আত্মঘাতী ও জীবনধ্বংসকারী রোগ দুশ্চিন্তা

সৈয়দা মুনিয়া জান্নাত

বর্তমানযুগের ছেলেবুড়ো থেকে শুরু করে সকল স্তরের মানুষ চিন্তা নামক ভাইরাসের দ্বারা আক্রান্ত । এ ভাইরাস মানুষকে আস্তে আস্তে নীরবতার অস্ত্র দিয়ে খুন করে ফেলে । ঠুনকো জীবনের সুখকে কর্পূরের মতো উড়িয়ে নিয়ে যায় দুশ্চিন্তা ।

ডিজিটাল যুগের মানুষ আত্মকেন্দ্রিক হয়ে পরেছে । কয়েকবছর আগেও মানুষ মানুষের খোঁজ নিতো , আড্ডা দিতো , মধুর সম্পর্ক গড়ে তুলতো ! কিন্তু যতই মানুষ যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে শুরু করলো ঠিক সেই পরিমানে অপরাধ ও সংঘটিত হতে লাগলো এবং মারাত্মক ধরণের অপরাধ করে দিনশেষে নিজেদের দুশ্চিন্তার কারাগারে বন্দী করতে শুরু করলো ! এ কারাগার বড্ড পাষান চিন্তিত রোগীকে খুব সহজে মুক্তি দেয়না । তিলেতিলে মাথার ডান ও বাম হেমিস্ফেয়ারে আত্মঘাতী নানা জিনিস নিয়ে চিন্তার বিক্রিয়া ঘটিয়ে ক্যান্সারের মতো অনেকটা ভুগিয়ে মাথার ব্রেইন ধ্বংস করে ফেলে ।

দুশ্চিন্তার বেড়াজালে বন্দি মানুষেরা কখনোই ভালো থাকেনা ,কিন্তু মিথ্যে হাসি হেসে দিব্বি ভালো থাকার অভিনয় করে বেড়ায় প্রতিনিয়ত । জগতের ৯০% মানুষই দুশ্চিন্তাগ্রস্থ ।অনেকে মাত্রাতিরিক্ত টেনশন নামক রোগে আক্রান্ত বহুকাল আগে থেকেই , যা মানসিকভাবে ধ্বংসের পথে নিয়ে যাচ্ছে দুশ্চিন্তা তাদের প্রতি সেকেন্ডের ভয়ানক সঙ্গী । এর সমাধান হিসেবে মিলতে পারে হয়তো সামনে চিরতরে “মুক্তি” অথবা অসময়ে “মৃত্যু”।

অতিরিক্ত চিন্তা নামক ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার কারণগুলো হচ্ছে :

Post MIddle

#অলস সময় কাটানো
#আল্লাহর রাস্তা থেকে দূরে সরে যাওয়া
#প্রযুক্তির জেলখানায় রাতদিন চব্বিশ ঘন্টা বন্দী হয়ে থাকা
# কোনো কাজ করার আগে ভেবে না করা
# নিজেকে নিজের মাঝে গুটিয়ে রাখা
# পরিবারের সাথে সবকিছু ভাগাভাগি না করা
# চাপা স্বভাবের স্বীকার হওয়া
# কাজে ব্যস্ত না থাকা
# অহেতুক মস্তিষ্কের বাগানে চিন্তার বীজ বপন করা
# অস্থিরতাকে প্রশ্রয় দেয়া

দুশ্চিন্তা আমাদের যে ক্ষতি সাধন করে :

# অকালে মৃত্যু ঘটায়
# ব্রেইন ড্যামেজ করে ফেলে
# মানসিক রোগী বানিয়ে ফেলে ধীরে ধীরে
# সকল ভালো কাজের থেকে আগ্রহকে ছিনিয়ে নেয়
# মাইগ্রেন , সাইনাস নামক আত্মঘাতী রোগের জন্ম দেয়
# জিন্দালাশ বানিয়ে রাখে
# উগ্র মেজাজী করে তোলে
# জীবনকে ধ্বংসের পথে আস্তে আস্তে ধাবিত করে ।
# হতাশার জালে বন্দী করে
# আত্মহত্যা করার অনুপ্রেরণা দিয়ে থাকে দুশ্চিন্তা !

চিন্তা নামক মরণব্যাধি ভাইরাস হতে মুক্তির সহজ উপায় :

# নিজেকে সবসময় ব্যস্ত রাখতে চেষ্টা করুন !
# যখনই সময় পান বেশি বেশি করে কোরআন তেলাওয়াত করুন !
# অবসর সময় গল্পের বই পড়ুন !
# মেডিটেশন করুন ডেইলি !
# সঠিক সময়ে ঘুমানোর অভ্যাস করুন !
# প্রযুক্তির প্রতি অতিরিক্ত নেশাকে খুন করুন !
# মিশুক হতে চেষ্টা করুন ! বন্ধুবান্ধবের সাথে আড্ডা দিন , সুখদুঃখ শেয়ার করুন অনেকটা হালকা লাগবে !
# প্রতি সপ্তাহে পরিবারের সাথে ঘুরতে যান দূরে কোথাও !
# সমাজসেবামূলক কাজে যতটা সম্ভব নিজেকে নিয়োজিত করুন !

পছন্দের আরো পোস্ট