জাবিতে মশার উপদ্রবে অতিষ্ট ও ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) মশার উপদ্রব ব্যাপক বেড়ে যাওয়ায় শিক্ষার্থীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। তারা অভিযোগ করেছেন, ড্রেন ও জলাশয়গুলোতে অতিরিক্ত আবর্জনার কারণে মশার উপদ্রব অতিমাত্রায় বাড়ছে। ক্যাম্পাসের আশেপাশের ঝোপঝাড়, জঙ্গল, ড্রেনগুলো নিয়মিত পরিষ্কার না করায় মশার উপদ্রব বেড়েছে।

শিক্ষার্থীরা জানান, মশার উপদ্রব বেড়ে যাওয়ায় হলে থাকা কষ্টকর হয়ে গেছে। রুমে বসে লেখাপড়া করা কষ্টকর হয়ে উঠেছে মশার জ্বালায়। দিনের বেলায় টাঙ্গাতে হয় মশারি। কিংবা সবসময় কয়েল জ্বালিয়ে রাখতে হয়। এছাড়া, দিনের বেলায় ক্লাস রুমগুলোতে মলার উপদ্রব।

সরেজমিনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৬টি আবাসিক হলের পাশে, একাডেমিক ভবনগুলোর ধারে, ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে ভাসমান খাবার দোকানগুলোর পাশে ও বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে ময়লা আবর্জনা। দীর্ঘ দিন ধরে এগুলো পরিস্কার না করায় সেগুলো যেন মশার প্রজনন কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।

Post MIddle

তাছাড়াও ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গার ঝোপ-ঝাড়গুলোও দীর্ঘ দিন ধরে পরিস্কার করা হয় না। ফলে র্টাজেনের দোকান গুলোর পাশে ঝোপ-ঝাড়, শহীদ মিনার, সেলিম আলদিন মুক্তমঞ্চ ও সপ্তম ছায়ামঞ্চ, মুন্নি ও মুরাদ চত্বর, লাইব্রেরি, বিভাগ ও আবাসিক হলগুলোতে ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে মশার উপদ্রব। মশার কারণে সন্ধ্যা হলেই ক্যাম্পাসে থাকা দায় শিক্ষার্থীদের। আবাসিক হলগুলোর অবস্থা যেন আরো ভয়াবহ।

এ বিষয়ে আ ফ ম কামালউদ্দিন হলের আবাসিক শিক্ষার্থী আবু রায়হান বলেন, মশার উপদ্রবে পড়ালেখার টেবিলে বসা যায় না। হলের পাশের ফাঁকা জায়গাগুলো পরিষ্কার না করায় তা জঙ্গলে পরিণত হয়েছে। এদিকে  হলের ড্রেনগুলোও নিয়মিত পরিষ্কার করা হয় না। ফলে সহজেই মশা খুব দ্রুত বংশবিস্তার করেছে। এজন্য রাতে মশার জন্য রুমে থাকা কঠিন হয়ে যায়। দিনের বেলাও মশারি টাঙ্গিয়ে থাকতে হচ্ছে। এতে করে পড়ালেখা করতে পারছি না।’

শেখ হাসিনা হলের আবাসিক শিক্ষার্থী আফরিন মিম বলেন, মশার উপদ্রব ইদানিং খুব বেড়েছে, কিন্তু এ বিষয়ে  প্রশাসনের কোন পদক্ষেপ দেখতে পাচ্ছি না। কোন জায়গায় এক মিনিট শান্তিতে বসা যায় না।
সাংবাদিকতা বিভাগের একজন শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদৌস জিনিয়া বলেন,আমাদের হলের বাহিরে ময়লা ফেলা হয় সেখানে তৈরি হয়েছে মশার আবাস্থল। এছাড়াও হলের ভেতরে বিভিন্ন জায়গা অপরিচ্ছন্ন থাকায় মশার পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে। মশার যন্ত্রণায় পড়ালেখা তো বটেই কোন কাজই করতে পারছি না। তাই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে দাবি জানাই, দ্রুতই এর সমাধানে মশা নিধক স্প্রে ব্যবহার করা হোক।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আর এক শিক্ষার্থী বলেন, প্রশাসনের অবহেলা, অসচেতনায় ক্যাম্পাসে এরকম মশার উপদ্রব। লাইব্রেরিতে পড়তে বসলেই মশার কামড়। হল রুমেও শান্তি নাই, যেখানেই যাই চারিদিকে মশা আর মশা। এভাবে তো ক্যাম্পাসে থাকা দায় হয়ে দাঁড়িছে। সারাক্ষণ কয়েল ধরিয়ে কি রাখা সম্ভব। সারা ক্যাম্পাস ময়লা-আর্বজনায় ভরপুর। ড্রেন, লেক, পুকুরগুলো অপরিস্কার। ক্যাম্পাসের কোথাও পরিষ্কার জায়গা খুঁজে পাওয়া যাবে না। শুধু ঝোপ-ঝাড় দেখা যায়। দ্রুত এ অবস্থা থেকে রক্ষা পেতে চাই আমরা। এভাবে আর চলতে পারে না। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

পছন্দের আরো পোস্ট