চাকরীর দাবিতে ইবির ফটকে তালা সাবেক ছাত্রলীগ নেতাদের

ইবি প্রতিনিধি-

চাকরীরর দাবিতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) ভিসির দুই পিএসকে অবরুদ্ধ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক অবরোধ করেছে দিনমজুর হিসেবে কর্মরত সাবেক ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। মঙ্গলবার (৮ ফেব্রুয়ারী) বেলা সাড়ে ১২টার দিকে ভিসি কার্যালয়ের সামনে এবং বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক অবোরধ করেন তারা। এসময় প্রায় ১ঘন্টা  বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যান্তরে আটকা পড়ে দ্বিতীয় শিফটের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বহনকারী বাসগুলো।  এতে ভোগান্তিতে পড়েন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরেই চাকরীর দাবিতে আন্দোলন করে আসছিলো দিনমজুর হিসেবে কর্মরত কর্মচারীরা। গত সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় তাদের বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত না আসায় ভিসির পিএস আইয়ুব অলীকে গালাগাল ও পরে তাকে অবরুদ্ধ করেন তারা। তার সাথে অটকা পড়েন ভিসির অন্য একজন পিএস মনিরুজ্জামান মিল্টন। এসময় সাবেক ছাত্রলীগ নেতা টিটু ও রাসেল জোয়ার্দারের নেতৃত্বে তারা ভিসির কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে ‘ধর ধর দালল ধর-ধরে ধরে জবাই কর, দালালের চামড়া-তুলে নেব আমরা, এক দফা এক দাবি এডহকে নিয়োগ দিবি’ সহ নানা শ্লোগান দেন। এছাড়া সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিরোধীদলীয় রাজনীতিতে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ এনে নিয়োগের নিন্দা জানান তারা। এর আগে রেজিস্ট্রার দপ্তরের কার্যালয়ে গিয়ে দপ্তরের কাজ বন্ধ করতে বলেন তারা।

প্রায় দুই ঘন্টা পর ভিসির পিএসকে অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে বের করে নিয়ে আসেন সহকারী প্রক্টররা। পরে প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. মাহবুবুর রহমান আন্দোলনকারীদের প্রতিনিধিদের সাথে আলোচনায় বসেন। কিন্তু আলোচনায় সমাধান না হওয়ায় বিকাল সাড়ে তিন টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে তালা দিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বাস অবরোধ করেন তারা। এসময় শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েন। একপর্যায়ে বিরক্ত হয়ে শিক্ষার্থী ও বর্তমান ছাত্রলীগ নেতারা আন্দোলনকারীদের সাথে বাকবিন্ডায় জড়িয়ে পড়ে। প্রায় ১ ঘন্টা পর পরিবহন প্রশাসকের হস্তক্ষেপে তারা অবরোধ ছেড়ে দেন আন্দোলনকারীরা। এছাড়া আগামী সোমবার ভিসির সাথে আলোচনা করে সমাধান না হলে আবারো আন্দোলন শুরু করবেন বলে জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।

Post MIddle

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক টিটু মিজান বলেন, “আওয়ামী লীগ সরকার যখন ক্ষমতায়, এই মুহুর্তে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের মত ছাত্রলীগ নেতাদের নিয়োগ দিচ্ছে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ নেতারা কেন ডে লেবার হবে? আমাদের চাকরী স্থায়ী না করা পর্যন্ত আমরা আন্দোলন করে যাব।”

ভিসির পিএস আইয়ুব আলী বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি পক্ষ তাদের নিয়ে খেলছে। তারা চাকরীর দাবিতে এসেছিলো কিন্তু আমাকে গালিগালাজ কেন করলো আমি জানিনা।”

ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মু. আতাউর রহমান বলেন, “ডে লেবাররা আমার কার্যালয়ে এসে আমাকে কাজ বন্ধ করতে বলে। এছাড়া কেন তাদের চাকরী হয়নি সে বিষয়ে জানতে চায়।”

ভিসি প্রফেসর ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, “ওরা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেউ না। এক সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়োজনে তাদের কাজ করানো হয়েছিলো। এখন আর তাদের প্রয়োজন নেই। নিয়ম অনুযায়ী চাকরীরর বিজ্ঞপ্তি হলে তাদের বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।”

পছন্দের আরো পোস্ট