কারেন্ট ট্রেন্ড অব জুডিশিয়াল ডিসিশনস শীর্ষক সেমিনার

রাবি প্রতিনিধি।

গতকাল (২৬ নভেম্বর) শুক্রবার  সন্ধ্যায় আইন বিভাগের আয়োজনে  শহীদ সুখরঞ্জন সমাদ্দার ছাত্র-শিক্ষক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে ‘কারেন্ট ট্রেন্ড অব জুডিশিয়াল ডিসিশনস ইন বাংলাদেশ’  শীর্ষক এক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. গোলাম সাব্বির সাত্তারের সভাপতিত্বে এ সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি ইমান আলী। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি নাঈমা হায়দার ও খিজির আহমেদ চৌধুরী। এছাড়া সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ড. চৌধুরী মো. জাকারিয়া, আইন অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. আহসান কবির এবং রাজশাহী জেলা ও দায়রা জজ মীর শফিকুল আলম।

সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় ভার্চুয়াল কোর্টে মামলা পরিচালনার কারণে মামলা জট অর্ধেকে কমে এসেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিচারপতি ইমান আলী। এর মাধ্যমে দ্রুত মামলা নিষ্পত্তি সম্ভব বলেও তিনি মন্তব্য করেছেন। বিচারপতি ইমান আলী আরও বলেন, “ভার্চুয়াল কোর্টের বিচারব্যবস্থায় মেডিয়েশন বিষয়টি জনপ্রিয় হচ্ছে কারণ এটির অন্যতম গুণ হচ্ছে সম্পর্ক বজায় থাকে।  আর এর মাধ্যমে দ্রুত ও কম খরচে মামলা নিষ্পত্তি সম্ভব। আর আমরা এটাই করার চেষ্টা করছি।” তিনি আরো বলেন, “ বিচার লাভের অধিকার নিশ্চিতকরণে ও আদালতে মামলা জট কমাতে এই পদ্ধতি ফলপ্রসু ব্যবস্থা হিসেবে হিসেবে কাজ করছে।”

Post MIddle

এছাড়া কারাদন্ডের বিকল্প হিসেবে প্রবেশনের উপর গুরুত্ব আরোপ করেন তিনি। প্রবেশন সম্পর্কে তিনি বলেন, এর মধ্যে রয়েছে মসজিদ পরিস্কার করা, নামাজ পড়া, বই পড়াসহ অন্যান্য নৈতিক কাজ করা । এতে করে একজন মানুষ নিজেকে সংশোধন করার সুযোগ পায়। এভাবে ১০ জন অপরাধীর মধ্যে ৭ জনই সংশোধিত হয়। ফলে অপরাধীর সংখ্যা কমে যায়।

এসময় বিচারপতি নাইমা হায়দার বলেন, অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের মতো বাংলাদেশেও নারীরা নানাভাবে বৈষম্যের শিকার হচ্ছে। নারী ও শিশুদের প্রতি বৈষম্যমূলক আইন, অর্থনৈতিক বৈষম্য, গভীরভাবে প্রোথিত পিতৃতন্ত্র, সামাজিক রীতিনীতি এবং ধর্মীয় চর্চা যা নারী ও শিশুদের যথাযথ অধিকার থেকে বঞ্চিত করছে। যার ফলে নারীরা এখন লিঙ্গ বৈষম্যের পাশাপাশি অবিরত যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। তবে নারীদের প্রতি এসিড নিক্ষেপ, জোর পূর্বক বিবাহ দেওয়া, ইভ টিজিং ইত্যাদি সমস্যা নিরসনে বাংলাদেশের সংবিধানে বেশ কিছু নির্দেশনা আছে। যে নির্দেশিকাগুলি নারী এবং শিশুদের অধিকার সুরক্ষায় তৈরি করা হয়েছে৷

সভাপতির ভাষণে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, আদালতের রায়ে ন্যায়বিচার ও হত দরিদ্র মানুষের আশা আকাঙ্খার  প্রতিফলন যেন ঘটে এজন্য আমাদের উচ্চ আদালত যেভাবে অভিভাবকের ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে তা যেন ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকে। তিনি আরো বলেন ন্যায় বিচার নিশ্চিতকরণে এবং আদালতে মামলা জট কমাতে  আদালতের বিকল্প ব্যবস্থাসমূহের উপর আমাদের জোর দিতে হবে।

অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন আইন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. হাসিবুল আলম প্রধান। এরপরই পেপার উপস্থাপন করেন বিভাগটির অধ্যাপক আবু নাসের মো. ওয়াহিদ। এতে বিভাগটির শিক্ষক, বিভিন্ন পর্যায়ের বিচারিক কর্মকর্তারা ও আইনজীবী ছাড়াও অন্তত সাড়ে তিনশতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেন। অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনায় ছিলেন- আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মমতাজ খাতুন ও সহকারি অধ্যাপক শিবলী ইসলাম।

পছন্দের আরো পোস্ট