আইইউবিতে আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত

“বাংলাদেশে চীন, ভারত এবং যুক্তরাষ্ট্র:প্রতিযোগিতামূলক সহযোগিতার বিকাশ সাধন” শীর্ষক দিনব্যাপী এক আন্তর্জাতিক সম্মেলন আজ (২৩শে ফেব্রুয়ারি ২০১৭) বৃহস্পতিবার ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ (আইইউবি)’র নিজস্ব ক্যাম্পাস বসুন্ধরা, ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়। আইইউবি’র গ্লোবাল স্টাডিজ অ্যান্ড গভর্নেন্স প্রোগ্রাম আয়োজিত এই সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মিস মার্সিয়া বার্নিকাট।

মিস বার্নিকাট বলেন, ভারত, চীন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সমৃদ্ধি, নিরাপত্তা ও সামাজিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখার ক্ষেত্রে এক ও অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়নের লক্ষ্য অর্জনে প্রয়োজন সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা এবং সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার। এ লক্ষ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রায় যে কোন দেশ ও সংগঠনের সম্পৃক্ততা এবং সহযোগিতাকে স্বাগত জানাতে এবং সকলের সাথে একযোগে কাজ করে যেতে প্রস্তুত বলে মার্শা বার্নিকাট আর্ন্তজাতিক এই সম্মেলনকে অবহিত করেন।

বিমস্টেক, বাংলাদেশের পরিচালক কুনজাং এন. তসেরিন সেক্রেটারি জেনারেল এ্যামবাসেডর সুমিথ নাকানডালা এবং ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য ও আইইউবি’র খন্ডকালীন শিক্ষক সাবেক এ্যামবাসেডর ড. সালেহউদ্দীন আহমেদ উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। শুভেচ্ছা বক্তব্য ও সম্মেলনের উদ্দেশ্য তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন আইইউবি’র ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান জনাব রাশেদ চৌধুরী, উপাচার্য অধ্যাপক এম ওমর রহমান, উপ-উপাচার্য (মনোনীত) অধ্যাপক মিলান পাগন, স্কুল অব লিবারেল আর্টস অ্যান্ড সোশাল সায়েন্স-এর ডীন ড. মাহবুব আলম, স্কুল অব এনভায়রনমন্টোল সায়ন্স অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট-এর ডীন ড. মো. আবদুল খালেক এবং গ্লোবাল স্টাডিজ অ্যান্ড গভর্নেন্স প্রোগ্রামের প্রধান অধ্যাপক ইমতিয়াজ এ হোসাইন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে আইইউবি’র প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্ট-এর চেয়ারম্যান জনাব আব্দুল হাই সরকার ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।

Post MIddle

International Conferenceবাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করার জন্য উন্নয়ন সহযোগী দেশ এবং বিদেশী প্রতিষ্ঠান থেকে বিভিন্ন অবকাঠামোগত খাতে প্রচুর বিনিয়োগ দরকার । সেইসাথে খাদ্য, বস্ত্র ও জ্বালানীর মত দৈনন্দিন চাহিদার পাশাপাশি বিকাশমান ভোক্তাদের সৌর বিদ্যুৎ, তৈরি পোশাক, ওষুধ ইত্যাদি খাতে ব্যাপক চাহিদা পূরণের বিষয়টিও বিবেচনায় রাখা প্রয়োজন। বাজার অর্থনীতির নেতিবাচক প্রভাব থেকে পরিবেশ, নারী, কৃষক ও ক্ষুদ্র জাতিসত্তার জনগণকে রক্ষা করা এবং চীন, ভারত, জাপান, যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশের মাঝে অবকাঠামোগত বিভিন্ন প্রকল্পগুলির ভারসাম্যপূর্ণ বন্টন ও বিনিয়োগের লক্ষে বাংলাদেশকে নিরলস কাজ করে যেতে হবে। এই বিষয়গুলির উপর ভিত্তি করেই সম্মেলনের তিনটি কার্যকরী অধিবেশনে দেশ-বিদেশের স্বনামধন্য শিক্ষাবিদ গবেষক ও বিশেষজ্ঞবৃন্দের মোট ১১টি গুরুত্বপূর্ণ ও তথ্যবহুল মূল প্রবন্ধসমূহ উপস্থাপিত করেন। এঁদের মধ্যে রয়েছেন মেক্সিকোর ইউনিভার্সিটি অব কোলিমা’র অধ্যাপক ড. ফ্রান্সিসকো হারো নাভেজাস ও অধ্যাপক ক্রিস্টিনা তাপিয়া মুরো, লন্ডন স্কুল অব ইকোনোমিক্স-এর পূর্ব এশিয়া বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সাবেক সহযোগী ড. সৈয়দ মাহমুদ আলী, বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের পরিচালক, চীন ও দক্ষিণ এশিয়ার সাবেক রাষ্ট্রদূত মুন্সি ফাইজ আহমেদ, চীনে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত আশফাকুর রহমান এবং কুয়েত ও ইয়েমেনে দায়িত্বপালনকারী বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল মুহাম্মাদ আসাব উদ্দীন।

International Conferenceসাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরী, সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ-এর নির্বাহী পরিচালক ড. মোস্তাফিজুর রহমান, রিসার্চ ইনিশিয়েটিভ-এর নির্বাহী পরিচালক ড. মেঘনা গুহঠাকুরতা এবং যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত জনাব এম হুমায়ূন কবীর বিভিন্ন সেশনের মডারেটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এবং তাঁদের দীর্ঘ অভিজ্ঞতার আলোকে গুরুত্বপূর্ণ মতামত দেন।

সমাপনী অধিবেশনে প্রখ্যাত নাগরিকবৃন্দ তাদের অভিজ্ঞতা বিনিময় করেন এবং এর মাধ্যমে বাংলাদেশ কিভাবে একইসাথে যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও ভারতের সাথে গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রতিযোগিতামূলক সহযোগিতার বিকাশ ঘটাতে পারে, সে সম্পর্কে সারাংশ প্রস্তুত করা হয়। পাশাপাশি, দিনব্যাপী উপস্থাপিত মূল প্রবন্ধগুলি সমাপনী অধিবেশনে পর্যালোচনা করে একটি যথাযথ “কর্ম পরিকল্পনা” প্রণয়ন করা হয়। সাথে ছিল গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর পর্ব। দেশী ও বিদেশী কূটনীতিকবৃন্দ, শিক্ষাবিদ, পরিকল্পনাবিদ, গবেষক, আইইউবি’র শিক্ষকবৃন্দ, কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ এবং শিক্ষার্থীরা দিনব্যাপী উক্ত সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।

পছন্দের আরো পোস্ট