বাবার ভালোবাসা একদিন নয় প্রতিদিন

বাবা দিবস পালনের আয়োজন আমাদের দেশে অতি সাম্প্রতিক হলেও পাশ্চাত্যের বিভিন্ন দেশে ১০০ বছরের বেশি সময় ধরে আড়ম্বরের সঙ্গে পালিত হয়ে আসছে। ইতিহাস থেকে জানা গেছে, বাবার প্রতি সম্মান জানাতে ওয়াশিংটনে প্রথমবারের মতো ১৯১০ সালের ১৯ জুন বাবা দিবস পালিত হয়। বাংলাদেশসহ বিশ্বের অনেক দেশে দিনটি পালিত হয় প্রতিবছর জুনের তৃতীয় রবিবার।

 

বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশেও মা দিবসের পাশাপাশি এ দিনটিও উৎসবে পরিণত হয়। ১৯১৩ সালে দিবসটি জাতীয়ভাবে পালনের জন্য কংগ্রেসে একটি বিল উত্থাপন করা হয়। ১৯১৬ সালে প্রেসিডেন্ট উড্রো উইলসন এক ভাষণে বাবা দিবস জাতীয়ভাবে পালন করার আহ্বান জানান। কিন্তু দিবসটির বাণিজ্যিকীকরণের ভয়ে কংগ্রেসে তা নাকচ হয়ে যায়। অবশেষে ১৯৭২ সাল থেকে বিশ্বের প্রায় ৮৭ টি দেশে জুন মাসের তৃতীয় রবিবার পালিত হচ্ছে বিশ্ব বাবা দিবস।

 

বিশ্বজুড়ে বাবা দিবস কে ঘিরে সন্তান দের আগ্রহ, উৎসাহ ও উদযাপন এর বৈচিত্রে কোন কমতি নেই। পিছিয়ে নেই সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয় এর শিক্ষার্থীরাও। জানিয়েছেন তাদের সেই অনুভূতির কথা।

 

সমাজ বিজ্ঞান ও সমাজ কর্ম বিভাগের শিক্ষার্থী কবির হোসেন বলেন, আমার মনে হয় বাবাতো বাবাই, মুসলিমদের জন্য বাবার জন্য কোন দিবস লাগেনা, বাবাকে সারা জীবন ভালোবাসা উচিত। বাবার ভালোবাসা একদিন নয় প্রতিদিন।

 

ফার্মেসী ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী তানিয়া আহমেদ জানান, কোন বিষয় নিয়ে খুব দুঃশ্চিন্তায় আছি, কি করব ভেবে পাচ্ছি না, এমন সময় একজন মানুষ পাশে এসে দাড়িয়ে মাথায় তার হাতটি রেখে বলে “নিজের উপর বিশ্বাস রাখ সব ঠিক হয়ে যাবে” সেই মানুষটা হলেন আমার বাবা। আলাদা করে নতুন কোন একটা দিনের হয়তো প্রয়োজন নাই এই কথাটা জানাতে যে, বাবা তোমায় খুব ভালবাসি। আমি জানিতো যে তোমার এই সাম্রাজ্যের রাজকন্যা আমি।

 

কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের ভিপি রাজনীতি ও প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী শামীম হোসেন বলেন, বাবা এমন একটা শব্দ যার মাঝে আমাদের নিজের অস্তিত্ব খুজে পাই। বাবা হাজার কষ্টের মাঝেও আমাদের শত আবদার পূরণ করেন। এবং আমাদের মুখের হাঁসিটা সব সময় দেখতে চান। আমাদের জীবনে বাবার অবদান অকল্পনীয় অপূরণীয়। বাবার স্থান কখনো কেউ পূরণ করতে পারে না।

 

Post MIddle

ফার্মেসী ২৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মিষ্টি রহমান জানান, একটা মেয়ে এক এক জনের কাছে এক এক পরিচয় বহন করে কিন্তু বাবার কাছে তার মেয়ে শুধুই রাজকন্যা হয়ে থাকে। বাসায় সবাই আমায় ভালবাসে কিন্তু কোন কিছু না দেখে জীবন দিয়ে ভালবাসে বাবা। আমি তো শুধু আমার খুশিতে হাঁসি কিন্তু আমার হাঁসি দেখে শত কষ্ট ভুলে যাই আমার বাবা। তোমাকে খুব ভালবাসি আব্বু।

 

ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী ফাতেমা জাহান কনক জানান, বাবা কে নিয়ে বলার কিছু নাই। বাবা আমার বট গাছ বাবার আমি দুনিয়া। অনেক ভালবাসি বাবা তোমায়।

 

আইন বিভাগ ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী কৌশিক আহমেদ জানান, আমার বাবা আমার সবচেয়ে কাছের বন্ধু, আমার পথ প্রদশক। বাবা দিবসে বাবকে একটা ঘড়ি টপহার দিব, বাবাকে গলায় জড়িয়ে ধরে বলব বাবা তোমাকে অনেক ভালবাসি।

 

মাইক্রোবায়োলজী বিভাগের শিক্ষার্থী সালেহীন সিয়াম বলেন, বিশ্বের অনেকে বাবাকে আজ উইশ করবে। যারা সারা বছর বাবার খবর নিতে পারেনা তাদের জন্য বাবা দিবস। আমাদের দেশে এ দিবসের কোন দরকার নেই। কারন আমরা প্রতিদিনই বাবার খবর রাখি। যারা বাবাকে ভালবাসে, শ্রদ্ধা করে তাদের জন্য এ দিবসের কোন প্রয়োজন নাই।

 

আইন বিভাগ ১১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মুন্নি আক্তার বলেন, বাবার প্রতি আমার অনুভূতির শেষ নেই। বাবার মতো এইভাবে কেউ আমার সাথে ঝগড়া করেনা। বাবা অনেক ব্যাস্ত থাকে তবুও বুঝতে দেয়না কখনো। বাবার কাঁধে উঠে আইসক্রিম বিক্রি করতে ভালো লাগে। বাবার সঙ্গে বাইক এ ঘুরতে ভালো লাগে। মাঝে মাঝে বাবাকে খুব বলতে ইচ্ছা করে বাবা তোমাকে সত্যি অনেক ভালবাসি।

 

এভাবেই নিজের মত করে বাবা দিবস নিয়ে তাদের ভাবনা এবং বাবার প্রতি তাদের অকৃত্তিম ভালবাসা প্রকাশ করছিলেন গণ বিশ্ববিদ্যালয় এর শিক্ষার্থীরা। আজ বাবা দিবসে শুধু একটাই প্রত্যাশা। বাবার প্রতি ভালবাসা শুধু বাবা দিবস কেন্দ্রিক না হয়ে প্রতিটি দিন হয়ে উঠুক বাবা দিবস। ভাল থাকুন পৃথিবীর সকল বাবারা সন্তানের ভালবাসায়।#

 

আরএইচ

পছন্দের আরো পোস্ট