দেশজুড়ে চালু হচ্ছে স্কুল ফিডিং কর্মসূচি

প্রাক-প্রাথমিক ও প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে শতভাগ ভর্তি ও উপস্থিতি নিশ্চিত করতে দেশজুড়ে চালু হচ্ছে স্কুল ফিডিং কর্মসূচি। ২০১১ সালে দেশের কয়েকটি জেলার ৯৩ স্কুলে এই কর্মসূচি শুরু হয়। স্বল্প পরিসরে কর্মসূচিটি শুরু হলেও বর্তমানে সরকার এ কর্মসূচির কলেবর বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে। এর জন্য প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় একটি নীতিমালার খসড়া চূড়ান্ত করেছে। নতুন নীতিমালা অনুযায়ী প্রতিটি প্রাক-প্রাথমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা দুপুরের খাবার পাবে। বর্তমানে জনপ্রতি বিশেষভাবে তৈরি করা পুষ্টিকর ৭৫ গ্রাম বিস্কুট সরবরাহ করা হয়। কিছু বিদ্যালয়ে পরীক্ষামূলকভাবে রান্না করা খাবার শিক্ষার্থীদের সরবরাহ করা হয়। শিগগিরই দেশের অন্য স্কুলগুলোতেও রান্না করা খাবার সরবরাহ করা হবে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

নতুন নীতিমালায় শিক্ষার্থীদের কী ধরনের খাবার সরবরাহ করা হবে, তা উল্লেখ করা হয়েছে। খাবারের তালিকায় রয়েছে ভাত, খিচুড়ি, ডিম, ডাল, সবজি ইত্যাদি। এই খাবার গ্রামাঞ্চলে স্থানীয় কমিউনিটি এবং শহর

এলাকায় উপযুক্ত প্রতিষ্ঠান সরবরাহ করবে। স্কুল চলাকালে সব শিক্ষার্থীকে পুষ্টিকর বিস্কুটও সরবরাহ করা হবে। কখনও কখনও শিক্ষার্থীদের সরবরাহ করা হবে প্রক্রিয়াজাত খাবার। যেমন- পাউরুটি, শুকনো ফল, দুধ ইত্যাদি। খাবারগুলো স্থানীয়ভাবে সরবরাহ করা হবে। মৌসুমি ফল, বিশেষ করে কলা, পেয়ারা, আম, আমড়া স্থানীয়ভাবে সংগ্রহ করে শিক্ষার্থীদের মধ্যে সরবরাহ করা হবে। খাদ্য তালিকা প্রস্তুতে ভৌগোলিক পরিবেশকে আমলে নেওয়া হয়েছে। চরাঞ্চল, হাওর-বাঁওড় ও পাহাড়ি এলাকার কথা বিবেচনায় রাখা হয়েছে।

Post MIddle

নীতিমালায় বলা হয়েছে, কর্মসূচি বাস্তবায়নে অর্থের উৎস হিসেবে শুরুতে সরকারি বরাদ্দই থাকছে। পাশাপাশি বিভিন্ন পরিসেবার সারচার্জ, লেভি আরোপ, দাতা সংস্থা থেকে পাওয়া অর্থে প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা হবে। এ ছাড়া স্থানীয় সরকার তহবিল, করপোরেট সোশ্যাল রেসপনসিবিলিটি, বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা, কমিউনিটি ভিত্তিক সংগঠন এবং অভিভাবকদের অংশগ্রহণ থেকেও অর্থ সংগ্রহ করা হবে।

খসড়া নীতিমালায় বলা হয়েছে, দেশের মানবসম্পদ উন্নয়নের মূল ভিত্তি হচ্ছে শিশু জনগোষ্ঠী; যারা প্রাক প্রাথমিক ও প্রাথমিক স্তরে লেখাপড়া করছে। তাদের খাদ্য সহায়তা দেওয়া হলে পুষ্টিহীনতা দূর হবে। এ কর্মসূচি বাস্তবায়নে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের অধীনে একটি সেল গঠন করা হবে। কর্মসূচি বাস্তবায়ন ও পর্যবেক্ষণে থাকবে একটি উপদেষ্টা কমিটি। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় নির্দিষ্ট মেয়াদে উপদেষ্টা কমিটির সভাপতি নিয়োগ দেবে। এ কমিটি কর্মসূচি বাস্তবায়নে সব ধরনের পরামর্শ দেবে।

নীতিমালায় আরও বলা হয়েছে, উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ের প্রাথমিক শিক্ষা স্তরের কর্মকর্তারা কর্মসূচি বাস্তবায়নে সম্পৃক্ত থাকবেন। উন্নয়ন সহযোগী, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, বিভিন্ন ব্যবসায়ী, পেশাজীবী সংগঠনসহ অন্যান্য অংশীজন কর্মসূচি বাস্তবায়নে সম্পৃক্ত হতে পারবেন।

পছন্দের আরো পোস্ট