বিজয়ের পতাকা

Flagমা জননী বাকশূন্য অবস্থায় বেঁচে আছেন, কী যেন বলবেন- তার এক মাত্র বুকের ধন সাদিককে। তা বলার শক্তি মার নাই। প্রায় প্রতিটা মুহুতেই মাকে কাঁদতে দেখা যায়। কেন কাঁদেন মা ? কে না জানে , সবাই জানে। সাদিক, বাড়ি ছিলো না, অভাব মেটাতেই ঢাকা যাওয়া তার। আজ সাদিক রক্ত নদী পার দিয়ে এসেছে মা-বাবার কাছে। পথেই সাদিক সব শুনেছে তার বন্ধু শাফির কাছ থেকে, সেই রাতের কথা। প্রতিটা রাতের মতোই , সেদিনও মা জননী শাফির কাছে এসেছিলো, সাদিকের কথা জানার জন্য।

 

এসে বলেছিলো, বাবা শাফি, আমার সোনা মানিকের কোন খবর পেলি বাবা ? শাফি সাদিককে বললো,আমি বলেছিলাম,না মা সাদিকের কোন খবর পাইনী ( শাফি সাদিকের মাকে মা বলেই ডাকতো)। তবে আজকালের মধ্যে চিঠি আসতে পারে ? মা বলেছিলো, বাবারে খুব চিন্তা হচ্ছে, দেশের অবস্থা ভালো না। বাবা শাফি, আমার সোনা মানিকের কাছে একটা চিঠি পাঠাও,সেখানে লেখবা আমার টাকা পয়সার দরকার নাই, সে যেন, ফিরে আসে। শাফি বলে ,আমি শুধু মাথা নাড়িয়ে বলেছিলাম ঠিক আছে। সেদিন আমি ঘুমিয়েই ছিলাম চারদিক হাজারো মানুষের চিৎকার শুনে ঘুমটা ভেঙ্গে গেলো, প্রথমে আমি মনে করে ছিলাম আমদির পাড়া গ্রামে ডাকাত পড়েছে।

 

বাবা শহিদ হওয়ার পরেও বন্দুকটা আমাদের ঘরেই ছিলো, সেই বন্দুকটা নিয়ে দৌড়ে গেলাম তোদের বাড়ির দিকে। সেখানে গিয়ে দেখি সব যেন স্তব্ধ, দরজার কাছেই তোর বাবার রক্ত মাখা তাজা দেহটা গুংরাছে, আমি কাছে গেলাম,গভীর আধার রাত,তবুও তোর বাবা আমায় চিনেছে। তিনি তখন মৃত্যু পথও যাত্রী। তিনি শুধু আমায় বললেন, শয়তান,পাশান পাকিস্তানী সাদিকের মাকে নিয়ে গেছে, আমাদের অপরাধ, আমরা মুক্তিযোদ্ধাদের মাত্র এক বেলা ভাত খেতে দিয়েছিলাম। বাবারে আমার ভাগ্যহলো না স্বাধীন দেশ দেখা,বুকের মানিকরে আর দেখতেও পেলাম না। বাবা শাফি, সাদিকরে বলিস, আমি ওর বাবা, আদেশ করলাম দেশের জন্য যুদ্ধ করতে।

 

শাফির দু-চোখে দু-ফোটা জল চিকচিক করছিলো ,আরো বললো, চাচা কথা বলতেই পারছিলেন না। জয় বাংলা ,বাংলার জয় হক বলেই যেন, আমার হাতেই শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করলেন। এবার শাফি কেঁদেই ফেললো, আর বললো, গ্রামের লোকদের সহযোগীতায় চাচাকে কবর দিলাম। তখনও মার খোঁজ নেই। মা চাচার মুখ শেষ দেখাটা দেখতে পেলো না। আমরা বাড়ি ফিরছি এমন সময় পাকিস্তানীদের গাড়ি এসে মাকে মাঠে গাড়ি থেকে ফেলে দেয়। মা তারপর থেকে কথা বলতে পারে না। শুধু তাকিয়ে থাকে আর কাঁদে। সাদিকের বুকটা ভিজে গেছে পিতার মৃত্যু আর মাতার গল্প শুনে। সাদিকের হাতে ছিলো চটের একটা ব্যাগ, তাতে ছিলো বাবার জন্য নতুন লঙ্গি,আর মায়ের জন্য নতুন শাড়ী কাপড়।

 

সাদিক ব্যাগ থেকে কাপড় গুলো বেড় করে চিৎকার দিয়ে কেদে উঠলো,শাফির গলা ধরে বললো, ভাই-রে মাকে আমি কি বলবো-রে । শাফি বললো, চল মায়ের কাছে। সাদিককে মায়ের সামনে নিয়ে গেলে সাদিক দৌড়ে মায়ের কাছে যায়,মা জননী একটা চেয়ারে বসে আছেন, মায়ের দু-চোখে দু-ফোটা জল টলমল করছে, মা আর যেন কাঁদতেও পারে না। সাদিক মায়ের পায়ে পরে যায় আর বলে মাগো এসব কি হলো গো মা ? মায়ের দু-চোখের দু-ফোটা জল সাদিকের হাতে পরলো। সাদিক ঐ দু-ফোটা জল মাটিতে পড়তে দেইনী। তার মাথায় মুছে চিৎকার দিয়ে বলে আর নয় ভয়,আর কারো একটি ফোটা চোখের জল মাটিতে পড়তে দিবোনা, আমার কোন মায়ের বোনের সম্মান হাড়াতে দিবো না।

 

এবার যুদ্ধ হবে বিজয়ের পতকার যুদ্ধ। শাফি বললো, আমিও যাবো যুদ্ধে। তাদের কন্ঠে যেন প্রতিবাদী যাদু ছিলো আরো এলো আশে-পাশের ১০ দামাল ছেলে। তারাও যাবে যুদ্ধে । মা জননীও খুশি, মা সাদিক কে এই কথাই বলতো, তবে মায়ের মন তো, তাই হয়তো বা বার বার বাধার সৃষ্টি। মা জানে আজ আর ওকে ফিরানো যাবেনা। ওকে ওর দেশ মা হাত ছানি দিয়ে ডাকছে। আর ওকে আমি বাধা দিতে পারিনা। আমি আমার সন্তানকে দেশ মার জন্য কুরবানী দিতেও রাজি । মায়ের মুখে চোখে আজ আনন্দময় এক হাসি। সাদিকও বুঝতে আর বাকী রইলো না, আসলে মা জননী কী বলতে চান।

 

সাদিক, শাফি, জুমারবাড়ী বাজারের এসে তাদের আরো বন্ধুদের সাথে দেখা করলো, তারাও যাবে যুদ্ধে। সাদিক আর শাফি তাদের বললো,আমরা আগামীকাল যাবো যুদ্ধে তোমরা সবাই তৈরী থেকো। সবাই বললো, হ্যাঁ তাই হবে। এদের মধ্যে ছিলো রনক সে কবি,অনেক কবিতা লেখেছে, একটাও প্রকাশ করতে পারিনী সে। রনক ছন্দ ছাড়া কথাই বলতে যেন পারেনা। রনক, ছন্দ মিলে বললো, বন্ধু সাদিক নাই কোন কিন্তু, দেশ মার জন্য হাতে নিতে, বন্দুক। সবাই হাসছে, রনক আবারো বললো, চলরে চল দামাল জেগেছে এবার,পাকিস্তানী হুশিয়ার ,তোদের জন্য আমরা দামাল অন্ধকার।

 

সাদিক সবার উদ্দেশ্য বললো, আমরা আগামীকাল রাত দশটায় যাবো এবং তবে কোথায় যেতে হবে তা আমরা সাঘাটা গিয়ে কমান্ডার রশিদ সরকারের সাথে দেখা করে যেনে নিবো। এখন আমি আর শাফি যাবো সাঘাটা। কথা তাহলে এই রইলো। সবাই বললো, ঠিক আছে। সাদিক আর শাফি গেলো সাঘাটা, গিয়ে কমান্ডার রশিদ সরকারের কাছ থেকে জেনে নিলো কিভাবে কোথায় যেতে হবে। পরেরদিন সকালে, সাদিকের ফুফাত বোন পারুল এসেছে সাদিকের বাড়ি। পারুল সবার জন্য রান্না করলো। ঠিক সন্ধ্যায় দামাল মুক্তিযোদ্ধারা সবাই আসলো সাদিকদের বাড়ীতে।

 

Post MIddle

সাদিক সবাইকে বললো,সবধান আমাদের দিকে গ্রাম্য রাজাকারদের চোখ আছে। হঠাৎ কবি রনক বললো,সাবধান গ্রাম্য বাংলার দালাল,থাপরাইয়া ফাটিয়ে ফেলবো তোদের গাল, জেগেছে এবার বাংলার দামাল। সাদিক বললো, তাই আমরা তিন জনের বেশি এক সাথে যেতে পারবোনা, আমাদের গন্তব্যে তাই আমরা বিভিন্ন রাস্তা ঘাট দিয়ে যাবো গাইবান্ধা। তারপর আমরা এক জায়গাই হয়ে সবাই যাবো । মা জননী শুনতে পায়,মা মনে মনে আজ বেশ খুশি তার ছেলে সাদিক দেশ মার সম্মান বাঁচাতে নানান বুদ্ধি করছে কি ভাবে কী করবে। খাওয়া শেষে সবাই সাদিকের মায়ের পায়ে সালাম করলো।

 

সাদিক ও মায়ের পায়ে সালাম করলো,আর বললো,মাগো আমায় মাফ করে দিও আমি তোমার সেবা করতে পারলাম না। মা গো দোয়া করো মা আমরা যুলুমবাজদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে যাচ্ছি ইনশাআল্লা মহান আল্লাহ তায়লা আমাদের রহম করবেন। মায়ের মুখে লুকো কান্না ,তার ছেলে আর ফিরে নাও আসতে পারে। তবে মার বিশ্বাস আমার বাংলার ছেলেরা হার মানবে না, এরা আনবে বিজয়ের পতকা। সাদিকের চোখ যায় পারুলের দিকে , সবে ফোটা তাজা এক গোলাপ ফুল যেন পারুল। সাদিক পারুলের কাছে গিয়ে বললো, পারুল এমন ভাবে তাকাসনা তুই আমারে ভুলে যাস।

 

আমি আর ফিরে নাও আসতে পারি। সাদিকের চোখে জল টলমল । চোখ মুছে সাদিক বললো, যাইরে ওরা বাহিরে অপেক্ষা করছে। পারুল-রে আমার মায়ের আপন বলতে কেউ আর রইলো নারে । মাকে দেখে রাখিস । পারুল,তার দু-চোখ মুছে বললো, সাদিক ভাই তুমি তো আমাদের অহংকার ভাই । আমি আমার জন্য চিন্তা করিনা যাও ভাই যাও, তোমাদের বিজয় নিশ্চয়। সাদিক মায়া মমতা ভালোবাসা সব ত্যাগ করে দেশ মার প্রেমে নিজেকে বিলিয়ে দিয়ে চল গাইবান্ধা।

 
তারা সবাই যোগ দিয়েছে যুদ্ধে। সাদিক সহকারী কমান্ডার হয়েছে। ভালো ভাবে যুদ্ধ করছে সাদিকরা। দেখতে দেখতে কেটে যায় একটি মাস, মায়ের মন্টা কেমন যেন করছে। পারুলেরও চোখে মুখে চিন্তার ছাপ।

 
সেদিন যুদ্ধ চলছে, এমন সময় কৌশলে রাজাকারের সহযোগীতায় সাদিক আর কবি রনক কে ধরে নিয়ে যায় পাকিস্তানীরা। আহা,কতো যে র্নিযাতন করা হয় তাদের উপর বলা বাহুল্য। কবি রকন কে, পাকিস্তানিরা জিজ্ঞাসা করলো তোদের সাথের আর মুক্তিযোদ্ধারা কোথায় ? কবি রনক, বললো এই পুলিশ মাথার টুপি খুলিশ তারপর কবির সাথে কথা বলিস। রনক আঙ্গুল দেখিয়ে পাকিস্তানীদের বলে, ঐ আল্লাহ ছাড়া কেউ নয় আমাদের ডংকার, এদেশ আমার আমাদের অংহকার, মুক্তিযোদ্ধারা আছে বাংলার প্রতিটি ঘর ঘর। সাদিকের হাত পা বাধা সাদিক মুখটি তুলিয়ে বললো, ঠিক আছে এবং থুথু নিক্ষেপ করে পাকিস্তানীদের দিকে। এক রাজাকার এক পাকিস্তানীকে বললো, সাদিককে না মেরে ফেলে রনককে গুলি করে মারো ? এর মধ্যেই সাদিক রনকের সাথীরা এসে রনক আর সাদিককে নিয়ে যায়।

 

সেখানে শহিদ হন অনেকে। সাদিক ক্যাম এ গিয়ে বলে আমি আর বুঝি পারিনা। মূল কমান্ডার বললো, না সাদিক তুমি ভেঙ্গে পড়োনা,তুমি কী শোনো নী ৭ ই মার্চের সেখ মুজিবের ভাষণ। মনে নেই তোমার মায়ের কথা, তোমার বাবার অকাল মৃত্যুর কথা। আমরা এখানে এসেছি শুধু আমার দেশ মা না লক্ষ লক্ষ বাবা-মা কে বাঁচাতে। সাদিক বললো, ওরা আমাকে মেরে ফেললো না কেন ? আমায় পঙ্গু করে রাখলো। শাফি বললো, দ্বারা আল্লাই আছে,দেখিস খুব তাড়াতাড়ি তুই সুস্থ হবি। রনক ও অসুস্থ । সাদিক, শাফিকে বললো, ভাই একটা কাগজ আর কলম দেতো মাকে খুব মনে পড়ছে। একটা চিঠি লেখি,শাফি তাই করলো।

 
চিঠিটা প্রায় ১ সপ্তাহ্ পর আসলো মা জননীর হাতে। মা জননী সেই চেয়ারে বসে আছেন, সাদিকের চিঠি পেয়ে মা জননীর চোখে জলের জোয়ার বইতে লাগলো। মা জননী মনে মনে বললো, আলহামদুআল্লা, আমার বুকের ধন মানিক এখনো বেঁচে আছে। পারুল ঘর থেকে দৌড়ে এসে চিঠিটা নেয় বুকে জড়িয়ে বলে মা আমি পড়ি তুমি শোনো। চিঠিতে যা লেখা,

 

প্রিয়, মা,
প্রথমে আমার সালাম নিবে । মা-গো কেমন আছো ? আল্লাহ্ তায়ালার রহমতে ভালোই আছো ইনশাআল্লা । মা-গো আমরা ভালো নেই । সেদিন পাকিস্তানীরা আমাকে আর রনককে ধরে নিয়ে গিয়েছিলো, তারা আমাদের উপর অনেক র্নিযাতন করেছে। মাগো ওরা এক ফোটা পানি খেতে দেইনী মা। মাগো আল্লাহ্ তায়ালার রহমত আর তোমার দোয়া ছিলো বলেই আমরা বেঁচে গেছি তবে হাড়িয়েছি কয়জন মুক্তিযোদ্ধা সাথীকে। মা-গো পারুল কী আমাদের বাড়ীতেই আছে ? যদি থাকে তাহলে ওকে বলিও ও যেন আমার আশা ছেড়ে দেয়। আমি আর হয়তো বাড়িতে ফিরে যেতে পারবো না মা। মা গো আমার একটি পা ভেঙ্গে দিয়েছে পাকিস্তানীরা। আমি সহকারী কমান্ডারের দ্বায়িত্বে আছি। মা-গো তুমি আমাকে নিয়ে ভেবো না। আমি না থাকলেও থাকবে লক্ষ লক্ষ সন্তান তোমার। দোয়া করো আমাদের সবার জন্য ইনশাআল্লা আমাদের জয় হবেই। জয় বাংলা বাংলার জয়। আল্লা হাফেজ।
ইতি
তোমার বুকের ধন
সাদিক

চিঠিটা এক সপ্তাহ আগের,চিঠির খামের গায়ে লেখাই ছিলো তারিখটা। মায়ের দু-চোখে দু-ফোটা জল টলমল করছে। পারুল দৌড়ে ঘরে গিয়ে ডুকরে কেদে উঠে। মা আর কাঁদতে চায়না তার ছেলের জন্য, মা যে দেশকেই বেশি ভালোবাসে । মার মন তবুও পাগল প্রায় পঙ্গু ছেলেকে একবার দেখবে। কিন্তু মার মন্টা আজ কেমন যেন করছে। বুকটা ধুকধুক করছে। আমরা শিকার করি,পৃথিবীর মধ্যে দুরত গতির যোগাযোগের মাধ্যম মায়ের মন। সন্তান যখন বিপদে পরে মায়ের আগে তা পৃথিবীর কেউ জানেনা।

আজ মায়ের মন্টা যেন বিপদ সংকেত দিচ্ছিলো মা আর বুঝতে বাকী রইলো না। তার ছেলে শহিদ হয়েছে। মা পাথর চোখে তাকিয়ে থাকে পথের দিকে তবে তার নিজের ছেলের জন্য নয় তার লক্ষ ছেলের জন্য তারা কখন আসবে বিজয়ের পতাকা নিয়ে । মা কথা বলতে পারলে হয়তো পারুলকে বলতো তার মনের কথা। আজ সেইদিন টি এসেছে আজ দেশ স্বাধীন হয়েছে। চারদিক বিজয়ের বাজনা। সবাই হৈ চৈ করছে । জয় বাংলা, বাংলার জয়। পারুল দৌড়ে যায় দরজায়। তাকিয়ে থাকে বিজয় মিছিলের দিকে। সাদিককের কোন দেখা মেলে কীনা।

পারুল মাকে ধরে দরজায় আনে এবং বলে দেখো মা দেখো তোমার সেই বিজয়ের পতাকা। যার জন্য তোমার এই অপেক্ষা। মা শুধু তাকিয়ে আছে বিরাট মিছিলটার দিকে। পারুল বললো, মা সাদিক ভাই কি আসবে না ফিরে ? মা শুধু তাকিয়ে আছেন বিজয়ের পতাকা লাল সবুজ এর দিকে লাল যেন নয় মার চেনা মুখ গুলো ভাসচ্ছে। সাদিক মাকে ডাকছে যেন ডাকছে সেই লাল বৃত্ত থেকে। মা হাতটা বাড়িয়ে চিৎকার দিয়ে বলে বাবা সাদিক দ্বারা আসচ্ছি। এই কথা বলা মাত্রই মাটিতে পরে যায় মা এবং মা শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। সেইদিন আমাদের বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করে।

লেখাপড়া২৪.কম/শামীম মিয়া/এমএএ-০৩৫৭

পছন্দের আরো পোস্ট