শতবর্ষী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সৈয়দপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়

syedpurpilothsইংরেজ শাসনামলে সৈয়দপুরে রেলওয়ে কারখানা প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় ভারতের বিভিন্ন এলাকা থেকে চাকরির সুবাদে বিভিন্ন ভাষাভাষী মানুষের আগমন ঘটে এই শহরে। এক ইংরেজ সাহেবকে প্রধান করে ১৮৮৬ সালে সর্বপ্রথম এমই স্কুল নামে বর্তমানে রেলওয়ে একাউন্টস অফিসের স্থানে প্রতিষ্ঠিত হয় সৈয়দপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়।

স্কুলের ছাত্র সংখ্যা বাড়ার কারণে সৈয়দপুর ও আশ-পাশের বিদ্যুত্সাহী ব্যক্তিদের মধ্যে মরহুম হেদায়েতুল্লাহ সরকার, রহিম উদ্দিন সরকার, পরমতুল্লাহ সরকার, কোফাতুল্লাহ সরকার, হাজী জামাল উদ্দিন আহমেদ, কাজীতুল্যা চৌধুরী এবং মরহুম জিয়ারতুল্লাহ আহমদ জমি ও অর্থ দান করে স্কুল প্রতিষ্ঠায় যথেষ্ট ভূমিকা রেখেছেন। দেশ বিভাগের কারণে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন চলে যাওয়ায় তাদের নাম পাওয়া যায়নি।
স্থানীয় লোকজন ও কমিটির তরফ থেকে সে সময় সংগৃহিত অর্থের পরিমাণ ছিল মাত্র ১ হাজার টাকা। তত্কালীন সরকারের শিক্ষা বিভাগ ১৪ হাজার টাকা ও রেলওয়ে বিভাগ ১০ হাজার টাকা এককালীন দান করে। রেলওয়ে এলাকা বাদ দিয়ে শহরের নিয়ামতপুর মৌজায় ৫ একর ৩৪ শতক পছন্দসই জায়গা স্কুলের জন্য নির্বাচন করা হয় এবং একটি ইসেপেড স্কুল বিল্ডিং নির্মাণ করা হয়। দক্ষিণমুখী স্কুল ভবনটি আজও অপূর্ব নির্মাণশৈলীর ধারক ও বাহক হিসাবে দাঁড়িয়ে আছে।
এভাবেই ১৮৮৬ সালের এমই স্কুলটি ১৯০৬ সালে সৈয়দপুর হাই ইংলিশ স্কুল হিসাবে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। ১৯০৬ সালে স্কুল ভবনটি নতুনভাবে নির্মাণের পর যদুনাথ ঘোষ এমএকে প্রধান শিক্ষক হিসাবে দায়িত্ব দেওয়া হয়। ১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীনের পর স্কুলের নাম হয় সৈয়দপুর উচ্চ বিদ্যালয় যা পরবর্তীতে সৈয়দপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় নামকরণ করা হয়।
Post MIddle
বয়েজ স্কুল হিসাবে চললেও ১৯৯২ সালে ছাত্রের পাশাপাশি ছাত্রী ভর্তি কার্যক্রম শুরু হয়। বর্তমানে বিদ্যালয়ে ৭৮৮ জন ছাত্র-ছাত্রী পড়ালেখা করছে। বিদ্যালয়ের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য ৬৭টি দোকান রয়েছে।   যেখান থেকে প্রতিমাসে প্রায় ৭৫ হাজার টাকা আয় হচ্ছে।
শতবর্ষী এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অনেক শিক্ষার্থী খ্যাতির শীর্ষে রয়েছেন। ৫২’র ভাষা আন্দোলন ও ৭১’র স্বাধীনতা যুদ্ধে এ বিদ্যালয়ের ছাত্ররা ভূমিকা রেখেছে।বিদ্যালয়ের বর্তমান প্রধান শিক্ষক আনোয়ারুল ইসলাম জানান, শতবর্ষী স্কুলের ভবনগুলো জরুরি ভিত্তিতে সংস্কার প্রয়োজন।
স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেল হক জানান, ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি এই জনপদের অহংকার। প্রতিষ্ঠানটি শত বছর ধরে অসংখ্য শিক্ষার্থীকে জ্ঞানের আলো বিতরণ করে আসছে।
পছন্দের আরো পোস্ট