দেশের প্রথম উপাচার্য দম্পতিকে সংবর্ধনা

নিজস্ব প্রতিবেদক।

দেশের ইতিহাসে এই প্রথম স্বামী-স্ত্রী দুজনই শিক্ষকতা পেশার সর্বোচ্চ সম্মানজনক পদ উপাচার্য হিসেবে দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ে  নিযুক্ত রয়েছেন। যা দেশের ইতিহাসে বিরল।প্রথমবারের মতো একসাথে স্বামী-স্ত্রী উপাচার্য হিসেবে নিযুক্ত থাকায় আজ বৃহস্পতিবার সকালে এই দম্পতিকে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছে উষ্ণ সংবর্ধনা।গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার সনমানিয়ায় ডা. আব্দুল আজিজ উচ্চ বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠানটি সম্পন্ন হয়।

জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়।অনুষ্ঠানে সংবর্ধিত উপাচার্য দম্পতিকে ফুলেল শুভেচ্ছা ও ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।সনমানিয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আলহাজ্ব শাহাদাত হোসেন মাস্টারের সভাপতিত্বে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব ড. মো. সাইফুল ইসলাম, ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মঞ্জুরুল হক মুকুল, উপজেলা আওয়ামীলীগ সদস্য আব্দুল হক, ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক কামাল হোসেন হান্নান, সাবেক ব্যাংকার আব্দুল আওয়াল, ডা. আব্দুল আজিজ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ ইউনিয়নের অন্যান্য উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধানগণএবং স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।

এদিকে উপাচার্য দম্পতি এলাকার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে সফল ও সুন্দর জীবন গড়তে বিভিন্ন বিষয়ে দিক নির্দেশনামূলক বক্তব্য প্রদান করেন।

চুয়াডাঙ্গার বেসরকারী ফার্স্ট ক্যাপিটাল ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ’র উপাচার্য হিসেবে নিয়োজিত আছেন স্বামী অধ্যাপক ড. মো. হযরত আলী এবং স্ত্রী অধ্যাপক ড. হাফিজা খাতুন পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

Post MIddle

এদিকে স্বামী-স্ত্রী দুজনেই উপাচার্য হওয়ায় দেশের প্রথম উপাচার্য দম্পতি হিসেবে তারা পরিচিতি পেয়েছেন। অধ্যাপক ড মো. হযরত আলী বাংলাদেশ কৃষি ইনস্টিটিউটে বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। পরবর্তীতে তিনি রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) কোষাধ্যক্ষ, সিন্ডিকেট সদস্য, ডিন, কৃষি বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেছেন।
অপরদিকে অধ্যাপক ড.হাফিজা খাতুন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অধীনে নগর উন্নয়ন অধিদপ্তরে গবেষণা কর্মকর্তা হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। কুমুদিনি কলেজ ও ইডেন মহিলা কলেজে শিক্ষকতা করার পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন। ৪০ বছরের শিক্ষকতা জীবনে অধ্যাপক ড. হাফিজা খাতুন বিভিন্ন বিষয়ে গবেষণা করেছেন।

অধ্যাপক ড. হাফিজা খাতুন শিক্ষকতা ও গবেষণা ছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের সাথে জড়িত। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর ট্রাস্ট ফান্ডে তিনি ২০ লক্ষ টাকা দান করেছেন। এছাড়াও বাংলাদেশ নদী বাচাঁও আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হিসেবে বাংলাদেশ নদী রক্ষা আন্দোলনের অগ্রপথিক তিনি। আঞ্জুমানে মফিদুল ইসলামের কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করে অসহায় ও দরিদ্র মানুষের সেবা করে যাচ্ছেন। দেশ ও সমাজের উন্নয়ন সাধনকল্পে বিভিন্ন গবেষণা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৭টি ট্রাস্ট ফান্ড প্রতিষ্ঠা করেছেন।

পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হাফিজা খাতুন শিক্ষক ও ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্দেশে বলেন, ভালো কাজ করলে এই কাজের প্রতিদান স্বরুপ একদিন পুরস্কৃত হবেই। আর ভালো কাজ করার পূর্বে নিজের প্রতি অবশ্যই সম্মানবোধ থাকতে হবে। তিনি আরো বলেন, শিক্ষার্থীরাই আগামীর দেশ ও সমাজ বিনির্মাণ করবে। অভিভাবকদের উদ্দেশে বলেন, সন্তানদের কখনো বৈষম্যের চোখে দেখা যাবেনা। ছেলে ও মেয়েকে মানুষ হিসেবে দেখতে হবে।

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ৪ টি স্কুলের শিক্ষার্থী, এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গসহ প্রায় ২০০০ সাধারণ জনগণ উপস্থিত ছিল। অনুষ্ঠানটি সকাল ১০.৩০ মিনিটে শুরু হয়ে দুপুর ২ টায় শেষ হয়।

পছন্দের আরো পোস্ট