একটি ক্যানভাসের গল্প

8fc34525-8f8e-41f1-a618-375d445e3da9

ক্যাম্পাসটা মধুমতী নদীর তীরে। বাংলাদেশের বাংলাদেশের নতুন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভিতরে একটি হল তাদের এই ৫৫ একরের ক্যাম্পাস । তিন জন ছাত্র, যাদের একজন ২য় বর্ষের ও বাকী দুইজন এ বছর গ্রাজুয়েশন শেষ করবে । গল্পটাগোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানবিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বশেমুরবিপ্রবি) তিন জন শিক্ষার্থী মোঃ আনিন নাইম, নাসিমুল ইসলাম ও শশী প্রসাদ শীলকে নিয়ে । তবে ক্যাম্পাসে তাদের পরিচয় ও জনপ্রিয়তা একটা ছোট সংগঠন নিয়ে, যার নাম “বশেমুরবিপ্রবি ক্যানভাস” ।

 

 

 

 

নাসিমুল ইসলাম পড়ছেন, হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য পদ্ধতি বিভাগে ।নাসিমের মতে, একটি ক্যাম্পাস পরিচিতি পায় বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীক সংগঠনগুলোর মাধ্যমে ।আর ক্যাম্পাসে ভর্তি হওয়ার পর থেকে নেশা ছিল বেশ কয়েকটা সংগঠন করব । তিনি আরও বললেন, নতুন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থীদের সংগঠন নিজ হাতে তৈরি করতে হয় । নাসিম আরও বললেন, মাঠ পর্যায়ে সংগঠন করার অভিজ্ঞতা আমার কলেজ জীবনে ছিল ।ক্যাম্পাসে এসেই গোটা চারেক সংগঠন নিয়ে
কাজ করেছি । কিন্তু সদূরপ্রসারী লক্ষ্য আছে এমন কোন সংগঠন বশেমুরবিপ্রবিতে নেই বলে পরিচয় হল একটা ছোট ফেসবুক পেইজের সাথে । নাসিমুলের গল্পগুলো ছিল ২০১৫ এর শুরুর দিকে ।

 

 

 

 

এবার বলি মোঃ আনিন নাইমের কথা, নাইম পড়ছেন ফার্মেসী বিভাগে । তিনি বললেন ২০১৩ এর শুরুর দিকে আমি একটা ফেসবুক পেইজ খুলি যার নাম দেই “বশেমুরবিপ্রবি নিউজ”। পেইজটিতে একাই কাজ করি প্রায় একটি বছর । প্রতিদিন ক্যাম্পাসে ঘটে যাওয়া ঘটনা, আসন্ন ইভেন্ট, বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীদের গ্রুপ ছবি পোস্ট এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট থেকে নোটিশ নিয়ে পোস্ট করতাম পেইজে ।

 

 

 

 

Post MIddle

এদেরভিতরের সর্বশেষ জন হলেন শশী প্রসাদ শীল,যিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত রসায়ন অ্যান্ড কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এর ছাত্র । নাইম বলল, শশী তরুণ প্রজন্মের চেতনা ধর্মী বিভিন্ন লেখা আমাদের এই ছোট মাধ্যমে পোস্ট করতেন । শশী প্রসাদ শীল বললেন, ২০১৫ এর দিকে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিক সমিতি গঠন করা হয়, যার অন্যতম সদস্য ছিলেন নাসিমুল ইসলাম । তারপরপেশাগত দায়িত্ব নিয়ে বশেমুরবিপ্রবি নিউজচলতে থাকে টানা একটি বছর । কেবল ক্যাম্পাসের প্রতিদিনের ঘটনা নয় বিভিন্ন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর মতামত, আসন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ভিত্তিক অনুষ্ঠানের ইভেন্ট, ক্যারিয়ার ভিত্তিকলেখা, জাতীয় প্রতিযোগীতার খবর,বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগঠনগুলোর পিছনের গল্পসবকিছু নিয়ে চলতে থাকে “বশেমুরবিপ্রবি নিউজ”। হঠাৎ করে বশেমুরবিপ্রবি নিউজ থেকে পেইজটি নাম বদলিয়ে নতুন নাম ধারণ করে “বশেমুরবিপ্রবিক্যানভাস” । কেন এই নাম?প্রশ্নটা করলাম আনিন নাইমের কাছে, তিনি বললেন অনলাইনের পাশাপাশি আমরা মাঠ পর্যায়ে কাজে নামতে যাচ্ছি । তারপর ক্যানভাস থেকে তিন তরুণ মিলে শুরু করলেন বশেমুরবিপ্রবির সেরা শিক্ষার্থীদের অন্বেষণ । যাদের নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে গত ১৭ মে অনুষ্ঠিত হল ক্যাম্পাসের প্রথম ইয়ুথ সামিট ।

 

 

 

সামিটের আহবায়ক নাসিমুল ইসলাম বললেন, ২০১১ থেকে ২০১৬ অবধি আমরা বশেমুরবিপ্রবির সেরা শিক্ষার্থীদের নিয়ে একটি ডাটাবেজ তৈরি করেছিলাম গত ২০১৫ এর ডিসেম্বরে । ২০১৬ এর শুরুতে আমরা ১০ টি ক্যাটাগরির উপর ৩০ জন শিক্ষার্থী ও ৫ টি সংগঠনকে সম্মাননা প্রদানের ব্যাবস্থা করি । এমন উদ্যোগ এর আগে এই ক্যাম্পাসে হয় নি । প্রথমে আমরা শিক্ষকদের কাছ থেকে মতামত ও জরিপের মাধ্যমে নির্বাচিত করি৩০ জন শিক্ষার্থী ও ৫ টি সংগঠনকে । পরে এদের অবদানকে ধারাবাহিকভাবে ক্যানভাসের পেইজে উপস্থাপন করি । আর সব শেষে তাদের সম্মাননা দেই । সম্মাননা অনুষ্ঠানের নাম ছিল BSMRSTU Youth Summit 2016 । সামিটের সভাপতিত্ব করেন “বশেমুরবিপ্রবি ক্যানভাসের” প্রতিষ্ঠাতা
সম্পাদক মোঃ আনিন নাইম ও সঞ্চালনায় ছিলেন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক শশী প্রসাদ শীল । সামিটে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইংরেজী বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কাজী মসিউর রহমান । উল্লেখ্য, এই সামিটে ক্যাম্পাসের সেরা রক্তদাতা, লেখক, আবিষ্কারক, সাংবাদিক, সংগীতশিল্পী, সম্মাননা , সংগঠন, আলোকচিত্রী,সংগঠক ও বিতার্কিক এই ১০ টি ক্যাটাগরির উপর সম্মাননা প্রদান করা হয় । এই সামিট নিয়ে একটি ফিচার লিখতে যাচ্ছে “বশেমুরবিপ্রবি ক্যানভাস”, যার স্থান দেওয়া হবে এশিয়া ভিত্তিক কয়েকটি ইয়ুথ জার্নালে ।

লেখক: তন্ময় বিশ্বাস
সমাজবিজ্ঞান বিভাগ,৪র্থ বর্ষ,  বশেমুরবিপ্রবি।

 

লেখাপড়া২৪/এমটি/১০৩

পছন্দের আরো পোস্ট