কুয়েটের ত্রয়োদশ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত
বর্ণিল আয়োজন আর বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্যদিয়ে আজ (১ সেপ্টেম্বর) বৃহস্পতিবার খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) ত্রয়োদশ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী, বিশ্ববিদ্যালয় দিবস পালিত হয়েছে। সমগ্র অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় শিক্ষা মন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এম.পি. এবং সভাপতিত্ব করেন খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আলমগীর।
দিনটিকে স্মরণীয় করতে সেজেছিল পুরো বিশ্ববিদ্যালয়, সর্বত্রই ছিল সাজ-সাজ রব। সকাল সোয়া ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে অনুষ্ঠিত হয় প্রীতি সমাবেশ। এরপর সকাল সাড়ে ১০টায় জাতীয় সঙ্গীতের সঙ্গে সঙ্গে উত্তোলন করা হয় জাতীয় পতাকা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা। পতাকা উত্তোলন শেষে প্রধান অতিথি বেলুন ও শান্তির প্রতীক পায়রা উড়িয়ে বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের শুভ উদ্বোধন করেন।
এসময় অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি শিক্ষা মন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এম.পি. বলেন, বর্তমান প্রজন্মের শিক্ষার্থীরা হবে সোনার বাংলার নির্মাতা। বিশ্বমানের শিক্ষা, জ্ঞান ও নতুন নতুন প্রযুক্তি অর্জনের মাধ্যমে দেশকে এগিয়ে নিতে হবে। এ লক্ষ অর্জনে কুয়েটকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। তিঁনি আরো বলেন, কুয়েট বাংলাদেশের অনন্য এবং অন্যতম সেরা উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। দেশের আর্থ সামাজিক উন্নয়নে এ প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা অতুলনীয়। দেশে বিদেশে কুয়েটের শিক্ষার্থীরা মেধার পরিচয় দিচ্ছে, এ বিষয়টি আমাদেরকে গর্বিত করে।
সভাপতির বক্তৃতায় কুয়েট উপাচার্য প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আলমগীর বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী এবং এ প্রতিষ্ঠানের মেধাবী শিক্ষার্থীরা কুয়েটকে আজ মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করেছে।গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যান প্রফেসর আব্দুল মান্নানকে ধন্যবাদ জানিয়ে কুয়েট’র উপাচার্য আরো বলেন, সকলের সহযোগিতায় কুয়েট শিক্ষা, গবেষনা ক্ষেত্রে দ্রুত সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে এবং এ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা দেশের উন্নয়নে কাজ করে চলেছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসময় শুভেচ্ছা বক্তৃতা করেন বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদ্যাপন কমিটির সভাপতি ও যন্ত্রকৌশল অনুষদের ডীন প্রফেসর ড. তারাপদ ভৌমিক।এরপর সকাল পৌনে এগারোটায় অনুষ্ঠিত হয় আনন্দ শোভাযাত্রা। শোভাযাত্রায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীসহ বাহারী সাজে সজ্জিত হয়ে বিভিন্ন হলের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন। শোভাযাত্রাটি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও ফুলবাড়ীগেট এলাকা প্রদক্ষীণ শেষে অডিটরিয়ামের সামনে এসে শেষ হয়।
সকাল সোয়া ১১টা থেকে অডিটরিয়ামে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবিত বিভিন্ন প্রজেক্ট প্রদর্শনী, টেকনিক্যাল পেপার প্রেজেন্টেশন, আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় উপাচার্য প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আলমগীর এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা মন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এম.পি.। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত পুরকৌশল অনুষদের ডীন প্রফেসর ড. মোঃ মাহবুব আলম, যন্ত্রকৌশল অনুষদের ডীন প্রফেসর ড. তারাপদ ভৌমিক, তওইকৌশল অনুষদের ডীন প্রফেসর ড. মোঃ আব্দুর রফিক, শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. শিবেন্দ্র শেখর শিকদার এবং পরিচালক (ছাত্র কল্যাণ) প্রফেসর ড. সোবহান মিয়া।
৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনির্মিত লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং ভবন এবং গেষ্ট হাউজ কাম ক্লাব ভবনের শুভ উদ্বোধন করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি। এসময় গেস্ট হাইজ সংলগ্ন এলাকায় তিঁনি একটি গাছের চারা রোপন করেন। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে দর্শনার্থীদের জন্য বিভিন্ন বিভাগের ল্যাবসমূহ উম্মুক্তকরণ, প্রধান অতিথির সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মতবিনিময়, ছাত্র-শিক্ষক প্রীতি ফুটবল ম্যাচ, দোয়া মাহফিল এবং সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
উল্লেখ্য, ২০০৩ সালের ১ সেপ্টেম্বর তৎকালীন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজী (বিআইটি), খুলনাকে পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত করে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হয়। এরপর থেকে ১ সেপ্টেম্বরকে প্রতি বছর বিশ্ববিদ্যালয় দিবস হিসেবে উদ্যাপন করা হয়।