দিশেহারা হয়ে ঢাকা ফিরছেন জবি শিক্ষার্থীরা

জবি প্রতিনিধি।

করোনা মহামারী বিস্তারের শুরু থেকেই বন্ধ রয়েছে সব ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ রেখেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ও। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষার্থীই নিজ নিজ বাড়িতে অবস্থান করে আসছেন। সম্প্রতি অনলাইন ক্লাস শুরু হওয়ায় গ্রামে ইন্টারনেট সমস্যার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থীই ফিরতে শুরু করেছেন পিছু টানে। অনেক শিক্ষার্থীর দাবি টিউশনি ও পার্ট টাইম জব করেই পড়াশোনা চালাতে হতো, কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে বাসায় চলে গিয়ে এখন আর্থিক সংকটে পড়েছেন অনেকে।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী আরিফুল ইসলাম বলেন, মহামারীর শুরুতেই গ্রামের বাড়ি যশোর চলে এসেছি। টিউশনি ও পার্ট টাইম জব করে পড়াশোনা চালাতে হতো। কিন্তু বাসায় এসে এখন সংকটে পরেছি। তবে টিউশন ছুটে যাবার ভয়ে আমাকে আবার ঢাকায় ফিরতে হচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশির ভাগ শিক্ষার্থী টিউশনি বা পার্ট টাইম চাকরি করে নিজের খরচ চালায়। অনেকে আবার পরিবারকেও আর্থিকভাবে সহায়তা করেন। ফলে এই করোনাকালে তাঁরা বিপদে পড়েছেন। অনেক শিক্ষার্থীর দাবি, টিউশনি করেই পড়াশোনা সহ সব খরচ চালাতাম। এখনতো টিউশনি নাই, ফলে ইন্টারনেট কিনে অনলাইন ক্লাস করতে অনেক দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের চতুর্থ বর্ষের এক শিক্ষার্থী আক্ষেপ করে বলেন, ‘করোনার কারণে আমার সব টিউশনি চলে গেছে। নতুন টিউশনির খোঁজে এবং বন্ধুদের ডিভাইসের সাহায্য নিয়ে অনলাইন ক্লাস করার জন্য ঢাকায় এসেছি। এখন পর্যন্ত কোনো আশা খুঁজে না পেয়ে আপাতত একটা টিউশনি করে চলছি”।

Post MIddle

পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী সোহানুর রহমান সোহান বলেন, ‘প্রতিদিন পাঁচ কিলোমিটার দূরে গিয়ে অনলাইন ক্লাসে অংশ নিতে হয়। এই অবস্থায় দ্রুত ক্যাম্পাসে ফেরা ছাড়া কোনো উপায় নেই।’ এছাড়া লকডাউন পরিস্থিতি কিছুটা শিথিল হওয়ায় অনেক শিক্ষার্থী ঘরবন্দি জীবনের একঘেয়েমি কাটাতে ঢাকায় ফিরে এসেছেন।

আরো কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, এলাকায় দ্রুতগতির ইন্টারনেট সংযোগ নেই। অথচ অনলাইনে প্রায় প্রতিদিনই ক্লাস হচ্ছে, অ্যাসাইনমেন্ট নেওয়া হচ্ছে। নিয়মিত অনলাইন ক্লাসে অংশ নেওয়ার জন্য ঢাকায় ফিরে এসেছেন।

উল্লেখ্য যে, এর আগে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুসারে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধের সতর্কতা হিসেবে ১৭ মার্চ থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল বিভাগের ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ রাখার নোটিশ দেয়া হয় এবং পরবর্তীতে তা সরকারী নির্দেশনায়ই ৯ এপ্রিল পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়।

পরবর্তীতে ৯ এপ্রিল করোনা ভাইরাস সঙ্কায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ক্লাস ও পরীক্ষা পরবর্তী নি‌র্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ রাখার নোটিশ দেয়া হয়। এছাড়া জবি ক্যাম্পাসে জরুরি বা বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া প্রবেশাধিকারেও নিষেধাজ্ঞা আরোপ রয়েছে।

পছন্দের আরো পোস্ট