ড. জিসি দেব স্মরণে বিশেষ সেমিনার

আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন মানবতাবাদী দার্শনিক অধ্যাপক ড. গোবিন্দচন্দ্র দেবের ১১০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এক বিশেষ সেমিনার ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ বুধবার আর.সি. মজুমদার আর্টস মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গোবিন্দ দেব দর্শন গবেষণা কেন্দ্র এই সেমিনারের আয়োজন করে।

প্রো-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. নাসরীন আহমাদের সভাপতিত্বে সেমিনারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন। ‘গ্রামবাংলার রূপান্তর : অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক পরিবর্তনের ধারা‘ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সিঙ্গাপুরের প্রাক্তন অধ্যাপক ড. স্বপন আদনান। আলোচনায় অংশ নেন দর্শন বিভাগের প্রবীণ অধ্যাপক ড. আমিনুল ইসলাম। গোবিন্দ দেব দর্শন গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক অধ্যাপক ড. প্রদীপ কুমার রায় অনুষ্ঠান সঞ্চালন করেন ।

Post MIddle

উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক প্রয়াত অধ্যাপক জিসি দেবের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে বলেন, তিনি অত্যন্ত সাধারণ জীবন-যাপন করতেন। সকলকেই তিনি ভালবাসতেন। ফুলব্রাইট স্কলার হিসাবে তিনি ১৯৭১ সালে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছিলেন। সেই নিরাপদ জীবনকে পেছনে ফেলে শিক্ষার্থী, সহকর্মী, দেশ ও জনগণের টানে তিনি দেশে ফিরে আসেন এবং পাক-হানাদার বাহিনীর নির্মম গুলিতে প্রাণ বিসর্জন দেন। যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার প্রাক্কালে তিনি তাঁর সম্পদের অর্ধেক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে দান করেন। এছাড়া, অনেক সম্পদ নি:স্বার্থভাবে তিনি মানুষকে দান করে গেছেন। অথচ সমাজের আরেক শ্রেণির মানুষ নিজেদের স্বার্থে তাঁর বেশ কিছু সম্পদ দখল করে রেখেছে। উপাচার্য বলেন, অধ্যাপক জি সি দেব একজন অসাম্প্রদায়িক মানুষ ছিলেন, কিন্তু ধর্মের নামে এক শ্রেণির মানুষ তাঁর সম্পদ দখল করেছে। অধ্যাপক জিসি দেবের জীবনাদর্শ থেকে শিক্ষা নিয়ে সত্য ও ন্যায়ের পথে অগ্রসর হওয়ার জন্য তিনি শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানান।

উল্লেখ্য, অধ্যাপক ড. গোবিন্দ চন্দ্র দেব ১৯০৭ সালের ১ ফেব্রুয়ারি সিলেট জেলার পঞ্চখ- পরগণার লাউতা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯২৫ সালে স্থানীয় হরগোবিন্দ হাই স্কুল থেকে তিনি প্রথম বিভাগে ম্যাট্রিক পাশ করেন। ১৯২৭ সালে তিনি কলকাতার রিপন কলেজ থেকে প্রথম বিভাগে আই এ এবং ১৯২৯ সালে সংস্কৃত কলেজ থেকে দর্শনে অনার্সসহ বিএ পাশ করেন। তিনি ১৯৩১ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় দর্শন বিভাগের এম এ পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণীতে প্রথম স্থান অধিকার করেন। ১৯৫৩ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দর্শন বিভাগে লেকচারার হিসাবে যোগদেন এবং ১৯৬৭ সালে অধ্যাপক পদে পদোন্নতি লাভ করেন। আজীবন তিনি অকৃতদার ছিলেন। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে তিনি জগন্নাথ হলের প্রভোস্ট বাংলোয় পাক-হানাদার বাহিনীর গুলিতে নিহত হন।#

আরএইচ

পছন্দের আরো পোস্ট