ক্লাস-পরীক্ষা শুরুর দাবিতে কুবির প্রধান ফটকে তালা

রোববার থেকে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির চলমান ক্লাস পরীক্ষা বর্জন কর্মসূচীতে মঙ্গলবারও কোন ক্লাস পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি। এদিকে ক্লাস ও পরীক্ষা চালুর দাবিতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা মঙ্গলবার সকাল থেকেই ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেয় এবং কাঁঠাল তলায় অবস্থান কর্মসূচি পালন করে। সকালের দিকে শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকদের বাস ক্যাম্পাসের ভেতরে প্রবেশ করতে দিলেও পরে ক্যাম্পাস থেকে আর বাস বের হতে দেয়নি সাধারণ শিক্ষার্থীরা। দুপুর ২ টায় শিক্ষকদের বাস শহরের যাওয়ার জন্য ক্যাম্পাস থেকে বের হতে চেষ্টা করলেও আন্দোলনকারীদের বাধায় বের হতে দেওয়া হয়নি।

ক্যাম্পাস সূত্রে জানা যায়, গত মঙ্গলবার ভোর ৪টার দিকে একাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির কোষাধ্যক্ষ তারিক হোসেন এবং অর্থনীতি বিভাগের প্রভাষক মোছাঃ আশিখা আক্তারের বাসায় ১০-১২ জনের ডাকাতদল তাদের বাসার দরজা ভেঙ্গে ডাকাতির চেষ্টা করে। এই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মামলা না করায় বিশ্ববিদ্যলয় শিক্ষক সমিতি গত রোববার থেকে লাগাতার ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করে।

গত রোববারও শিক্ষক সমিতির ক্লাস বর্জনের প্রতিবাদ ও ক্লাস পরীক্ষা চালুর দাবিতে সোধারণ শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন এবং ১১ দফা দাবিতে উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করে। স্মারকলিপিতে তারা উল্লেখ করে, ‘শিক্ষকদের বাসায় যে ডাকাতি হয়েছে আমরা তার তীব্র নিন্দা ও সুষ্ঠ তদন্তের মাধ্যমে বিচারের দাবি জানাই। কিন্তু এই কারণে যে আমাদের ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ হয়ে আছে তা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। তাই অনতি বিলম্বে আমাদের ক্লাস ও পরীক্ষা চালু করার আহবান জানাচ্ছি।’

Post MIddle

এদিকে শিক্ষকদের ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জনে বাড়ছে সেশন জট। শিক্ষকদের দুই দিনের ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জনে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর ১১টি চূড়ান্ত পরীক্ষা স্থগিত হয়েছে বলে জানান উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক নূরুল করিম চৌধুরী।

মঙ্গলবার অর্থনীতি বিভাগের প্রথম বর্ষ দ্বিতীয় সেমিস্টারের চূড়ান্ত পলীক্ষা ছিল। কিন্তু শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করতে চাইলেও কোন পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি। অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. কাজী মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন বলেন, ‘সকল শিক্ষার্থীর তাদের প্রস্তুতি নিয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহন করতে আসছে। কিন্তুু শিক্ষক সমিতির ক্লাস বর্জনের প্রতি সম্মান জানিয়ে আমরা কোন পরীক্ষা নেই নি।’

জানতে চাওয়া হলে শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. মোঃ আবু তাহের বরেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক নিরাপত্তার বিষয় নিয়ে উপাচার্য মহোদয়ের সাথে কথা বলেছি। জরুরী সিন্ডিকেট সভা ডেকে ও তিনি নিরাপত্তার পদক্ষেপ নিতে পারেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের আশে-পাশের এলাকার নিরাপত্তার ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পুলিশ প্রশাসন বরাবর লিখিত দিয়েছেন। কিন্তু হামলা ডাকাতির মামলার কোন প্রদক্ষেপ নেন নি। এই প্রতিবেদন (বিকাল ৫টা) লেখার সময় প্রতিবেদককে বলেন রাতে শিক্ষক সমিতি বসে পরবর্তীতে কি করা যায় তা আলোচনা করবো’

সার্বিক বিষয় সম্পর্কে উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ আলী আশরাফ বলেন, ‘শিক্ষক সমিতি শিক্ষক লাঞ্চনার বিচার চাইতে এসে আমার সামনে আঙ্গুল তুলে টেবিল চাপড়িয়ে যে ভাবে বিচার চেয়েছেন সেটা কতটুকু যৌক্তিক? আমি এর বিচার কার কাছে চাইবো? এর পরও বিষয়টি নিয়ে হাই পাওয়ার তদন্ত কমিটি করে দিয়েছি। শিক্ষকের বাসায় ডাকাতির চেষ্টার বিষয়ে প্রশাসনকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে ব্যবস্থা নিতে বলেছি এবং শিক্ষক সমিতির বাকি দাবি গুলো আগামী সিন্ডিকেটে উত্থাপন করা হবে বলে তাদেরকে আশ্বস্ত করেছি। ##

পছন্দের আরো পোস্ট