কুবি শিক্ষক সমিতি ও বঙ্গবন্ধু পরিষদেও অবস্থান কর্মসূচি

নবনিযুক্ত প্রক্টর ড. কাজী মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন ও ইংরেজি বিভাগের প্রধান এম এম শরীফুল করিমকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি এবং কম্পিউটার অপারেটর খলিলুর রহমানকে অপসারনের দাবিতে উপাচার্য দপ্তরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ও বঙ্গবন্ধু পরিষদ। সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৫টা পর্যন্ত উপাচার্য দপ্তরে তারা অবস্থান করে। অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে বঙ্গবন্ধু পরিষদের অন্য একটি অংশ উপাচার্যের দপ্তরে গেলে উভয় পক্ষের মাঝে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয়। এসময় উভয় পক্ষই প্রতিপক্ষ দ্বারা লাঞ্চিত হয়েছেন বলে সাংবাদিকদের জানান।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, কলা অনুষদের ডিন ও ইংরেজি বিভাগের প্রধান এম এম শরীফুল করিম ও একই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আবুল হায়াতের মাঝে প্রশ্ন মডারেশনের স্থানকে কেন্দ্র করে বাকবিত-া হয়। এতে আবুল হায়াত এম এম শরীফুল করিম দ্বারা লাঞ্চিত হয়েছেন বলে উপাচার্য বরাবর অভিযোগ করেন। এই ঘটনায় আবুল হায়াত ও শিক্ষক সমিতির দাবীর প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তিন সিন্ডিকেট সদস্যকে নিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। তদন্ত চলাকালীন সময়ে অভিযুক্ত এম এম শরীফুল করিমকে সকল দায়িত্ব থেকে অব্যাহতির আবেদন জানায় শিক্ষক সমিতি ও বঙ্গবন্ধু পরিষদ।

এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর মোহাম্মদ আইনুল হকের দুই বছর নিয়মিত ও এক বছর অতিরিক্ত দায়িত্ব পালনের মেয়াদ শেষ হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য উক্ত পদে অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. কাজী মোহাম্মদ কামাল উদ্দিনকে প্রক্টর এবং একাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দ্র দেবকে শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলের প্রভোস্ট হিসেবে নিয়োগ দেন।

Post MIddle

এম এম শরীফুল করিম ও নবনিযুক্ত প্রক্টরকে তাদের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি এবং রেল নাশকতা মামলার আসামী কম্পিউটার অপারেটর খলিলুর রহমানকে চাকরি থেকে অপসারনের দাবিতে রবিবার উপাচার্যকে ২৪ ঘন্টার সময়সীমা বেঁধে দেয় বঙ্গবন্ধু পরিষদ। এসময়ের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দৃশ্যমান কোন পদক্ষেপ না নেওয়ায় সোমবার বেলা সাড়ে ১২টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৫টা পর্যন্ত উপাচার্য দপ্তরে অবস্থান নেয় শিক্ষক সমিতি ও বঙ্গবন্ধু পরিষদ। অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে বঙ্গবন্ধু পরিষদের অন্য একটি অংশ উপাচার্যের দপ্তরে গেলে উভয় পক্ষের মাঝে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয়। এসময় উভয় পক্ষই পরস্পরকে লাঞ্চিত করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।

ঘটনার বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি এন এম রবিউল আউয়াল চৌধুরী ও শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান বলেন, ‘আমরা আমাদের বিভিন্ন দাবি নিয়ে উপাচার্যের সাথে কথা বলার এক পর্যায়ে ড. মোহাম্মদ সৈয়দুর রহমান ও নবনিযুক্ত প্রক্টর ড. কাজী মোহাম্মদ কামাল উদ্দিনের নেতৃত্বে একদল শিক্ষক বিনা অনুমতিতে উপাচার্যের দপ্তরে প্রবেশ করে আমাদের সাথে বাকবিত-ায় লিপ্ত হয়। তাৎক্ষনিক আমরা উপাচার্য মহোদয়ের কাছে এ ঘটনার প্রতিকার চেয়েছি।’ এ অবস্থায় শিক্ষকদের এ অংশটি নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছেন বলেও জানায়।

এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে ড. মোহাম্মদ সৈয়দুর রহমান বলেন, ‘পূর্ব থেকেই উপাচার্য মহোদয়ের সাথে দেখা করার জন্য আমরা সময় নিয়েছিলাম। এরই প্রেক্ষিতে আমরা উপাচার্যের কার্যালয়ের বাইরে দেড় ঘন্টা অপেক্ষায় ছিলাম। একপর্যায়ে উপাচার্য দপ্তরের ভিতর থেকে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় শুনে সিনিয়র শিক্ষক হিসেবে আমি সহ কয়েকজন শিক্ষক ভিতরে যাই। এসময় তারা আমাদেরকে ‘উপাচার্যের বাহিনী’ বলে আখ্যা দিয়ে আমাদের সাথে অকথ্য ভাষা ব্যবহার করে।’
উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে উপাচার্য ড. মোঃ আলী আশরাফের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘শিক্ষকদের একটি অংশ আমার দপ্তরে এসে দীর্ঘসময় অবস্থান করে। তারা আমার সহকর্মী বলেই আমি বিষয়টি স্বাভাবিকভাবেই নিয়েছি।’#

আরএইচ

পছন্দের আরো পোস্ট