ঢাবিতে ফিরে দেখা একাত্তর শীর্ষক সেমিনার

Photographer-Md.Jakir Hossain (DU PR Office)ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, আজ ১ মার্চ। মার্চ মাস এলেই আমরা ফিরে যাই ১৯৭১ সালের উত্তাল মার্চ মাসে। ফিরে যাই আমরা আমাদের গৌরবোজ্জ্বল মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে। একইসাথে আমরা ধিক্কার এবং তীব্র ঘৃণা ও নিন্দা জানাই পাকিস্তানের বর্বর হানাদার বাহিনী ও তাদের এদেশীয় দালাল সহযোগীদের, যাদের হাতে ১৯৭১-এ শহীদ হয়েছেন ৩০ লক্ষ বাঙালী এবং ইজ্জত হারিয়েছেন ২ লক্ষাধিক মা-বোন।

 

উপাচার্য অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিক আরও বলেন, অত্যন্ত দুঃখের বিষয় কিছু রাজনীতিবিদ আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস নিয়ে কটাক্ষ ও মিথ্যাচার করছেন এবং পাকিস্তানের পক্ষ নিয়ে দায়িত্বহীন ও বিকৃত মন্তব্য করছেন। তিনি বলেন, এসব রাজনীতিবিদ নিজের দেশ, সমাজ ও জাতিকে ভালো না বেসে পাকিস্তানকে বেশী ভালোবাসে। আমাদের স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস-ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতি বিরোধী এসব রাজনীতিবিদদের বিরুদ্ধে সম্মিলিতভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে নতুন প্রজন্মের প্রতি তিনি আহ্বান জানান।

 

মঙ্গলবার ১ মার্চ ২০১৬ মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের আরসি মজুমদার আর্টস মিলনায়তনে ‘ফিরে দেখা একাত্তর: আত্মত্যাগ ও প্রতিরোধ’ শীর্ষক দিনব্যাপী মুক্তিযুদ্ধের আলোচনা, স্মৃতিচারণ ও চলচ্চিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক এসব কথা বলেন।

 

Post MIddle

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইতিহাস বিভাগ, ঢাবি ইতিহাস গবেষণা কেন্দ্র এবং বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ গবেষণা কেন্দ্র যৌথভাবে তিনপর্বের এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। ইতিহাস বিভাগের চেয়ারপার্সন এবং ঢাবি ইতিহাস গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক অধ্যাপক ড. সোনিয়া নিশাত আমিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রথম পর্বের আলোচনা সভায় মূল বক্তা ছিলেন ‘৭১-এর যুদ্ধশিশু অবিদিত ইতিহাস’ পুস্তকের লেখক মুস্তফা চৌধুরী। দ্বিতীয় পর্বে মূল বক্তা ছিলেন হাবিবুল আলম বীর প্রতীক ও তৌহিদুল আলম এবং তৃতীয় পর্বে মূল বক্তা ছিলেন নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু। অনুষ্ঠানে আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন প্রো-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. নাসরীন আহমাদ, কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো: আখতারুজ্জামান, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক অধ্যাপক ড. আশফাক হোসেন, ভাষা শহীদ স্মৃতি জাদুঘর ও সংগ্রহশালার পরিচালক অধ্যাপক ড. আবু মো: দেলোয়ার হোসেন এবং ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. মুনতাসীর মামুন।

 

উপাচার্য অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিক ‘৭১-এর যুদ্ধশিশু অবিদিত ইতিহাস’ পুস্তকের লেখক মুস্তফা চৌধুরীকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ৪৯৮ পৃষ্ঠার এই বইটি আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের একটি নতুন ঐতিহাসিক দলিল। মুক্তিযুদ্ধের অনেক বিরল উপকরণ, উপাদান ও তথ্য-উপাত্ত এই বইয়ে সচিত্র স্থান পেয়েছে। ১৯৭১ সালের অনেক অজানা যুদ্ধশিশুদের কথা সুন্দরভাবে লেখক এই বইয়ে তুলে ধরেছেন। এসব যুদ্ধশিশুরা পশ্চিমা দেশে বড় হয়েছে এবং বসবাস করছে। আমাদেরকে এখন এসব যুদ্ধশিশুদের সাথে তাদের বীরাঙ্গণা মায়েদের সাথে পরিচয় ও যোগাযোগ স্থাপনের দায়িত্ব নিতে হবে। তিনি এই ঐতিহাসিক মূল্যবান বইটি পড়ার জন্য সকল নাগরিকের প্রতি আহ্বান জানান। অনুষ্ঠানে উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক এই বইটির মোড়ক উন্মোচন করেন।#

 

 
লেখাপড়া২৪.কম/আরএইচ

পছন্দের আরো পোস্ট