গ্রিন ইউনিভার্সিটিতে ভিন্ন আঙ্গিকে ভাষা শহীদদের স্মরণ

ক্যাম্পাসজুড়ে ভাষা সম্বলিত অমিয় বাণী। ছিল মাতৃভাষায় দেয়াল পত্রিকা। শরীরে সফেদ-কালো পাঞ্জাবী কিংবা শাড়ি আর মাথায় ২১ খচিত ক্যাপ। আচার-অনুষ্ঠানেও যেন ষোল আনা অমর একুশের আবহ। পোশাকে-পরিবেশে এমন বাঙালিয়ানা ভাবধারা বজায় রেখেই মায়ের ভাষার জন্য জীবন উৎসর্গকারী বীরদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করলোগ্রিন ইউনিভার্সিটি পরিবার।

আজ মঙ্গলবার (২১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭) মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষার দিবস-২০১৭ উপলক্ষে প্রভাতফেরি, কেন্দ্রীয় ও জিউবি শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে এই কর্মসূচী পালিত হয়। পরে গ্রিন ইউনিভার্সিটির ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ মো. শহীদ উল্লাহর সভাপতিত্বে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় ভাষা সৈনিক ও পরমানু বিজ্ঞানী ড. জসীম উদ্দিন আহমেদ প্রধান অতিথি হিসেবে ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপট স্মৃতিচারণ রাখেন। বক্তব্য রাখেন ইউনিভার্সিটির রেজিস্ট্রার লে. জেনারেল মো. মইনুল ইসলাম (অব.), ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ডীন অধ্যাপক ড. গোলাম আহমেদ ফারুকী, বিজ্ঞান ও প্রকৌশল অনুষদের ডীন অধ্যাপক ড. মো. ফাইজুর রহমান ও সহকারী অধ্যাপক সিরাজুম মুনিরা।

সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ভাষা সৈনিক ড. জসীম উদ্দিন আহমেদ বিনম্র শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় বীর শহীদদের স্মরণ ও তাদের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন। তিনি বলেন, বায়ান্ন সালের ভাষা আন্দোলনই প্রদক্ষেপ, যেখানে বাঙালী সন্তানরা নিজ দেশকে রক্ষার জন্য লড়াই করেছে। তাছাড়া বাঙালী জাতিই প্রথম এবং শেষ, যারা মাতৃভাষার জন্য রক্ত দিয়েছে এবং অধিকার ছিনিয়ে নিয়েছে। শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে বাংলা বিশ্বের সকল জাতিগোষ্ঠীর কাছে বিজয়ের প্রতীক হয়ে উঠবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি।

Post MIddle

রেজিস্ট্রার লে. জেনারেল মো. মইনুল ইসলাম (অব.) বলেন, শুধু ভাষার অধিকার নয়, বাঙালি জাতিসত্তা ও সাংস্কৃতিক স্বাতন্ত্র্য রক্ষার জন্য ১৯৫২ সালে রক্ত ঝরেছে। এজন্যই একুশে ফেব্রুয়ারি আজ শোক, শক্তি ও গৌরবের প্রতীক। তিনি মহান ভাষা আন্দোলনে আত্মোৎসর্গকারী ভাষা শহীদদের গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ ও তাঁদের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করেন।

সভাপতির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য মো. শহীদ উল্লাহ বলেন, মহান ভাষা আন্দোলন জাতীয় ইতিহাসে এক ঐতিহাসিক ও তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা। অমর একুশের অবিনাশী এই চেতনাই পরবর্তীকালে স্বাধিকার ও স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় অসীম প্রেরণা ও শক্তি জুগিয়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতিসংঘে বাংলা ভাষায় ভাষণ দেয়ার মাধ্যমে বাংলাকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দিয়েছেন। বর্তমানে তার কন্যাও সেই দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি ভাষা আন্দোলনে আত্মোৎসর্গকারী ভাষা শহীদ সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার, শফিউরসহ ভাষার দাবিতে সোচ্চার তৎকালীন গণপরিষদ সদস্য ধীরেন্দ্রনাথ দত্তসহ সকল ভাষাসৈনিককে স্মরণ করেন।

আলোচনা সভা শেষে গ্রিন ইউনিভার্সিটি কালচারাল ক্লাব পরিচালনায় মনোজ্ঞ এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।

 

 

 

পছন্দের আরো পোস্ট