ঢাবিতে শিল্পী খালেদ মাহমুদ মিঠুর স্মরণসভা

ক্ষণস্থায়ী এই জীবনে কেউ দীর্ঘস্থায়ী নই,সময়ের গতিতে চলতে গিয়ে আমাদের হারাতে হয় প্রিয় ব্যাক্তিদের। তেমনি একজন ছিলেন বহুমাত্রিক বিশিষ্ট শিল্পী খালেদ মাহমুদ মিঠু। যদি ও বা তিনি চলে গেছেন, কিন্তু রেখে গেছেন তার স্বর্নালী কর্মগুলোকে। যেগুলো ভুলার নয়,তাই আমরা স্মরনের আবরনে মরনেরে রাখি ঢেকে।

মঙ্গলবার (৭ মার্চ,২০১৭) বিকাল ৫টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে খালেদ মাহমুদ মিঠুর মৃত্যুববার্ষিকী উপলক্ষে আর্য চলচ্চিত্র ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে স্মরনসভা, শিল্পীর শিল্পকর্মের প্রর্দশনী ও শিশু চিত্রাংকন প্রতিযোগীতার পুরস্কার প্রদান অনুন্ঠান অনুস্ঠিত হয়। স্মরণসভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চারুকলা অনুষদের ডিন নিসার হোসেনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট শিল্পী মোস্তাফা মনোয়ার ও শিল্পী সমালোচক মইনুদ্দিন খালেদ, বিশিষ্ট শিল্পী আবদুল মালেক বাবুল,বিশিষ্ট শিল্পী আবুল বারাকাত ও শিল্পী খালেদ মাহমুদ মিঠুর সহকর্মী ও বন্ধুগন।
চিত্রাংকন প্রতিযোগিতার বিচারকের দায়িত্ব পালন করেন বিশিষ্ট শিল্পী আবুল বারাকাত। সভায় স্বাগত বক্তব্যে রাখেন, প্রয়াত শিল্পী খালেদ মাহমুদ মিঠুর সহধর্মিণী কনকচাঁপা চাকমা।

Post MIddle

স্মরণসভায় শিল্প সমালোচক খালেদ মইনুদ্দিন তার বক্তব্যের শুরুতে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন প্রয়াত তার প্রিয় বন্ধু খালেদ মাহমুদ মিঠুকে। তিনি বলেন,খালেদ মাহমুদ এক অসম্ভব ও অনমনীয় চরিত্রের নাম। মিঠু এমন একজন মানুষ ছিল যে কখনো কার কাছে মাথা নত করে নি। সে জীবনে শুধু শিল্পের জন্য মাথা নত করেছিল। তার চরিত্রের মধ্যে বহুমাত্রিকতা প্রকাশ পায়, সে ছিল একাধারে চিত্রশিল্পী,ফটোগ্রাফার,আলোকচিত্রশিল্পী এবং একজন ভাল সাংসারিক। তিনি বলেন,মিঠু তার জীবনকে শিল্পময় করে গড়ে তুলেছিলেন। মিঠু শুধু ভাল শিল্পী ছিলেন না সে একজন ভাল মানুষ ছিলেন। সে তার অন্তর্দৃষ্টি দিয়ে পৃথিবীকে দেখার চেষ্টা করতেন। যদি একজন শিল্পী মন মানসিকতা ও অন্তর্দৃষ্টি সচ্ছ না হয়, তাহলে তাকে যতই দামি ক্যামেরা দেয়া হোক না কেন, তার দ্বারা ভাল ছবি তোলা বা ভাল চিত্রকর হওয়া কখনোই সম্ভব না। তিনি তার বক্তব্যে শেষ করেন, খালেদ মাহমুদ মিঠুর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে স্বলিখিত কবিতার লাইন দিয়ে, মুমূর্ষু বৃক্ষমাতার এই কি ছিল শেষ ইচ্ছা যে তার সুখ্যাত মেধাবী সন্তানটিকে নিয়ে সে ও অন্তিম শয়নে যাবে! মরাগাছের মগডালে বসে ছিল মৃত্যুর দূত? নিয়তির প্রপঞ্চের রহস্য ভেদ করতে কেই বা পেরেছে? তিনি সর্বশেষে বলেন প্রকৃতি মাথার ইচ্ছে হয়েছিল তার প্রিয় সন্তানকে মাটির গভীরে নিয়ে সুরক্ষিত করবে।তাই ওকে চলে যেতে হয়েছে।

বিশিষ্ট শিল্পী মোস্তাফা মনোয়ার খালেদ মাহমুদ মিঠুর জীবনের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বলেন,তার আকাঁর হাত ছিল অসাধারন,সে যেমন খুব ভাল ছবি আকঁত তেমনি খুব ভাল ছবি ও তুলত। সে ছিল সদাহাসোজ্জল,তেজোদৃপ্ত এক মানুষ,যে আমাদের সারাদিন আনন্দ দিত,আমাদের জীবনকে আনন্দে ভরিয়ে দিত। তিনি তরুন প্রজন্মের শিল্পীর প্রতি উদ্দেশ্য করে বলেন,সবসময় যে ভাল ছবি তুলতে হবে তেমন কোন কথা নয়, অনেক সময় আমাদের খারাপ ছবি তুলতে হয়,জীবনকে প্রকাশ করার জন্য,সত্যকে প্রকাশ করার জন্য। অতিরিক্ত সুন্দর কোন বিরহের ঘটনাকে তুলে ধরতে পারে না,তাই তিনি বলেন সব সুন্দর সুন্দর নয়।

স্মরণসভায় অন্যান্যদের মধ্যে খালেদ মাহমুদ মিঠুর জীবনের স্মৃতিচারণ করেন বিশিষ্ট শিল্পী আবদুল মালেক বাবুল ও শিল্পী আবদুল বারাকাত। স্মরণসভা শেষে চিত্রাংকন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার প্রদান করা হয়।#

পছন্দের আরো পোস্ট