নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় : সমস্যার সঙ্গে নিত্য বাস

নানা সমস্যায় পরিপূর্ণ জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাককানইবি) সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ এবং ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদ ভবনের শিক্ষার্থীরা। প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ধরনের সমস্যা-সংকটের মোকাবিলা করে চলতে হয় এই অনুষদের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের।

এই দুই অনুষদের ফ্লোর, সিঁড়ি এবং শৌচাগারসমূহের অবস্থা অত্যন্ত শোচনীয় আকার ধারন করছে। এ বিষয়ে বার বার প্রশাসনকে অবিহিত করেও কোন প্রতিকার পাচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

দশতলা বিশিষ্ট দুইটি ভবনের নির্মান কাজ সম্পন্ন না করেই এ দুটি ভবনের ৩ তলা পর্যন্ত শিক্ষা কার্যক্রম চালু করা হয়েছে। যেখানে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের নেই কোন সুপরিকল্পিত রাস্তা। ভবন দু’টির নির্মানাবস্থায় এর ভেতর দিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের যাতায়াত করতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত। আধুনিক মানের বিল্ডিং হওয়া সত্ত্বেও উপড়ে উঠার সিঁড়ির বেহাল দশা। লাখ লাখ টাকা খরচ করা সিড়ির রেলিংগুলোতে সিমেন্ট-বালুর আস্তরণ পরে নষ্ট হচ্ছে। পানি সরবরাহের লাইন এবং বাথরুমগুলো হয়ে পড়ছে বিকল ও ব্যবহারে অনুপযোগী।

সামজিক বিজ্ঞান অনুষদের সিঁড়ি

তৃতীয় তলা পর্যন্ত প্রতিটি ফ্লোরের শৌচাগার, করিডোর, সিঁড়ি এবং চলার রাস্তা বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত। কয়েকটি শৌচাগারে পানির মেইন পাইপ নষ্ট হয়ে দেয়াল গড়িয়ে পানি পড়ে হাঁটু পানি পর্যন্ত জমা হয়ে থাকে। বেশ কিছু পানির টেপ নষ্ট, অপরিষ্কার ও নোংরা। অধিকাংশ সময় অযথা পানি পড়তেই থাকে।

Post MIddle

ফোকলোর বিভাগের আদনান অভিযোগ করে বলেন, আমাদের ক্লাস সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের তিন তলায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনির্মিত ভবনের সিঁড়ি থেকে শুরু ক্লাসরুম, বারান্দা পর্যন্ত পানিতে ভেসে যায়। পানি সরবরাহের পাইপ ফেটে প্রতিদিন হাজার হাজার লিটার পানি নষ্ট হচ্ছে। এতে বিল্ডিং এর মারাত্মক ক্ষতিসাধন হচ্ছে।

হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য পদ্ধতি বিভাগের এক শিক্ষক অভিযোগ করে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের রাস্তাঘাটের অবস্থা অত্যন্ত শোচনীয়। যত্রছত্র অবস্থায় রাস্তায় নির্মান সামগ্রী রেখে দেয়া হচ্ছে। নির্মান কাজের আওয়াজে ব্যহত হচ্ছে শিক্ষা কার্যক্রম।

সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের শৌচাগারের বেহাল দশা

এ বিষয়ে অর্থনীতি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আমিন আনোয়ার আক্ষেপ করে বলেন,  “প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে অবকাঠামোগত কাজের পরিকল্পিত উন্নয়ন রূপরেখা থাকে। কিন্তু অপরিকল্পিতভাবে এসব নির্মান কাজ আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়টিকে দিনকে দিন আবর্জনার স্তূপ বানানো হচ্ছে। এতে প্রশাসনের প্রত্যক্ষ গাফিলতি রয়েছে”।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে লোক প্রশাসন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সহকারী অধ্যাপক শহজাদা আহসান হাবিব জানান, আমরা এসব অপরিকল্পিত নির্মান কাজ সংক্রান্ত কিছু সমস্যা চিহ্নিত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল দপ্তরকে বেশ কয়েকবার অবহিত করেছি কিন্তু প্রকৌশল দপ্তর থেকে এখনো পর্যন্ত কোন সাড়া পাচ্ছি না।

অপরিকল্পিত এসব ভবন নির্মাণকাজের ব্যাপারে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা, উন্নয়ন ও ওয়ার্কস অফিসের পরিচালক প্রকৌশলী মো. হাফিজুর রহমান বলেন, “ অপরিকল্পিতভাবে কোন কাজই হচ্ছে না, সব কিছুই পরিকল্পিতভাবেই হচ্ছে এবং মাস্টারপ্ল্যান অনুযায়ী কাজ হচ্ছে”।

 

পছন্দের আরো পোস্ট