শুদ্ধাচার কৌশল বাস্তবায়ন ও সেবা প্রদান প্রতিশ্রুতি বিষয়ে কর্মশালা

নিজস্ব প্রতিবেদক।

শোষণমুক্ত, আদর্শ ও কল্যাণকর রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় প্রতিটি ক্ষেত্রে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা আবশ্যক বলে মনে করেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান।

আজ রবিবার (৩১ অক্টোবর) জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল (এনআইএস) বাস্তবায়ন ও সেবা প্রদান প্রতিশ্রুতি বিষয়ক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি নিশ্চিত করতে হলে সর্বোচ্চ পন্থা হচ্ছে শিক্ষার উৎকর্ষতা নিশ্চিত করা। পুঁজি বাজার বিস্তারের মধ্যদিয়ে নয়, জ্ঞান-বিজ্ঞান বিস্তারের মধ্যদিয়েই একটি দেশের প্রকৃত উন্নয়ন সম্ভব।

আমরা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার মধ্যদিয়ে যে বাংলাদেশ সৃষ্টি করতে চাই, সেটি হবে ভিন্ন মাত্রিক। গৎবাঁধা পুঁজি বাজারের সংস্কৃতির যে উন্নয়ন, সেটি আমাদের কাক্সিক্ষত উন্নয়নের লক্ষ্য নয়; আমাদের লক্ষ্য শোষণমুক্ত, আদর্শ ও কল্যাণকর রাষ্ট্রপ্রতিষ্ঠা। সেই রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা নিশ্চিত করতে হলে জবাবদিহিতার বিকল্প নেই।’

কর্মক্ষেত্রে প্রতিটি মানুষকে সৎ এবং দক্ষ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে উপাচার্য বলেন, ‘কর্মক্ষেত্রে প্রতিটি ব্যক্তি যদি সততা এবং দক্ষতায় অনন্য নজির স্থাপন করতে পারে তাহলে আগামী এক দশকে এই বিশ্ববিদ্যালয় ঈর্র্ষণীয় পর্যায়ে পৌঁছাবে। আমি বিশ্বাস করি বাংলাদেশের উন্নয়ন ও পরিবর্তনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখবে এই বিশ্ববিদ্যালয়। এ কারণে আমি বিভাগীয় প্রধানদের আহ্বান জানাবো- প্রত্যেকটা দপ্তরে কাজের সর্বোচ্চ পরিবেশ নিশ্চিত করা। কেউ যেন কর্মঘণ্টায় ফাঁকি দিতে না পারে। এজন্য আপনাদের কঠোর দৃষ্টিভঙ্গি নিশ্চিত করতে হবে।’

Post MIddle

উপাচার্য আরও বলেন, ‘জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল বাস্তবায়নে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ইতোমধ্যে সাফল্য দেখাতে শুরু করেছে। কিন্তু যখনই কোন প্রতিষ্ঠান তার সাফল্যের যাত্রাটা করতে পারে, সেই সঙ্গে প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে অন্যদের আশা-আকাক্সক্ষা এবং নিজেদের অঙ্গীকার অনেকটা বেড়ে যায়। আমরা গভীরভাবে বিশ্বাস করি, বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষার ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর দায়িত্ব আমাদের। আমাদের কাছে মানুষের প্রত্যাশাটা অভাবনীয়। সেই জায়গা থেকে রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে মূলত গরিব মানুষের পয়সায় আমরা নিশ্চিত জীবন-যাপনের সুযোগ পাই। আমাদের পবিত্র দায়িত্ব হচ্ছে- বাকি যারা অনিশ্চিত জীবন-যাপন করছেন তাদের জীবন নিশ্চিত করা।

আমরা যারা ফরমাল অকুপেশনে আছি, সবাই প্রিভিলেজড। আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে আন্ডার প্রিভিলেজড মানুষদেরকে টেনে তোলা। এটি করতে পারলে সমতার বাংলাদেশ নির্মিত হবে। প্রকৃত অর্থে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে। আমাদের সেবা দানের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের মধ্যদিয়েই মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর চেতনার বাংলাদেশ পাবো-এটিই আমাদের প্রত্যাশা।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর আবদুস সালাম হাওলাদারের সভাপতিত্বে কর্মশালায় রিসোর্স পার্সন হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) জেনারেল সার্ভিসেস, এস্টেট এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের পরিচালক ড. সুলতান মাহমুদ ভুইয়া, স্নাতকোত্তর শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্রের ডিন প্রফেসর ড. মো. আনোয়ার হোসেন, রেজিস্ট্রার মোল্লা মাহফুজ আল-হোসেন।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন মানবসম্পদ উন্নয়ন ও শুদ্ধাচার দপ্তরের পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) জয়ন্ত ভট্টাচার্য্য। দিনব্যাপী চলা কর্মশালায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন দপ্তরের বিভাগীয় প্রধানগণ অংশগ্রহণ করেন।

পছন্দের আরো পোস্ট