কাছে প্রশ্নবিদ্ধ?? ঘোর অন্ধকার, হালকা কিসের যেন শব্দ শোনা যাচ্ছে, ঠিক বোঝা যাচ্ছে না, হঠাত আলোয় চোখের সামনে যা দেখি,তা সত্যিই মর্মাহত করে আমাদের বিবেককে? ১০-১২ বছরের যুবক ডাস্টবিনের পঁচা ময়লা যুক্ত খাবার নিয়ে খাচ্ছে,যেখানে সাধারনের চলাচলের অযোগ্য, সেখানে ক্ষুধার জ্বালায় নিমগ্নে খাবার খেয়ে যাচ্ছে?

 

 

আমাদের সমাজে এমন শিশুর সংখ্যা হয়তো স্বাভাবিক শিশুর সংখ্যার চেয়েও বেশি,যারা নিজেদের চাহিদা মেটাতে অক্ষম, তারা আজ ঘরছারা, সমাজ তাদের নামের আগে পথকলি, ছিন্নমুল, টোকাই নাম দিয়ে দিয়েছে। কিন্তু তাদেরতো পরিচয় আছে,জন্মের পরেই তো তারা টোকাই হয়ে যায়নি,তাদের টোকাই বানানো হয়েছে। এর দায়ী কে হবে,আমাদের পরিবার,সমাজ ব্যবস্থা, রাষ্ট্র ? অবাক লাগে এর দায়িত্ব আমরা কেউ নিতে চাচ্ছি না, তাহলে এরা কে ? কি এদের পরিচয় ?

 

80f07389-dd9b-4c14-b6b0-1313fc837c48

 

 

Post MIddle

বাজার,মন্দির,টার্মিনাল,রেলস্টেশন,নগরীর ফুটপাতে অবাধ তাদের চলাফেরা দেখা যায়। দু’বেলা ভাতের জন্য চুরি, ডাকাতি, মাদকদ্রব্য সেবন, খুন করা, ভাসমান যৌনকর্মী হিসাবে কাজ করে যাচ্ছে। অথচ তাদের তো একটা পরিচয় আছে, স্নেহভরা মায়ের কোল কি তার নিরাপদ আশ্রয়স্থল না। আমরা প্রতিবছর ২ রা অক্টোবর পথশিশু দিবস, কন্যা শিশু দিবস ৩০ সেপ্ট:, বিশ্বশিশু দিবস ২০ নভেম্বর ঘটা করে পালন করছি ? কার জন্য পালন করছি ?

 

 

সুধী সমাজের যারা বিবেক দুটো হাততালি পাবার আশায় সেই ঘরের দুলালীরেই নিয়ে ব্যানার পেষ্টনের মাধ্যমে মিডিয়ায় প্রচার করে,বাহবাহও কম পায় না, কিন্তু যাদের নিয়ে পথচলা তারা আজও ফুটপাতেই রয়ে গেল, আমাদের সমাজ ব্যবস্থা কিছুই করতে পারছে না, কিছু সরকারী, বেসরকারী সামাজিক সংস্থা এগিয়ে আসলেও সুধী সমাজ সহ বিত্তবানদের সহযোগিতা না থাকায় তাদের ভাগ্য আজও পরিবর্তন হচ্ছে না ,রাস্তার পাশে আইসক্রীম খাবার জন্য ঠিকই তাদের রাহাজারি করতে হয়, ভাতের জন্য যুদ্ধ করে বেঁচে থাকতে হয়। বেঁচে থাকার তাগিদে ড্রাগ গ্রহন ৪৪ শতাংশ, পিকেটিংয়ে ৩৫ শতাংশ, হাইজ্যাক ১২ শতাংশ,আন্ডারগ্রাউন্ডে ২১ শতাংশ,বোমাবাজি ১৬ শতাংশ, মাদক সেবন ৮৫ শতাংশ সহ বিভিন্ন কাজে শিশুরা জড়িয়ে পরছে,ফলে আমাদের আগামীর পথচলার হাতিয়ার সঠিক শিক্ষায় শিক্ষিত হচ্ছে না, তাহলে আমরা কাদের নিয়ে সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন দেখবো,স্বপ্ন যেখানে ঘূর্নায়মান লাটিম ?

 

 

 

আসলেই আমরা না স্নপ্ন দেখতে ভুলে গেছি, অন্যর দেখা স্বপ্ন নিয়ে বাচার চেষ্টা করছি মাত্র আসুন না, আমরা নিজেই নিজেরা স্নপ্ন দেখি,স্বপ্ন দেখি ক্ষুধা -দারিদ্য মুক্ত বাংলাদেশ গড়ার, যেখানে আমাদের চলার পথে টোকাই,পথহারা নামে কোন শিশু থাকবে না।  নিজেদের সামান্য দু’মুঠো ভাতের জন্য অপরাদ মুলক কাজে লিপ্ত হতে হবে না, মানুষের কাছে হাত বাড়াতে হবে না, আমরা স্বপ্ন দেখি, তাদেরও স্বপ্ন দেখায়, তাদের ও বাঁচার সুযোগ করে দি,তাদেরও যে বাঁচার অধিকার আছে। স্বপ্নের নাটাই আমাদের বিবেক, সেটা আজ বাধাগ্রস্থ,তারা নিজেদের সমাজ ব্যবস্থা থেকে বাইরে এসে কিছুই করতে পারছে না, ফলে আমাদের যুবক সমাজ পথহারা বিবেকহীন মানুষে পরিণত হচ্ছে, এই নিয়ে সমাজ প্রতিষ্ঠা, সুন্দর সমাজ গড়া সম্ভব না।

 

 

লেখাপড়া২৪/এমটি/২০১

পছন্দের আরো পোস্ট