কলেজ জীবন ও রেজাল্ট। সুমন আকন্দ

সুমন আকন্দজীবনে কোনদিন কোন পরীক্ষায় প্রথম হইনি আমি।এসএসসিতে ভালো ফল করার পর মনে ইচ্ছা জাগলো একটা ভালো কলেজে পড়বো। বাবাকে বলার পর বললেন, যে কোন একটা কলেজের ফর্ম কিনতে পারবা, আমার অত টাকা নাই তোমার জন্য ৩/৪টা কলেজে ভর্তি পরীক্ষা দেয়াবো।

Post MIddle

বাবার কষ্ট বুঝলাম, তাই নটরডেম কলেজ হতে তার টাকায় আর ঢাকা কলেজ হতে আমার টাকায় (টিউশনীর কামাই)দুটো ফর্ম তুললাম। কপাল আমার,চান্স পেয়ে গেলাম (বলার লোভ হচ্ছে, সাথের সহপাঠীরা অনেকে কোচিং করেও এ দুটো কলেজের ভর্তি পরীক্ষাতে খারাপ করেছে আর কোচিং না করেও আমার দু জায়গাতেই চান্স হলো)।

নটরডেমে টিউশন ফি বেশি বলে বাবা বললেন,সরকারী কলেজে পড়। আমারও তাই ইচ্ছে (শুনেছিলাম, এটা ঐতিহ্যবাহী কলেজ এবং এখানে কড়াকড়ি কম), সাবজেক্ট চয়েসে করে নিলাম পৌরনীতি, অর্থনীতি, ইতিহাস আর যুক্তিবিদ্যা।

বোর্ডস্টান্ড করা বাঘা বাঘা সব স্টুডেন্ট দেখি চারপাশে মাস তিনেক ক্লাশ করার পর এক বড়ভাই বললেন, তোমার সাবজেক্টগুলোতে বেশি নম্বর উঠবে না,প্রাকটিক্যাল সাবজেক্টগুলো নিলে ভালো রেজাল্ট হবে। ব্যস, চেঞ্জ করলাম।এবার নিলাম ভূগোল, মনোবিজ্ঞান, পরিসংখ্যান আর পৌরনীতিটা রাখলাম।

পড়াশোনাতে বেশ সিরিয়াস হয়ে গেলাম, এবং সিনেমা দেখাতেও সিরিয়াস হলাম।রেগুলার ক্লাশ করি এবং বলাকা/বিনাকা হলে যাই। ইয়ার ফাইনাল পরীক্ষার সময় ভালই করলাম কিন্তু পরিসংখ্যান নিয়ে পড়লাম বিপাকে। ম্যাথ আমার মাথা খেয়েছে সারাজীবন। এই বিপাক আর পাক হয় নি, বন্ধুরা পরামর্শ দিলো প্রাইভেট পড়ার।

পড়া হয়নি! শেষমেষ এইচএসসি পরীক্ষার আগে বাদ দিয়ে দিলাম ফোর্থ সাবজেক্ট! রেজাল্ট যা হলো তাতে ‘বোর্ডস্টান্ড’ তকমা লাগলো না ঠিক, কিন্তু বলার মতো একটা রেজাল্ট হলো!

ভার্সিটির গল্পটা আরেকদিন বলি।

সুমন আকন্দ

লেখকঃ সহকারী অধ্যাপক,শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়,সিলেট

পছন্দের আরো পোস্ট