গার্লস ইন আইসিটি ডে

“দিগন্ত প্রসারিত হোক দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তনে”এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ ইউনিয়ন (আইটিই্উ) ঘোষিত ‘ইন্টারন্যাশনাল গার্লস ইন আইসিটি’ দিবস গতকাল ২৬ এপ্রিল (বৃহস্পতিবার) বাংলাদেশে উদযাপন করা হয়েছে। বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্কের (বিডিওএসএন) উদ্যোগে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে ‘ইন্টারন্যাশনাল গার্লস ইন আইসিটি ডে’ উপলক্ষে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

অনুষ্ঠানে প্রষ্ঠপোষকতা করে বাংলাদেশ উইমেন ইন আইটি(বিডব্লিউআইটি)। এ উপলক্ষেবিশ্ববিদ্যালয়ের ৭১ মিলনায়তনে ‘আইসিটি আলোচনা, কুইজ প্রতিযোগিতা, প্যানেল আলোচনা’ ও কেক কাটার আয়োজন করা হয়। ড্যাফোডিল পরিবারের প্রধান নির্বাহী মোহাম্মদ নূরুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিডিওএসএন-এর সাধারণ সম্পাদক মুনির হাসান, উইমেন ইন ডিজিটালের প্রতিষ্ঠাতা আছিয়া নীলা, সেন্ট্রাল উইমেনস ইউনিভার্সিটির কম্পিউটার প্রকৌশল বিভাগের প্রধান ও সহযোগী অধ্যাপক শাহানাজ পারভীন, কম্পিউটার বিচিত্রার প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান বি এম ইনাম লেনিন, বিডিওএসএন-এর শারমিন কবির ও বাক্ক্যুর সহকারী সমন্বয় কর্মকর্তা আদিনাসহ আরো অন্যান্য তথ্যপ্রযুক্তি ব্যক্তিত্ব ‘গার্লস ইন আইসিটি ডে’ বিষয়ে বক্তব্য প্রদান করেন।

আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ ইউনিয়ন (আইটিই্উ) এপ্রিল মাসের চতুর্থ বৃহস্পতিবার বিশ্বজুড়ে গার্লস ইন আইসিটি দিবস উদযাপন করে।

সভাপতির বক্তব্যে ড্যাফোডিল পরিবারের প্রধান নির্বাহী মোহাম্মদ নূরুজ্জামান বলেন, তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি ( আইসিটি) ব্যবহারে ছেলেদের মতো মেয়েরাও সমান পারদর্শী হতে পারে । চাকরির অন্যান্য সেক্টরে যে হারে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়ছে, সেই হারে আইসিটি সেক্টরে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়ছে না। কিন্তু আইসিটি সেক্টরেই নারীদের অংশগ্রহণ অপেক্ষাকৃত বেশি হওয়ার কথা। কারণ মেয়েরা স্থির বুদ্ধিসম্পন্ন হয়। তাদের পক্ষে প্রোগ্রামিংয়ের কাজ সফলভাবে করা সম্ভব।

বিডিওএসএন-এর সাধারণ সম্পাদক মুনির হাসান তাঁর বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশের মেয়েরা পড়ালেখায় অসম্ভব ভালো ফল করছে। জিপিএ ৫ থেকে শুরু করে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে স্বর্ণপদক পাওয়া মেয়েদের সংখ্যা প্রতিবছরই বাড়ছে। কিন্তু আইসিটি সেক্টরে অংশগ্রহণ খুব একটা বাড়ছে না। এর পেছনে তিনটি কারণ রয়েছে বলে মনে করেন মুনির হাসান।

Post MIddle

তিনি বলেন, আমাদের মেয়েদের সামনে আইসিটি খাতের উজ্জ্বল আইডল নেই, তাদেরকে অনুপ্রেরণা দেওয়ার মতো কেউ নেই এবং তাদের মধ্যে প্রচুর তথ্য ঘাটতি রয়েছে। এই তিন করণে মেয়েরা আইসিটি সেক্টরে আসছে না। এ অবস্থার পরিবর্তন জরুরি বলে মন্তব্য করেন মুনির হাসান।

অপরদিকে উইমেন ইন ডিজিটালের প্রতিষ্ঠাতা আছিয়া নীলা বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ শুধু ছেলেদেরকে দিয়ে গড়া সম্ভব নয়। কারণ এদেশের অর্ধেক জনসংখ্যা নারী। তাদেরকেও ডিজিটাল হতে হবে। এজন্য মেয়েদেরকে বেশি বেশি আইসিটি সেক্টরে আসতে হবে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন আছিয়া নীলা। তিনি আরো বলেন, আমাদের মেয়েরা সব পারে। তাদের দক্ষতা ও যোগ্যতা সবই আছে। শুধু দরকার সঠিক গাইড লাইন আর একটু অনুপ্রেরণা।

মোহাম্মদ নূরুজ্জামান আরো বলেন, আইসিটিতে মেয়ৈদেরকে উদ্বুদ্ধ করতে গার্লস ইন আইসিটি ডে উদযাপনসহ এ ধরনের অনুষ্ঠান আরো বেশি বেশি অনুষ্ঠিত হওয়া উচিত।

অনুষ্ঠানে অন্যান্য বক্তারা বলেন, আইসিটি খাতে মেয়ে ও নারী অংশগ্রহণ যদি ৩৩ দশমিক ৭ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৮২ শতাংশে উন্নীত করা যায় তাহলে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি আরো ১ দশমিক ৬ শতাংশ বাড়ানো সম্ভব। এতে সরকারের ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হওয়ার যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে তা আরো সহজতর হবে।

এজন্য মেয়েদের মধ্যে আইসিটি বিষয়ে আগ্রহ তৈরি করতে হবে বলে মন্তব্য করেন বক্তরা। তারা আরো বলেন, গার্লস ইন আইসিটি ডে উদযাপন কিংবা এ ধরনের আয়োজন মেয়েদেরকে আইসিটি খাতে অংশগ্রহণে উদ্বুদ্ধ করবে।

পছন্দের আরো পোস্ট