বিদেশে ইন্টার্নশিপের সুযোগ বঞ্চিত হাবিপ্রবি ডিভিএম গ্রাজুয়েটরা

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর প্রাণীসম্পদের সংরক্ষণ, উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত একটি সরকারি বিভাগ। এর মূল লক্ষ্য গবাদি প্রাণি ও হাঁস-মুরগি পালন, এগুলির উৎপন্ন সামগ্রী রক্ষণাবেক্ষণ ও বিক্রয়ের মাধ্যমে আমিষের চাহিদাপূরণ এবং লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি। ১৮৯৩ সালে এ বিভাগের কার্যক্রম শুরু হয় বেসামরিক প্রাণিচিকিৎসা বিভাগের মাধ্যমে, যার প্রধান ছিলেন তৎকালীন সরকারের প্রাণিচিকিৎসা উপদেষ্টা। একই বছর বেঙ্গল প্রাণিচিকিৎসা ইনস্টিটিউট এবং প্রাণিচিকিৎসা হাসপাতালও প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন একজন ব্রিটিশ পশুচিকিৎসক জে.এইচ.বি হোলেন, যিনি ভারত ও বাংলায় বেসামরিক পশুচিকিৎসা কার্যক্রম চালু করেছিলেন।

ভারত বিভক্তির পর ১৯৪৮ সালে এ বিভাগকে পূর্ব পাকিস্তানের পশুপালন দপ্তর হিসেবে পুনর্বিন্যাস করা হয়। ১৯৬০ সালে আবারও একে পুনর্গঠন করে নামকরণ করা হয় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর। তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তান সরকার এবং পরবর্তীকালে বাংলাদেশ সরকার এটির বর্তমান কাঠামো গড়ে তোলে।

অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সহায়ক কর্মকর্তাদের (মোট সংখ্যা প্রায় ৮,৪২৬) সহযোগিতায় অধিদপ্তরের কার্যক্রম পরিচালনা করেন। প্রাণিসম্পদ ও হাঁস-মুরগি পালনের ক্ষেত্রে উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার জন্য অধিদপ্তর বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট, বাংলদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও অন্যান্য গবেষণা সংস্থার সঙ্গে বিভিন্ন প্রযুক্তির উন্নয়ন ও সম্প্রসারণের যৌথ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

Post MIddle

১৯৭৩ সালের ১৩ই ফেব্রুয়ারি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান কৃষিবীদদের ক্লাস ওয়ান মর্যাদা দেয়। এরপর ১৯৯২-তে বিএসসি ইন এএইচ (অনার্স) ও ডিভিএম(ডক্টর অফ ভেটেরিনারি মেডিসিন) ডিগ্রি দুটিকে একীভূত করার নীতি গ্রহণ করা হয়। এছাড়া জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক ও বিশ্ব ব্যাংক বিভিন্ন সময়ে তাদের রিপোর্টে বাংলাদেশে একই ডিসিপ্লিনে ৩২টি ডিগ্রির পরিবর্তে সমন্বিত ভেটেরিনারি শিক্ষার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে।

১৯৯৫ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত কমনওয়েলথ ভেটেরিনারি অ্যাসোসিয়েশনের সম্মেলনে বাংলাদেশে পশুপালন ডিগ্রির পরিবর্তে ভেটেরিনারি ডিগ্রি প্রদানের জন্য সরকারের কাছে সুপারিশ করা হয়। অতঃপর মত্স্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ভেটেরিনারি ও অ্যানিমেল হাজবেন্ড্রি কোর্স দুটিকে সমন্বয় করে ৫ বছর মেয়াদি ডিভিএম কোর্স চালুর লক্ষ্যে সিলেট ও চট্টগ্রামে ১৯৯৬ সালে দুটি ভেটেরিনারি কলেজ চালু করা হয়। এরপরেও অন্যান্য জেলাতেও ৮টি বিশ্ববিদ্যালয় ও ১টি ভেটেরিনারি কলেজ প্রতিস্থাপন করে সেখান থেকে প্রায় ৮০০-৮৫০ জন গ্রাজুয়েট সম্পন্য হয়।

যারা গবাদী-পশুর বিভিন্য রোগ নিরাময়, চিকিৎসা, টিকাদান, প্রজনন, নতুন প্রজনন, রোগ প্রতিরোধ, ফার্ম ম্যানেজমেন্ট, বেকারত্ব দূরীকরণ, লাইফস্টক এক্সটেন্সান এবং মোটাতাজাকরণে অনেক ভুমিকা পালন করে থাকে।  তারপর তাদের গ্রাজুয়েশন শেষ করার পর তারা ১বছর বা ৬ মাস ইন্টার্নশিপ করে। এটার জন্য তাদের বিভিন্য জায়গায় যেতে হয়। এটার জন্য তারা মাসিক ভাতা হিসেবে পায় ৮৫০০ টাকা। অন্যথায় মেডিকেল এ পড়ে তারা ১ বছর ইন্টার্নশিপ করে ১৪০০০-১৬০০০ টাকা পায়। তাদের টাকার তুলনায় আমাদের টাকা কার্যকরী নয়। কারণ আমরা বিভিন্য জায়গায় গিয়ে থাকি।

যুগের সাথে তাল মিলিয়ে যেভাবে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, চিটাগাং ভেটেরিনারি বিশ্ববিদ্যালয়, পটুয়াখালি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ১৫-৩০ দিন দেশের বাইরে ইন্টার্নশিপের সুযোগ পেয়ে থাকে। যার কারণে তারা উন্নতমানের চিকিৎসা ব্যবস্থা সম্পর্কে জানতে পারে। সে তুলনায় আমাদের ‘’হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়’’ এর ডি ভি এম গ্রাজুয়েটরা সেই সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

পছন্দের আরো পোস্ট