বাল্য বিবাহের পরিনতি মাদকাসক্ত স্বামীর নির্যাতনে স্কুল ছাত্রীর মৃত্যু

বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার বারইখালী ইউনিয়নের তেতুবাড়িয়া গ্রামে স্বামীর শারীরিক নির্যাতনে স্ত্রী স্কুল ছাত্রী সুমি আকতার (১৬) মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। বিষয়টি আত্মহত্যা বলে চালানোর চেষ্টা চালানো হচ্ছে। এ ঘটনার পর পরই স্বামী পালিয়ে গেছে । রোববার সকালে লাশ ময়না তদন্তের জন্য বাগেরহাট মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।

উপজেলার তেতুলবাড়িয়া গ্রামের ছালাম শেখের কন্যা সুমি আকতার। পিতা দিনমজুর। সুমি দক্ষিণ সুতালড়ী এইচএমজেকেএম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১০ শ্রেণীর ছাত্রী। এবছরের এসএসসি পরীক্ষার্থীনি । একই বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র একই ইউনিয়নের গাজীকালু গ্রামের তোরাব আলী হাওলাদারের পুত্র উজ্জ্বল (২০)। এ বিদ্যালয় অধ্যয়নকালীন উজ্জ¦ল পিছু নেয় সুমির। নানাভাবে উক্তত্য সহ প্রেম ভালোবাসা নিবেদন করে। এভাবে চলে দিনের পর দিন। গত জুন মাসের কোন এক রাতে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে বাড়ির বাইরে বের চলে তাকে জোর পূর্বক তুলে নেয় উজ্জ¦ল। পরে স্থানীয় লোকজন মধ্যস্থতায় বিয়ে দেয়া হয়। বিয়ের কিছুদিন যেতে না যেতেই শুরু হয় পারিবারিক দ্বন্ধ। শুরু হয় মাদকাসক্ত স্বামী ,শাশুড়ী ও ননদের শারীরিক নির্যাতন।

শনিবার (১১ নভেম্বর) সকালে শ^শুর বাড়ি থেকে বাবার বাড়িতে চলে আসে সুমি। সামনে এসএসসি ফর্মফিলাপ ও পড়াশুনা। দ্বিতীয়তঃ বেকার মাদকাসক্ত স্বামী ও শশুরবাড়ি শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের কারনে আর ফিরে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত। ঘটনার দিন ১০দিকে স্বামী উজ্জ্বল তাকে নিতে আসে। এসময় সুমির পিতা মাতা বাড়ির নিকটবর্তী খালে মাছ ধরার ডাল পুঁততে ( স্থানীয়ভাবে যাকে ঝাঁইল বলে)যায় ।

Post MIddle

পিতা মাতার অনুপস্থিতে উজ্জ্বল জোর করে সুমিকে তাদের বাড়ি নেয়ার চেষ্টা করে। এনিয়ে বাকবিতন্ডা হয়। দুপুরের দিকে মা নাসিমা বেগম বাড়িতে এসে ঘরের মধ্যে দরজার আড়ার সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পায়। তিনি বলেন, যেখানে সুমিকে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া গেছে সেখানে গলায় দড়ি দেয়া সম্ভব নয়। পা ছিল মাটিতে। তার পরনের কামিজ ছিল ছেঁড়া ও গলায় আহতের চিহ্ন। ধারনা করা হচ্ছে সুমিকে হত্যা করে আত্মহত্যা বলে চালানোর জন্য ঝুঁলিয়ে রাখে উজ্জ্বল পালিয়ে যায়। রাত সাড়ে ৯টায় দিকে থানায় নিয়ে আসা হয় এবং প্রাথমিকভাবে ইউডি মামলা রেকর্ড করা হয়।

দক্ষিণ সুতালড়ী এইচএমজেকেএম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জানান, সুমি তার বিদ্যালয়ের নিয়মিত ছাত্রী এবং এসএসসি পরীক্ষার্থী। উজ্জ্বল তার বিদ্যালয়ের ছাত্র হলেও তার বিরুদ্ধে নানা অপকর্মের অভিযোগ থাকায় তাকে একবার টিসি দেয়া হয়েছিল।

থানা অফিসার ইন চার্জ মো. রাশেদুল আলম জানান, লাশ ময়না তদন্তের জন্য প্রেরণ করা হয়েছে। তদন্ত রিপোর্টে প্রকৃত সত্য উম্মোচিত হবে।##

পছন্দের আরো পোস্ট