সূর্যোদয়ের দেশে পড়াশোনা

জাপান এশিয়া তথা পৃথিবীর সমৃদ্ধতম একটি দেশ। পাঁচ হাজারেরও বেশি ছোটবড় দ্বীপ মিলে গঠিত এ দেশটিতে প্রাচীন ঐতিহ্য ও আধুনিক নাগরিক সুযোগ-সুবিধার অপূর্ব সমন্বয় ঘটেছে। উন্নত শিক্ষাব্যবস্থা ও বর্তমান পৃথিবীর প্রায় সব রকম সুযোগ ও সম্ভাবনা বিদ্যমান থাকায় অধিকাংশ বিদেশ গমনেচ্ছু শিক্ষার্থীর কাছে জাপান স্বপ্নময় দেশের নাম। জাপানে আন্ডারগ্র্যাজুয়েট কোর্সগুলো চার বছর মেয়াদি। মেডিকেল, দন্ত চিকিত্সা ও ভেটেরিনারি কোর্সগুলো ছয় বছর মেয়াদি।Lakha-pora

 

জাপানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ভর্তির আবেদন নিখুঁত ও সুন্দর হওয়া বাঞ্ছনীয়। জাপানি ভাষা জানা থাকলে ভর্তি হওয়া সহজ হবে। পাশাপাশি শিক্ষাগত যোগ্যতাও ভালো হতে হবে। আবেদন প্রক্রিয়া অন্যান্য দেশের মতোই।

 

পড়াশোনার ভাষা ও খরচ

জাপানের প্রায় সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানই জাপানি ভাষায় শিক্ষাদান করে। কিছুসংখ্যক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ইংরেজি ভাষায় পড়াশোনা করা যায়। জাপানে পড়াশোনা করতে যাওয়ার আগে সে দেশের ভাষা শিখতে হবে। জাপানে শিক্ষা গ্রহণ অত্যন্ত ব্যয়বহুল। আন্ডার গ্র্যাজুয়েট কোর্সের জন্য এন্ট্রান্স, রেজিস্ট্রেশন ও টিউশন ফি বাবদ প্রায় সাড়ে চার লাখ টাকা লাগতে পারে। গ্র্যাজুয়েশনের জন্য লাগবে প্রায় তিন লাখ টাকা। পাশাপাশি জাপানে থাকা-খাওয়া বাবদ প্রতি মাসে প্রায় ৮০ হাজার টাকা খরচ হবে। এর মধ্যে ডরমেটরি ফি, টেলিফোন, পানি ও বিদ্যুত্ বিল, শিক্ষা উপকরণ বাবদ খরচ রয়েছে।

 

 

কাজ করার সুযোগ

জাপানে বিদেশি শিক্ষার্থীরা অনুমতি সাপেক্ষে খণ্ডকালীন কাজ করতে পারে। এখানে ছাত্ররা সাধারণত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ইংলিশ টিউটর ও সেলসম্যান হিসেবে কাজ করতে পারে। তবে উপার্জিত টাকায় পড়াশোনা চালানো একটু কঠিনই হবে। কারণ এখানে জীবনযাত্রা খুবই ব্যয়বহুল।

 

 

আবেদন ভর্তি ও ভিসা

অন্যান্য দেশের চেয়ে জাপানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ভর্তি হওয়া একটু কঠিন ও সময়সাপেক্ষ। ইউরোপ-আমেরিকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ভর্তি হওয়া সহজ হলেও ভিসা পাওয়া খুব কঠিন, আর জাপানে ঠিক এর উল্টো। তাই জাপানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ভর্তির জন্য আবেদন অত্যন্ত নিখুঁত ও সুন্দর হওয়া বাঞ্ছনীয়। যেহেতু আবেদন ও ভর্তি প্রসেসিংয়ের জন্য অন্য দেশের চেয়ে এ দেশের ক্ষেত্রে একটু বেশি সময় লাগে তাই ৮ থেকে ১০ মাস আগে যোগাযোগ করতে হবে। জাপানি ভাষা জানা থাকলে ভর্তি হওয়া সহজ হবে। পাশাপাশি শিক্ষাগত যোগ্যতাও ভালো হতে হবে। আবেদন প্রক্রিয়া অন্যান্য দেশের মতোই। অর্থাত্ ভর্তিতথ্য ও প্রসপেক্টাস চেয়ে নির্দিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সরাসরি যোগাযোগ করতে হবে।

জাপানের স্টাডি ভিসা সেখানকার মানসম্পন্ন কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির ওপর নির্ভরশীল। তাই ভালো কোনো জাপানি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে পারলে ভিসা পাওয়া অনেকটাই সহজ হয়ে যায়। জাপানি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির প্রমাণপত্র, স্টুডেন্ট পাসপোর্ট, স্ব-খরচে পড়ার ক্ষেত্রে আর্থিক সামর্থ্যের প্রমাণপত্র, শিক্ষাগত যোগ্যতার সব সনদপত্র (ইংলিশ ভার্সন), ছবি ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় আনুষঙ্গিক কাগজপত্রসহ ঢাকাস্থ জাপানি দূতাবাসে সরাসরি সাক্ষাত্ করতে হবে।

 

 

 

Post MIddle

জাপানের কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

ওয়াসেদা ইউনিভার্সিটি

বছরে ৩টি টার্মে ছাত্র ভর্তি করানো হয়—স্প্রিং, ফল ও সামার সেমিস্টার। শিক্ষাবর্ষ সাধারণত এপ্রিল থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত। ন্যূনতম উচ্চ মাধ্যমিক বা সমমান পাস হতে হবে এবং ভালো রেজাল্ট থাকতে হবে।

www.waseda.jp

হিরোসাকি ইউনিভার্সিটি

এপ্রিল থেকে মার্চ পর্যন্ত শিক্ষাবর্ষ। আন্ডার-গ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামে ভর্তির জন্য ন্যূনতম উচ্চ মাধ্যমিক বা সমমান পাস হতে হবে। এছাড়াও জাপানি ভাষায় দক্ষতার পরীক্ষা ও বিদেশি ছাত্রদের যোগ্যতা যাচাইয়ের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে।

www.hirosaki-u.ac.jp

ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব জাপান

এ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রচুর বিদেশি ছাত্র পড়াশোনা করতে যায়। টোকিও, ওসাকা ও কিয়োটোর তুলনায় এখানে পড়াশোনার খরচ তুলনামূলক অনেক কম। এখানে সাধারণত জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত শিক্ষাবর্ষ। ন্যূনতম উচ্চ মাধ্যমিক বা সমমান পাস হতে হবে। ইংরেজিতে ভালো দক্ষতার প্রমাণ দেখাতে হবে।

 

স: ইএইচ

 

পছন্দের আরো পোস্ট