ঈদ মানে কি আসলেই হাসি-খুশি?
আমরা সবাই বলি,বই পুস্তক,পত্রিকাতে দেখি,ঈদ মানে খুশি,ঈদ মানে হাসি,ঈদের আনন্দে মুখরিত হোক সবার জীবন,সমস্ত গ্লানি দুর করে ঈদ বয়ে আনুক আমাদের জীবনে অনাবিল প্রশান্তি। আসলেই কি ঈদ মানে খুশি-হাসি?
ঈদ সবার জীবনে হাসি,খুশি অনাবিল প্রশান্তি বয়ে আনেনা? আমাদের সমাজে এক শ্রেনীর মানষ আছে যাদের জীবনে ঈদ হাসি খুশি নয়,বরং চরম দুঃখ-দুর্দশা বয়ে আনে।সামাজিক ও পারিবারিক জীবনে ডেকে চরম অশান্তি।
তারা আর কেউ নাই,আমাদের আশেপাশেই তাদের বসবাস,যারা দিন আনে,দিন খাই। এদের জীবনে ঈদ মানে একটা বাড়তি খরচ,বাড়তি ঝামেলা আর সেখানে হাসি,খুশি,বা আনন্দ বলে কিছু অনুভব করতে পারেনা তারা।
ঈদ মানে প্রতিটি পরিবারে নির্ধারিত খরচের চেয়ে ঐমাসের অতিরিক্ত একটা খরচ,এর জন্য অতিরিক্ত অর্থের প্রয়োজন।যারা বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি বা বিভিন্ন সংস্থানের সাথে কর্ম জীবনে জড়িত,তারা এই অতিরিক্ত অর্থের যোগানের অংশ হিসেবে বোনাস বা ভাতা পেয়ে থাকে।এদিয়ে কোনো রকম হয়তো চলে।
কিন্তু এসমাজে যে সমস্ত মানুষের কোনো কর্ম নেই, সরকারি-বেসরকারি চাকুরি নেই তারা কিভাবে ঈদের অতিরিক্ত অর্থের যোগান দিয়ে নিজের ও পরিবারের সদস্যদের মুখে হাসি ফোটাবে,খুশি এনে দিবে বলতে পারেন?তাহলে কি এদের জীবনে ঈদ মানে হাসি বা খুশি হল?
একজন দিন মজুর,রিক্সা বা ভ্যান চালক,যে দিনে ৩শত থেকে ৪শত টাকা উপার্জন করে।এদিয়ে তার পরিবারের ৪/৫ জন সদস্যের দৈনন্দিন ভরনপোষন চালাই।এর মাঝে আবার দৈনিক,সপ্তাহিক বা মাসিক কিস্তিতো আছেই।
সব মিলে যা উপার্জন তাই খরচ,সঞ্চয় বলে কিছু নাই।এমন পরিবেশে যখন ঈদ বা কোনো উৎসব আসে,তখন নিজেরও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের প্রয়োজনীয় কিছু কাপড়-চুপড় বা বাড়তি খাবারের আয়োজন করতে হয়।যার বাড়তি আয় নেই,সে কিভাবে বাড়তি খরচ করবে,বলতে পারেন?কোনো উত্তর নেই।
কারন সে বাড়তি কোনো আয়োজন করতে পারবে না,সঙ্গত কারনে সে পরিবারের কোনো চাহিদা ঐ মুহুর্তে পুরন করতে পারবে না।আর তাই তার ব্যর্থতায় পরিবারের অন্যান্য সদস্যের মুখে হাসি ফুটাতে ব্যর্থ হয়।
লেখক : মিজানুর রহমান নয়ন। তরুন সমাজকর্মী,শিক্ষক ও সাংবাদিক