কৃষ্ণচুড়া আর রাঙাবে না ইবির প্রধান ফটক

ইবি প্রতিনিধি।

সবুজ-শ্যামল আর বাহারী ফুলে সাজানো ক্যাম্পাস, ক্যাম্পাসের প্রবেশদ্বারে রক্তিম কৃষ্ণচুড়া যেন রংতুলির আঁচড়ে আঁকা কোন দক্ষ শিল্পীর সুনিপুণ চিত্রশিল্প। ক্যাম্পাসে ঢোকার আগে যেন কৃষ্ণচুড়ার রক্তিম রঙে সাদর সম্ভাষণ জানানো হচ্ছে শিক্ষক-শিক্ষার্থী আর দর্শনার্থীদের। বলছি দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) কথা।

যেখানে এসে, প্রবেশদ্বারের কৃষ্ণচুড়ার প্রেমে পড়েনি, এমন লোক খুজে পাওয়া দুষ্কর। শুধু সৌন্দর্যবর্ধকই নয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষার্থীদের হাজারো স্মৃতির সাক্ষী এই কৃষ্ণচুড়া গাছ। এর স্নিগ্ধ ছায়া ও নির্মল বাতাস গৃষ্মের তপ্ত দুপুরে তৃষিত প্রাণের বিশ্রামস্থল। শুধু শিক্ষক-শিক্ষার্থী নয় মহাসড়কের মালবাহী পরিবহণের চালকদের ক্লান্ত শরীরের আয়েশের স্থান এই গাছের ছায়া।

শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ের হাজারো আন্দোলনেরও সাক্ষী এই গাছ। মিছিলের পরে শিক্ষার্থীদের শানিত কন্ঠে ঝাঁঝালো বক্তৃতার মঞ্চ ছিলো এ গাছতলা।কিন্তু সবার প্রেম আর আবেগের সেই কৃষ্ণচুড়া গাছটি রক্তিম রঙে আর রাঙাবে না প্রধান ফটককে। কারণ করোকালীন দীর্ঘ ছুটিতে গাছটি হারিয়েছে তার সজিবতা। গৃষ্মের ক্ষরতাপে রক্তিম কৃষ্ণচুড়ায় আর সে রাঙায় না নিজেকে। আর কোন প্রেয়সীর কানে গুজিয়ে দেয়া ফুলের জোগান দেয় না সে।

Post MIddle

তপ্ত দুপুরে তৃষিত প্রাণকে সূর্যের ক্ষরতাপ থেকে বাঁচাতে আর নিজের পাতাকে মেলে ধরেনা সে। এখন শুধু প্রাণহীন শুকনো কাঠ হয়ে দাড়িয়ে আছে গাছটি।প্রধান ফটকের সৌন্দর্যবর্ধক এই গাছটি মারা যাওয়ায় দাগ কেটেছে প্রকৃতিপ্রেমী শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মনে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্ট্যাটাস দিয়ে তাদের মনোঃকষ্ট প্রকাশ করেছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী আজিজুল হক পিয়াস বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশদ্বারে গাছটি সবার নজর কাড়তো। বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি স্বতন্ত্র সৌন্দর্য বহন করতো গাছটি। যথাযথ পরিচার্যার অভাবে গাছটি মারা গেছে বলে আমার মনে হয়। ব্যাক্তিগতভাবে আমি এখোনো যখন দেখি মরা গাছটি দাঁড়িয়ে আছে তখন খুবই মর্মাহত হই।’

বায়োটেকনোলজি এন্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী আল আমিন মিলন বলেন, “ পরিবেশ দূষণ, মানবসৃষ্ট বিভিন্ন কার্যকলাপ ও সঠিক পরিচর্যার অভাবে হয়তো গাছটি তার সজীবতা হারিয়েছে।

গাছটি মহাসড়কের ঠিক পাশে হওয়ায় প্রতি দিন যরানবাহনের চলাচলের সৃষ্ট কালো ধোঁয়া, ধুলোবালি ও বিভিন্ন ব্যানারের পেরেক গাছটির উপর বিরূপ প্রভাব ফেলেছিলো বলে আমি মনে করি।’

পছন্দের আরো পোস্ট