একবিংশ শতাব্দীর ক্যাম্পাস সাংবাদিকতা

ক্যম্পাসের অন্যান্য সংগঠনের ন্যায় সাংবাদিক সমিতি, রিপোর্টার্স ইউনিট বা প্রেস ক্লাবও একটি সংগঠন। তাই কোন ক্রমেই একদল সাংবাদিক কোন ছাত্র সংগঠনের প্রতিদ্বন্দ্বী নয়। নির্যাতনকারীদের বুঝতে হবে, এই সাংবাদিকরাই আপনাদের মিছিলের ছবি তুলে, নতুন কমিটির খবর ছাপায় কিংবা প্রশাসনকে প্রশ্নবিদ্ধ করে কেন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নেই? অথবা ফুলেল অভিনন্দন জানায় ভ্রাতৃত্ববোধ বুকে ধরে। বাংলাদেশের ইতিহাসে আগে জেলা প্রতিনিধিদের মারধরের ঘটনা ঘটত। এরই পাশাপাশি ক্যাম্পাস প্রতিনিধিরা যুক্ত হয়েছে, আর তার প্রকোপ ২০০৬ সাল থেকেই।

 

ক্যাম্পাস প্রতিনিধিরা কেবল ইতিবাচক খবর দিয়ে যদি সাড়া জাগাবে, ছাত্র হিসেবে নিজের ক্যাম্পাসকে তুলে ধরবে এটা ভুল ধারণা ছাত্র সংগঠনগুলোর। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকগণ তাদের নীতি বজায় রাখার জন্য সততা ও নিষ্ঠার মাধ্যমে ক্যাম্পাসের অনিয়ম তুলে ধরে। আর সেখানেই সমস্যা। দলীয় পক্ষ এর কথা মত না চললে তাদেরকে বিরোধী দলের অনুসারী ভাবা হয়। পরিসংখ্যান অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকদের হলুদ সাংবাদিকতার প্রমাণ আজও মিলেনি। ক্যাম্পাস প্রতিনিধিদের উপর নির্যাতন নতুন কিছু নয়, এটা আমরা স্বীকার করি। সাময়িক বরখাস্ত কিংবা মামলার ফলাফল অথবা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের ভূমিকা এখানে কতটা সুদূর প্রসারী তা সকলেই জানে। চবিতে গত ৫ বছরে নির্যাতনের স্বীকার ৩০ জন প্রতিনিধি। একই সাথে ঢাবি, রাবি,ইবি, জবি, বাকৃবি,জাবি ও শাবিতে ঘটেছে নির্যাতন,হুমকি, মামলা কিংবা সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে তালা লাগানোর মত নেক্কারজনক ঘটনা। বাংলাদেশের প্রচীন এই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের করুণ অবস্থা দেখে থেমে যায় নি নব্য গঠিত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। বেরোবিসাস, পবিপ্রবিসাস, বশেমুরবিপ্রবিসাস, নোবিপ্রবিসাস, জাককানইসাস, কুবিসাস এমনকি আজও জনপ্রিয় বাংলাদেশের প্রথম প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকদের সংগঠন গবিসাসও। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৬ তেই হুমকি আসে কুবি প্রতিনিধির উপর, একই সাথে নোবিপ্রবিতে এবং সবশেষ পবিপ্রবির প্রতিনিধির উপর হামলা ছিল করুণ! যেখানে সাংবাদিকদের সংগঠন নেই সেখানকার অবস্থা যে ব্যাতিক্রম না যার চিত্র খুবি ও যবিপ্রবিতে পাওয়া যাবে। সাংবাদিক সমিতি কেবল সাংবাদিকতাই করে না, তারাও দেশের আদর্শ নিয়ে চলে, সমিতির হয়ে বিভিন্ন স্মৃতিস্তম্ভে ফুল দেয়, ক্যাম্পাস রেগিং বা মাদকের এর মত সামাজিক আন্দোলনে রাস্তায় মানববন্ধন করে। সুতরাং আমরা আপনাদের প্রতিদ্বন্দ্বী নয়। ক্যাম্পাস প্রতিনিধিরা কেবল নেতিবাচক সংবাদ উপস্থাপন করেনা, ক্যাম্পাসের সেরা শিক্ষার্থীদের প্রাপ্তি ছড়ায় গণমাধ্যমে, অনুপ্রেরণা জোগায় অন্যান্যদের।

 

Post MIddle

সত্যি কথা বলতে একটি বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক এসোসিয়েশন প্র‍্যোজন, যেখানে প্রতি বছর প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক সমিতির একজন প্রতিনিধি শুনাবে এক বছরে তাদের গল্প। পরামর্শ নিবে উপস্থিত সাংবাদিক নেতা বা সংশ্লিষ্ট ব্যাক্তিবর্গের কাছ থেকে। সাম্প্রতিক সময়ে সাংবাদিক নির্যাতনের তীব্র নিন্দা জানাই। একই সাথে নির্যাতনকারীর দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবি জানাই । গণমাধ্যম হোক মুক্ত- হোক সে ক্যাম্পাস বা অন্য কোথাও!

 

নাসিমুল ইসলাম,
সাধারণ সম্পাদক
বশেমুরবিপ্রবি সাংবাদিক সমিতি
বশেমুরবিপ্রবি, গোপালগঞ্জ।

পছন্দের আরো পোস্ট