মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর নির্মাণে বিইউবিটির অনুদান

গত2২ মঙ্গলবার (২৯শে ডিসেম্বর) বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস এন্ড টেকনোলজি (বি ইউ বি টি) এর পক্ষ থেকে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর নির্মাণ তহবিলে দশ লক্ষ টাকার চেক প্রদান করা হয়। রাজধানীর সেগুন বাগিচায় মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে অনুদান গ্রহণ অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের অন্যতম ট্রাস্টি জনাব মফিদুল হকের হাতে অনুদানের চেক হস্তান্তর করেন বিইউবিটি ট্রাস্টের সম্মানিত চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. শফিক আহমেদ সিদ্দিক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর মোঃ আবু সালেহ।

 

অনুদান গ্রহণ অনুষ্ঠানে বক্তব্যের শুরুতে প্রফেসর মোঃ আবু সালেহ বলেন আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছি, আমাদের শিরায় শিরায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরাজমান। এই চেতনা সঠিক ভাবে নতুন প্রজন্মের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে হবে। স্বাধীনতার ৪০ বছরের বেশি সময় পরেও মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সংখ্যা নিয়ে যে তর্ক হচ্ছে তা জাতির জন্য অত্যন্ত দুঃখজনক বলে তিনি মন্তব্য করেন। একটু দেরীতে হলেও মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের নিজস্ব ভবন তৈরি হচ্ছে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে এই কাজে অংশগ্রহণ করতে পারায় তিনি আনন্দ প্রকাশ করেন। তিনি বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক ডকুমেন্টারী প্রদর্শনের মাধ্যমে তরুণ প্রজন্মকে স্বাধীনতার চেতনায় উদ্বুদ্ধ করার জন্য মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

 

প্রফেসর ড. শফিক আহমেদ সিদ্দিক বলেন বাঙ্গালী জাতির ইতিহাস হাজার বছরের ইতিহাস। আমাদের সবচেয়ে গর্বের বিষয়, আমরা যুদ্ধ করে স্বাধীনতা এনেছি। বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে বিইউবিটি প্রথম অনুদান প্রদান করার মাধ্যমে এই মহান কাজে অংশগ্রহণ করতে পারায় তিনি গর্বিত বলে জানান। তিনি আশা করেন এরই ধারাবাহিকতায় অন্যান্য বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলো উৎসাহী হলে আরও বেশ কিছু অনুদান আসবে এবং এর মাধ্যমে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীগণ মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানতে পারবে।

 

Post MIddle

এ বিষয়ে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ঠতা খুবই জরুরী এবং এ বিষয়ে এগিয়ে আসা তাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য বলে তিনি মনে করেন। তিনি পশ্ন রাখেন – মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে ৪০ বছরের উপরে কিন্তু আজ পর্যন্ত আমরা জাতির কাছে সঠিক ইতিহাস তুলে ধরতে পেরেছি কি? তিনি আরও বলেন কিভাবে কৃষক, শ্রমিক ও বিভিন্ন পেশাজীবীসহ সর্বস্তরের মানুষ মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েছিল তা জাতির জানা দরকার। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর কর্তৃপক্ষ প্রামাণিক দলিলের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরছে বলে তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। এই ধারাবাহিকতা বজায় রেখে এবং রাজনীতির বলয় মুক্ত থেকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ধারন ও লালন করে তা সর্বস্তরে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর কর্তৃপক্ষের প্রতি আহবান জানান।

 

মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের অন্যতম ট্রাস্টি জনাব মফিদুল হক বলেন এই অনুদান কেবল মাত্র টাকা নয়, এটা একটা নতুন দুয়ার উন্মোচন। তিনি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর মধ্যে সর্বপ্রথম অনুদান দেওয়ায় বিইউবিটি কর্তৃপক্ষকে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ দেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে জাতিসংঘ, ভারত সরকার ও বিশ্ব সম্প্রদায়ের কিরকম সংশ্লিষ্টতা ছিল এবং বঙ্গবন্ধুর ডাকে কিভাবে এদেশের প্রতিটি গৃহ একটি করে দুর্গে পরিণত হয়েছিল এই ইতিহাস তুলে ধরার জন্য মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর কাজ করে চলেছে বলে তিনি জানান।

 

তিনি আরও বলেন, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর একটি প্রাইভেট প্রতিষ্ঠান হিসাবে কাজ শুরু করে সর্বস্তরের জনগণের সংশ্লিষ্টতায় বর্তমানে পাবলিক প্রতিষ্ঠান হিসাবে আত্মপ্রকাশ করতে পেরেছে। এই অনুদানের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের সংশ্লিষ্টতা আরও বাড়বে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

 

অনুষ্ঠানে বিপুল সংখ্যক মুক্তিযোদ্ধা, বিইউবিটি ট্রাস্টি বোর্ডের সম্মানিত সদস্য প্রফেসর এ বি এম আবুল কাশেম, বিশ্ববিদ্যালয়ের জয়েন্ট রেজিস্ট্রার জনাব এ.এইচ.এম. আজমল হোসেন, কর্মকর্তা-কর্মচারী, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর ট্রাস্টের সদস্য সচিবসহ অন্যান্য ট্রাস্টি, বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

 

 

পছন্দের আরো পোস্ট