জাবি এম এইচ হলের রসায়ন আড্ডা

রসায়ন বিভাগের ওরা ৬২ জন। সবাই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মোশাররফ হোসেন আবাসিক হলের শিক্ষার্থী। ওদের কেউ ১ম বর্ষে, কেউবা ২য় বা ৩য় বর্ষে, আবার কেউবা মাষ্টার্স এ পড়াশোনা করছে। অর্থাৎ সকল বর্ষের শিক্ষার্থীই আছে ওদের ৬২ জনের মধ্যে।

 

২য় বর্ষের স্বাধীনের সাথে কথা হয় আমার কিছু দিন আগে। ওরা ২য় বর্ষের সকল শিক্ষার্থীরা মিলে বিভাগের সকলকে নিয়ে হলে একটি নৈশ ভোজের আয়োজন করবে বলে জানাল। সহ্সাই ৩য় বর্ষের আমরা ওদের এই উদ্দেশ্যকে স্বাগত জানালাম। যেই ভাবা, সেই কাজ। হলের রসায়ন বিভাগের সকল শিক্ষার্থীকে বিষয়টি জানান হল। জানান হল বেশ কিছু সিনিয়র ভাইদের যারা পূর্বে এই হলে ছিলেন কিন্তু এখন বিভিন্ন জায়গায় চাকরিতে কর্মরত আছেন।

 

যাইহোক, গত শুক্রবার জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় মীর মোশাররফ হোসেন হলের রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থীদের নিয়ে বহু আকাঙ্খিত নৈশ ভোজ ও আড্ডার আয়োজন করা হয়। উক্ত হলের রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সৌহার্দ্য, সম্প্রীতি, আন্তরিকতা ও ভ্রাতৃত্ববোধের যে সুনাম রয়েছে এটা যেন তারই বহিঃপ্রকাশ। সরকারী ছুটির দিন হওয়ায় উৎসবের আমেজ যেন আরও বেশী করে ছড়িয়ে পড়েছিল। আয়োজনের উক্ত বিভাগের ৪৪ তম আবর্তনের শিক্ষাথীরা। বন্ধু, সিনিয়র, জুনিয়র সবার পদচারণায় শোভা পাচ্ছিল হলের এ ব্লকের ছাদটিতে। সেখানেই বসে মূলত অনুষ্ঠানের মূল পর্ব। রাতের জ্যোৎস্না বিজিত চাঁদের আলোয় নৈসর্গিক মূহুর্ত শোভা পাচ্ছিল হলের ছাদটিতে।

 

এর আগে রাতের খাওয়া দাওয়া ১০.৩০ টায় হলের ডাইনিং রুমে সেরে ফেলা হয়। খাওয়ার আইটেম গুলোও ছিল অসাধারন। পোলাও, মুরগী, ডিম, সবজি, মিষ্টি, দই, কোলড্রিংস আরও কত কি ! যাইহোক সবার একসাথে খাওয়া হল। এরপর সবাই মিলে চলে এলাম হলের এ ব্লকের ছাদে। সেখানেই শুরু হয় রাতভর আড্ডা।

 

Post MIddle

আড্ডায় জুনিয়রদেরকে সিনিয়র দের সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়। সেই সিনিয়ররা তাদের ক্যাম্পাসে তাদের প্রথম দিকের স্মৃতি চারণ করেন। বিশেষ করে গণ রুমে সবাই একসাথে থাকার রম্য অভিজ্ঞতা, ক্যাম্পাসে প্রথম ভাললাগা সহ আরও অনেক মজার অভিজ্ঞতা তাদের জুনিয়রদের সাথে ভাগাভাগি করে নেন। ৩৯’ তম আবর্তনের শিক্ষার্থী শফিক ভাই তার ক্যাম্পাসের আগমনের স্মৃতিচারণ করেন।

 

পাশাপাশি শত প্রতিবন্ধকতা সত্বেও ক্যাম্পাসে খেলাধুলায় তাঁর সাফল্যের কথা জুনিয়র শিক্ষার্থীদের সামনে তুলে ধরেন। ৩৮’ তম আবর্তনের সাজ্জাদ ভাই ১ম বর্ষের নতুন শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে মান্নাদের কফি হাউজের সেই ঐতিহাসিক চরণটি স্মরণ করিয়ে দেন। ‘একই সেবাগানে আজ এসেছে নতুন কুঁড়ি, শুধু সেই সেদিনের মালি নেই ’।

 

তিনি হলটিকে মান্নাদের কফি হাউজের সাথে তুলনা করে সবাইকে মনে করিয়ে দেন যে, আজ যারা জুনিয়র তারা একসময় সিনিয়র হবে এবং সেই সাথে আবার নতুন জুনিয়র আসবে। কিন্তু এই ক্রমধারা কোন পরিবর্তন হবে না।
এছাড়া ৩৯ তম আবর্তনের জর্জ ভাই, মামুন ভাই, শাহীন ভাইও তাদের অভিজ্ঞতা জুনিয়রদের সামনে তুলে ধরেন। পাশাপাশি দিয়ে যান কিছু দিকনির্দেশনা ও উপদেশ।

 

এদিকে সবচেয়ে জুনিয়র ৪৫ তম আবর্তনের শিক্ষার্থীরাও ক্যাম্পাসে আগমনে স্বল্প সময়ের ব্যবধানে অর্জিত তাদের মজার অভিজ্ঞাতা তুলে ধরে সবাইকে মজা পাইয়ে দেয়।আড্ডার শেষ পর্যায়ে ৪৪ তম শিক্ষার্থীদের আয়োজনেই অনুষ্ঠিত হয় ব্যাতিক্রমী রাসায়নিক র‌্যাফেল ড্র। বিজয়ীদের হাতে তুলে দেওয়া হয় আকর্ষনীয় সব মজাদার পুরষ্কার।

 

যাই হোক, অবশেষে আড্ডা, গান, কৌতুক আর রম্য সব অভিজ্ঞতার ফুলঝুঁরি নিয়ে যারা হাজির হয়েছিলেন তাঁদের বিদায়ের পালা এসে গেল। ইতি হল আমদের মিলন মেলার। সেই সাথে জীবন থেকে হারিয়ে গেল কিছু আনন্দঘন কিছু মুহুর্ত। ##

পছন্দের আরো পোস্ট