রোগ প্রতিরোধে সঠিক খাদ্যাভ্যাস ও স্ট্র্রেস ফ্রি লাইভ

লেখাপড়া ডেস্ক।

খাদ্যাভ্যাস একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় রোগ প্রতিরোধের জন্য। আজকাল মানুষ অনেক সচেতন, ফাস্টফুড আর রেড মিট এড়িয়ে চলেন। চর্বি খান না। সবজি পছন্দ না হলেও বেশি বেশি খান। শুধু বেশি খাওয়া এবং বিশেষ কিছু খাবার খাওয়ার কারণে যদি রোগশোকে ভুগতে হয় তাহলে সেটা হতাশাজনক। হলিস্টিক হেলথ কেয়ার সেন্টার এমন একটি প্রতিষ্ঠান যেখানে আপনার শরীরিক অবস্থা অনুযায়ী খাবারের বিষয়ে পরামর্শ দেবে। খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করা এমন কোনো কঠিন কাজ নয়। পরিমিত ডায়েট করলে একদিকে যেমন রোগ নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব, তেমনি রোগ প্রতিরোধও সম্ভব।

আবার আসা যাক মানসিক চাপের প্রসঙ্গে।

কাকে বলে চাপ? কয়েকটি জনপ্রিয় সংজ্ঞা

ব্যক্তির কাছে কিছু প্রত্যাশা করা যা তার স্বাভাবিক ক্ষমতার বাইরে।

চাপ কোনো উপলক্ষ বা ঘটনা নয়, এটি মানুষের সীমাবদ্ধতাকে জানিয়ে দেয়।

চার পাশের পরিবর্তনের সঙ্গে পেরে ওঠায় আমাদের অক্ষমতাই হলো চাপ।

যখনই আমাদের পারিপার্শ্বিকতায় (শারীরিক, মানসিক, সামাজিক বা অর্থনৈতিক) পরিবর্তন আসে, যেটাকে আমরা মূল্যায়ন করি ধ্বংসাত্মক বা ক্ষতিকর; কিছু বিষয়ে সমঝোতা জরুরি হয়ে ওঠে। এ অবস্থায় আমাদের দেহ ও মন যেভাবে সাড়া দেয় তাকেই আমরা বলি স্ট্রেস বা চাপ।

স্ট্রেসের নেতিবাচক প্রভাব

স্ট্রেসের সর্বনাশা প্রভাব পড়ে শরীরের ওপর।

হাইপোথ্যালামাস ও পিটুইটারি গ্লান্ড গভীরভাবে আক্রান্ত হয় এবং স্বয়ংক্রিয়ভাবেই তা নার্ভাস সিস্টেম ও এনডোক্রাইন সিস্টেমের ওপর প্রভাব ফেলে।

Post MIddle

এটা আরও ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে দেহের ইমিউন সিস্টেম, জর্বিজাতীয় মেটাবলিজম এবং নিউরনের ওপর।

শরীরের ৭৫ ট্রিলিয়ন দেহকোষের প্রতিটি আমাদের চিন্তার মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

আরও যেসব সমস্যা হয় সেগুলো হলো : মাথাব্যথা, সংক্রমণ, বুক ধড়ফড় করা, অ্যালার্জি, হজমের সমস্যা, পেশির কম্পন, বমিভাব, ক্লান্তিভাব, ওজন কম বা বাড়া, অনির্দিষ্ট ব্যথাবেদনা, অনিদ্রা ইত্যাদি।

চাপযুক্ত পৃথিবীতে আমরা সবাই নানামুখী চাপের ভেতর দিয়ে জীবন অতিবাহিত করি। তাই চাপ কমাতে পারলে আমাদের জন্য বড় সাহায্য হয়। চাপমুক্ত জীবন আমাদের কর্মদক্ষতা বাড়ায় এবং মানবিক সম্পর্কের উন্নয়ন ঘটায়। হলিস্টিক হেলথ কেয়ার সেন্টার চাপমুক্ত জীবন লাভের জন্য কিছু টেকনিক শিখিয়ে থাকে। তার ভেতর রয়েছে মেডিটেশন ও রাজইয়োগা মেডিটেশন।

চাপমুক্ত জীবন লাভের জন্য সাধারণ বেশ কিছু নিয়ম রয়েছে, যা মানসিক চর্চা। তার কয়েকটি এখানে তুলে ধরা হলো।

১. জীবনের প্রতিটি পর্যায়ে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ কিছু সুবিধা থাকে। যত ক্ষুদ্রই হোক না কেন সেই সুবিধাগুলোকে গভীর চিন্তার সঙ্গে কাজে লাগানোর চেষ্টা গ্রহণ করতে হয়।

২. গতকাল যা করেছেন তার জন্য দুঃখিত হবেন না, কারণ গতকাল আপনার হাতে নেই। গতকাল মরে গেছে। একইভাবে আগামীকালের জন্যও চিন্তিত হবেন না। কারণ আগামীকাল এখনও জন্মগ্রহণ করেনি। শুধু আজকের দিনটিই আপনার হাতে আছে। আজকের দিনটিকেই সফল এবং ইতিবাচক করার জন্য পুরোপুরি চেষ্টা করুন।

৩. নিজেকে অন্যের তুলনায় ছোট বা হীন ভাববেন না। মনে রাখবেন আপনি এ পৃথিবীতে অদ্বিতীয় একজন মানুষ।

৪. আপনার সমালোচকদের উপকারী শুভানুধ্যায়ী ভাবুন। তারা কোনো ফি গ্রহণ ছাড়াই উপকার করছেন। আপনার দুর্বলতা ও সীমাবদ্ধতা বিষয়ে সাইকোথেরাপিস্টের কাজ করছেন।

৫. একসঙ্গে অনেকগুলো সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করবেন না। সমস্যাগুলোকে আলাদা আলাদা ভাগ করুন। যখন আপনি কাজের চাপমুক্ত থাকবেন তখন কেবল একটি সমস্যা নিয়ে চিন্তা করুন। অন্যসব সমস্যার কথা ভুলে যান।# (সূত্র: আলোকিত বাংলাদেশ।)

ডা. গোবিন্দ চন্দ্র দাস
সহযোগী অধ্যাপক, অ্যালার্জি বিভাগ
শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ
দ্য অ্যালার্জি অ্যান্ড অ্যাজমা সেন্টার, ০১৭২১৮৬৮৬০৬

পছন্দের আরো পোস্ট