চুয়েটে যন্ত্রকৌশল বিভাগের ৭ম আন্তর্জাতিক কনফারেন্স শুরু

চুয়েট প্রতিনিধি।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)-এর ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. সত্য প্রসাদ মজুমদার বলেছেন,“সভ্যতার বিকাশে যন্ত্রকৌশলের অবদান অনস্বীকার্য। আমাদের যাপিত জীবনের প্রায় সবকিছুই যন্ত্রকৌশলের কল্যাণেই আবর্তিত হয়েছে। বর্তমান ৪র্থ শিল্পবিপ্লবের অন্যতম নিয়ামক হবে যন্ত্রকৌশল। নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও টেকসই জ্বালানি ব্যবস্থাপনা যন্ত্রকৌশলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু।

দেশের ক্রমবর্ধমান জ্বালানি চাহিদা মেটাতে টেকসই জ্বালানি শক্তি নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে। সেজন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ল্যাবরেটরির আধুনিকায়ন, ইন্ডাস্ট্রি-একাডেমিয়া কোলাবোরেশান ও গবেষণা কার্যক্রম বাড়ানোর পাশাপাশি R&D সেক্টর নিয়ে কাজ করতে হবে।” তিনি আরও বলেন, “আন্তর্জাতিক কোলাবোরেশানের চাইতে আঞ্চলিক কোলাবোরেশান অনেক শক্তিশালী হতে পারে। এটা তুলনামূলক সহজ ও কার্যকর হবে বলেই আমার বিশ্বাস। বুয়েট ও চুয়েটের কোলাবোরেশান হতে পারে। আমাদের সম্পর্ক পুরনো।  B এর পরে কিন্তু  C হয়। মানে বুয়েটের পরেই চুয়েটের নাম আসে। বুয়েট-চুয়েটে দ্বিপাক্ষিক চুক্তির মাধ্যমে এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রাম, শিক্ষক-শিক্ষার্থী বিনিময় ও যৌথ গবেষণা কার্যক্রম বাড়ানো যেতে পারে। তবেই বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষার্থীরা কাঙিক্ষত লক্ষ্যে পৌঁছে যাবে।”

Post MIddle

তিনি আজ চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট)-এর যন্ত্রকৌশল বিভাগের আয়োজনে আজ (১৬ই নভেম্বর) বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় অডিটোরিয়ামে আয়োজিত “৭ম যন্ত্রকৌশল ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি বিষয়ক আন্তর্জাতিক কনফারেন্স” (7th International Conference on Mechanical Engineering and Renewable Energy; ICMERE-2023)-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। কনফারেন্সে গেস্ট অব অনার হিসেবে ছিলেন চুয়েটের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন যন্ত্রকৌশল অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. শেখ মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির, অকুপেশনাল সেইফটি বোর্ড অব বাংলাদেশের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মোঃ হাফিজুর রহমান এবং যন্ত্রকৌশল বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মিজানুর রহমান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কনফারেন্স চেয়ার অধ্যাপক ড. কাজী আফজালুর রহমান। কনফারেন্সে আরও বক্তব্য রাখেন নরওয়ের ইউনিভার্সিটি অব এগডারের প্রফেসর ভান খাং (Professor Van Khang) এবং প্রফেসর জোয়াও লীল (Professor Joao Leal)। এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন কনফারেন্স সেক্রেটারি অধ্যাপক ড. প্রসেঞ্জীত দাশ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন যন্ত্রকৌশল বিভাগের ‘১৯ ব্যাচের শিক্ষার্থী শায়লা শাহরিন স্নিগ্ধা ও ‘২০ ব্যাচের শিক্ষার্থী আহাদ বিন আজাদ।

গেস্ট অব অনারের বক্তব্যে অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম বলেন,“৪র্থ শিল্পবিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকামেলায় যন্ত্রপ্রকৌশলীদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। যন্ত্রকৌশলের সহায়তায় মেকানিক্স, মেকা-ইলেকট্রনিক্স, ম্যানুফেকচারিং, ট্রান্সপোর্ট প্রভৃতি ক্ষেত্রে আধুনিকায়ন জীবনমানকে অনেক এগিয়ে নিবে। নবায়নযোগ্য জ্বালানি আমাদের উন্নয়নকে টেকসই করতে সহায়তা করবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নতুন ভিশন স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণেও যন্ত্রপ্রকৌশলীদের ভূমিকা থাকবে। দেশি-বিদেশি গবেষক ও শিক্ষকদের অংশগ্রহণে চুয়েটের এই আন্তর্জাতিক কনফারেন্স ফলপ্রসূ আউটপুট নিয়ে আসবে বলেই আমার বিশ্বাস।”

তিনদিনব্যাপী এই কনফারেন্সে বাংলাদেশ ছাড়াও আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, ভারত, নরওয়ে, রাশিয়া, যুক্তরাজ্য, মালয়েশিয়াসহ পৃথিবীর প্রায় ১১টি দেশ থেকে যন্ত্রকৌশল বিষয়ের অন্তত তিন শতাধিক শিক্ষক, গবেষক, বিজ্ঞানী, প্রফেশনাল এবং উদ্যোক্তাগণ অংশ নিচ্ছেন। কনফারেন্সে যন্ত্রকৌশল বিষয়ের পাশাপাশি বর্তমান বিশ্বের আলোচিত ইস্যু “নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও টেকসই উন্নয়ন” বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রবন্ধসমূহ উপস্থাপিত হবে। এবারের কনফারেন্সে ৮টি কী-নোট স্পিচ, ৬টি আমন্ত্রিত স্পিচ, ১৪টি টেকনিক্যাল সেশন ও একটি প্লেনারি সেশন পরিচালিত হবে। এতে প্রথম দিন ৭টি সেশনে ৭২টি ও দ্বিতীয় দিন ৭টি সেশনে ৬২টিসহ মোট ১৩৪ টি প্রবন্ধ উপস্থাপিত হচ্ছে।

পছন্দের আরো পোস্ট