বীর মুক্তিযোদ্ধা ট্রাস্টিদের সম্মাননা জানালো আইইউবি
নিজস্ব প্রতিবেদক।
ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি,বাংলাদেশ (আইইউবি)র বেশ কয়েকজন নিবেদিত প্রাণ ট্রাস্টি রয়েছেন,যারা এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার আগেই দেশের ‘স্বাধীনতার’ জন্য আত্মত্যাগ করেছিলেন। ১৯৭১ সালে তারা মহান মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন এবং শত্রুর কাছ থেকে মাতৃভূমির জন্য লাল-সবুজের পতাকা ছিনিয়ে আনেন।
বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনের অংশ হিসেবে এবং মুক্তিযুদ্ধে ৪৯তম বিজয়দিবসের প্রাক্কালে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের সেইসব ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা ট্রাস্টি’দের সম্মাননা জানালো ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি,বাংলাদেশ (আইইউবি)। রাজধানীর বসুন্ধরার ক্যাম্পাসে ১০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী,আ ক ম মোজাম্মেল হক এম.পি.।
আইইউবি’র‘বীর মুক্তিযোদ্ধা ট্রাস্টি’ হিসেবে সম্মাননা প্রাপ্তরা হলেন
আইইউবি’র বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান, এ মতিন চৌধুরী,দিদার এ হুসেইন,এ কে আশরাফ উদ্দিন আহমেদ,অঞ্জন চৌধুরী,প্রয়াত ড. এম তাজুল হোসেইন এবং প্রয়াত এম এ মোহাইমান।
ঢাকা মেডিকেল কলেজের একজন মেধাবী শিক্ষার্থী থাকাকালীন ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন এ মতিন চৌধুরী। পরে তিনি সেনাবাহিনীতে কমিশন লাভ করেন। তিনি সেক্টর ৬(এ) অধীন রংপুর, দিনাজপুর অঞ্চলে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে এক সম্মুখ সমরে আহত হন মতিন চৌধুরী।
দিদার এ হুসেইন ১০ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের হয়ে যুদ্ধ করেন এবং এ কে আশরাফ উদ্দিন আহমেদ ১১ নাম্বার সেক্টরে বিভিন্ন যুদ্ধে অংশ নেন। পাবনা অঞ্চলে যুদ্ধ করেন অঞ্জন চৌধুরী। মুক্তিযুদ্ধের এই বীর সেনানিরা পাকিস্তানী বাহিনীর বিরুদ্ধে অসংখ্য মুখোমুখি লড়াইয়ে অবতীর্ণ হন এবং যুদ্ধে অসীম সাহসিকতার পরিচয় দেন।
প্রয়াত ট্রাস্টি ড. এম তাজুল হোসেইন মুক্তিযুদ্ধের একজন অন্যতম সংগঠক ছিলেন এবং পরবর্তীতে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম স্বাস্থ্য সচিব হন। আরেক প্রয়াত ট্রাস্টি এম এ মোহাইমান ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের একজন অসামান্য সংগঠক। মুক্তিযুদ্ধের সময় ও তার আগে অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রকাশনা রয়েছে তাঁর।
অনন্য এই মুহূর্ত উদযাপনের অংশ হিসেবে আইইউবি সারা দেশে রচনা প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেয়া হয়।
অনুষ্ঠানে মন্ত্রীবলেন, স্বাধীনতা তখনই স্বার্থক হয় যখন এর লক্ষ্য, বিশেষত অর্থনৈতিক ও সামাজিক মুক্তি সঠিক শিক্ষার মাধ্যমে অর্জন করা হয়। বঙ্গবন্ধুর এই লক্ষ্য অর্জনে, বর্তমান সরকার মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে কাজ করে চলেছে।
মতিন চৌধুরী তার বক্তৃতায় মুক্তিযুদ্ধকালীন চিরস্মরণীয় স্মৃতিগুলো উল্লেখ করেন। পাশাপাশি, ৫০ বছর আগে মাতৃভূমির স্বাধীনতার জন্য, একটি নতুন পতাকার জন্য যে দৃঢ়তা ও স্বপ্ন নিয়ে সকলে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল সেই একই মনোভাব নিয়ে বর্তমানে জাতিগঠনে আত্মনিয়োগ করতে সকলের প্রতি আহবান জানান।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও বক্তৃতা করেন আইইউবি’র ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য, অধ্যাপক মিলান পাগন এবং ধন্যবাদ জানিয়ে বক্তৃতা করেন আইইউবি’র ভারপ্রাপ্ত ডিন, অধ্যাপক ইমতিয়াজ এ হুসেইন।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন আমন্ত্রিত সম্মানিত অতিথি, আইইউবি’র বিভিন্ন স্কুলের ডিন, সিনিয়র শিক্ষক ও প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা।