মাশরুম চাষে জাবি গবেষকের নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন

Button 2016বিশ্বসেরা বাটন মাশরুমের চাষী বান্ধব সহজ চাষ প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের পিএইচ.ডি গবেষক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন। বাটন মাশরুম সারাবিশ্বে সমাদৃত মূল্যবান মাশরুম । মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. আবুল খায়েরের তত্ত্বাবধানে পিএইচ.ডি গবেষণা করছেন। তিনি জাতীয় মাশরুম উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের সাবেক গবেষক এবং মাশরুম উদ্যোক্তা।

 

মূল্যাবান এই মাশরুম উৎপাদন সম্পর্কে বলতে গিয়ে গবেষক আনোয়ার হোসেন জানান, বাটন মাশরুম বিশ্বসেরা, বাটন মাশরুম মোটামুটি ক্যালরি মুক্ত এবং দেহ গঠনের জন্য উপযোগী উন্নত মানের প্রোটিন, ভিটামিন-বি, ভিটামিন-ডি, রিবোফ্লাবিন, নিয়াসিন সমন্বয়ের এক বিশুদ্ধ অর্গানিক পণ্য। এতে প্রচুর মিনারেল, ফসফরাস, পটাশিয়াম,, সেলেনিয়াম এবং অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট রয়েছে। মাশরুমটিতে রয়েছে হাইড্রাজিনের বিভিন্ন রুপভেদ, অ্যাগারিটিন এবং গাইরোমিট্রিন যেগুলোর ক্যান্সার প্রতিরোধী ক্ষমতা রয়েছে। এজন্য প্রাকৃতিক রোগ প্রতিরোধী উপকরণ হিসেবে খাদ্য তালিকায় সারাবিশ্বে শীর্ষস্থান দখল করে আছে। এটি বিশ্বের একশ’টি দেশে বাণিজ্যিকভাবে চাষ হয়। বাণিজ্যিকভাবে মাশরুমটি উৎপাদনে বিশাল স্থাপনা, মূল্যবান যন্ত্রপাতি, প্রশিক্ষিত জনশক্তি ও নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের প্রয়োজন হয়।

 

Button Anwarউন্নত দেশ এই মাশরুম উৎপাদনের জন্য ধান বা গমের খড়ের সাথে বিভিন্ন প্রকার সার মিশিয়ে এক টন পরিমান কম্পোষ্ট তৈরি করে থাকে। অল্প পরিসরে এই মাশরুম উৎপাদনের জন্য কমপক্ষে তিনশত কেজি ধান বা গমের খড় ব্যবহার করতে হয়। অল্প পরিসরে এই আয়োজনটি ও কম ব্যয় বহুল বা শ্রমনিবির কাজ নয়। এছাড়া বসতবাড়ীর আশেপাশে এই কম্পোষ্ট তৈরি করা যায় না, কেননা এতে অ্যামেনিয়া গ্যাসের তীব্র গন্ধের জন্য আপনাকে প্রতিবেশী দ্বারা অভিযুক্ত হতে হবে।

 

Post MIddle

বাটন মাশরুম উৎপাদনের এই সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে কিছু কৃষি উপকরণ ব্যবহার করে কোন প্রকার কম্পোষ্ট তৈরি না করে এই বাটন মাশরুম উৎপাদন করা হয়েছে। কম্পোষ্ট তৈরির চেয়ে এই পদ্ধতিতে খরচ অনেক কম পড়ে। উপযুক্ত প্রশিক্ষণ পেলে আমাদের দেশের সাধারণ মাশরুম উদ্যোক্তা ও মাশরুম চাষীরা প্রতি শীতে প্রচুর বাটন মাশরুম উৎপাদন করতে পারবে। আমাদের দেশ প্রতি বছর প্রক্রিয়াজাত প্রচুর বাটন মাশরুম আমদানী করে থাকে, কৃষি প্রধান দেশ হয়ে এই পরনির্ভরতা কাম্য নয়।

 

মাশরুম উৎপাদন সম্পর্কে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে উদ্ভিদবিজ্ঞানের অধ্যাপক আবুল খায়ের বলেন, ‘গবেষক আনোয়ার হোসেন সারাবছর বিভিন্ন মৌসুমী মাশরুমের উৎপাদনে নিজের ব্যক্তিগত ফার্মে কাজ করে যাচ্ছে, বাটন মাশরুম উৎপাদনে তার এই সফলতা অবশ্যই মাশরুম শিল্পের জন্য একটি বিশাল সুখবর।’

 

বাটন মাশরুমের বৈজ্ঞানিক নাম অ্যাগারিকাস বাইস্পেরাস। ফরাসী উদ্ভিদবিদ টার্ণফোর্ট ১৭০৭ সালে সর্ব প্রথম মাশরুমটির কৃত্তিম উৎপাদনে সফল হন। এরপর ১৮৯৩ সালে ফ্রান্সের পাস্তুর ইনস্টিটিউট ঘোড়ার বিষ্টার কম্পোষ্টে চাষ করার জন্য এই মাশরুমের বিশুদ্ধ মাতৃবীজ উৎপাদন করে। পরে বিভিন্ন দেশের এই মাশরুম উৎপাদনে বিস্তর গবেষণা এবং বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হয়। বর্তমানে বিশ্বব্যাপী মাশরুমটির বার্ষিক উৎপাদন ২ মিলিয়ন মেট্রিকটন। আমাদের দেশের এই মাশরুম উৎপাদনের অনেক সম্ভাবনা রয়েছে।##

 

লেখাপড়া২৪.কম/এ্মএইচ

পছন্দের আরো পোস্ট