ঢাবিতে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের আলোচনা সভা

????????????????????????????????????

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর নিরীহ ও নিরস্ত্র বুদ্ধিজীবীদের ওপর পাকিস্তানী বাহিনীর বর্বর আক্রমনের চিত্র তুলে ধরে বলেছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা সেদিন নজিরবিহীন গণহত্যার শিকার হয়েছিলেন। তিনি বলেন, যে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা গণহত্যার শিকার হয়েছেন, সেই বিশ্ববিদ্যালয় পাকিস্তানের সঙ্গে কোন ধরণের সম্পর্ক রাখতে পারেনা। শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আজ ১৪ ডিসেম্বর ২০১৫ সোমবার ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র মিলনায়তনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি সভাপতির বক্তব্য রাখছিলেন।

 

সভায় প্রো-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সহিদ আকতার হুসাইন, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো: কামাল উদ্দীন, শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. এস এম মাকসুদ কামাল, শহীদ গিয়াস উদ্দিন আহমেদের ভাই ডা. রশীদ উদ্দিন আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শহীদ পরিবার সমিতির সভাপতি আবু মুসা ম. মাসুদউজ্জামানসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মুক্তিযোদ্ধা প্রাতিষ্ঠানিক ইউনিট কমান্ড, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক পরিষদ, অফিসার্স এসোসিয়েশন, ৩য় শ্রেণী কর্মচারী সমিতি, কারিগরী কর্মচারী সমিতি এবং ৪র্থ শ্রেণী কর্মচারী ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার সৈয়দ রেজাউর রহমান অনুষ্ঠান সঞ্চালন করেন।

Post MIddle

 
উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, আত্মসমর্পনের সময় পাকিস্তানী শাসকগোষ্ঠী গণহত্যার দায় স্বীকার করেছিল এবং হত্যাকা- পরিচালনাকারী চিহ্নিত ১৯৫জন সেনা কর্মকর্তাকে সেদেশে নিয়ে বিচারের প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিল। পরবর্তীতে তারা প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেনি; বরং গণহত্যার ঘটনাকে অস্বীকার করে পাকিস্তান এখন সত্যের অপলাপ করছে। তাই তাদের সঙ্গে আর কূটনৈতিক সম্পর্ক রাখা উচিৎ নয়। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কথা বলে পাকিস্তান জাতিসংঘ সনদ লংঘন করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, অবিলম্বে সার্ক এবং জাতিসংঘ থেকে পাকিস্তানের সদস্যপদ বাতিল করতে হবে। উপাচার্য ’৭১-এর মানবতাবিরোধী অপরাধ ও শহীদ বুদ্ধিজীবী হত্যা মামলার বিচার কার্যক্রম দ্রুত সম্পন্ন করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, বাঙালি জাতিকে মেধাশূন্য করতে পাকিস্তানী বাহিনী ও তার দোসররা পরিকল্পিতভাবে দেশের কৃতী সন্তানদের ওপর হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিল। মঈনুদ্দিন, আশরাফ, মুজাহিদসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু বিশ্বাসঘাতক ছাত্র তাদের এই নৃশংস কর্মকা-ে সহযোগিতা করেছিল। তিনি বলেন, সকল বিশ্বাসঘাতকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির মাধ্যমে শহীদদের রক্তের ঋণ শোধ করতে হবে।

 

 

উল্লেখ্য, শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিস্তারিত কর্মসূচী গ্রহণ করে। কর্মসূচীর মধ্যে ছিল- উপাচার্য ভবনসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রধান ভবনে কালো পতাকা উত্তোলন, শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে জমায়েত, বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদ সংলগ্ন কবরস্থান, জগন্নাথ হল স্মৃতিসৌধ ও বিভিন্ন আবাসিক এলাকার স্মৃতিসৌধে পুস্তস্তবক অর্পণ, মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুস্তস্তবক অর্পণ, ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র মিলনায়তনে আলোচনা সভা প্রভৃতি। এছাড়া, বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদসহ বিভিন্ন হল মসজিদ ও উপাসনালয়ে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া ও প্রার্থনা করা হয়।

 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক ১৩ ডিসেম্বর দিবাগত রাত ১২টা ৫৯মিনিটে ফজলুল হক মুসলিম হলে আলোক শিখা প্রজ্বলন ও তথ্যচিত্র প্রদর্শনী উদ্বোধন করেন।#

 

 

লেখাপড়া২৪.কম/ঢাবি/পিআর/আরএইচ-৪৯৫৫

পছন্দের আরো পোস্ট