মেধাতালিকার অর্ধেক শিক্ষার্থীও ভর্তি হয়নি নামিদামি কলেজে

ssc-admisionএকাদশ শ্রেণিতে মেধাতালিকা থেকে ভর্তি শেষ হয়েছে গতকাল বুধবার। কিন্তু ভর্তির জন্য পাঁচ দিন সময় দেওয়া হলেও নামিদামি কলেজগুলোতে অর্ধেক শিক্ষার্থীও ভর্তি হয়নি। ফলে অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে শিক্ষার্থীদের ভর্তির সুযোগ বাড়ছে। শুক্রবার অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে শূন্য আসনের ভিত্তিতে আবারও মেধাতালিকা প্রকাশ করবে আন্তশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাবকমিটি।

 

ঢাকা শিক্ষা বোর্ড সূত্র জানায়, নামিদামি কলেজগুলোতে শিক্ষার্থী কম ভর্তি হওয়ার পেছনে কারণ একটাই, বেশির ভাগ মেধাবী শিক্ষার্থী আবেদন করেছে ২০ থেকে ৩০টি নামিদামি কলেজে। ফলে প্রায় সব কলেজেই তারা মেধাতালিকায় রয়েছে। কিন্তু তারা ভর্তি হয়েছে একটি কলেজে। ফলে বাকি কলেজগুলো শিক্ষার্থী পাচ্ছে না। তবে এসব নামিদামি কলেজে যারা অপেক্ষমাণ তালিকার শুরুর দিকে রয়েছে তারাও মেধাবী। হয়তো সামান্য নম্বরের ব্যবধানে তারা প্রথম মেধাতালিকায় আসতে পারেনি। অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে যে মেধাতালিকা করা হবে তাতে তারাই এবার ভর্তির সুযোগ পাবে।

 

এ ছাড়া রাজধানীর নটর ডেম কলেজ, সেন্ট জোসেফ উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও হলি ক্রস কলেজ এবারও ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি করেছে। এসব কলেজের আসন সংখ্যা প্রায় পাঁচ হাজার ১০০। এসব কলেজে যারা ভর্তি হয়েছে তারা যথেষ্ট মেধাবী। তারাও অনলাইনে আবেদন করেছিল। আবেদনের বেশির ভাগ কলেজেই তারা সুযোগ পেলেও ভর্তি হয়নি বলে জানা গেছে।

 

ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ‘বাংলা মাধ্যমের বিজ্ঞানে আমাদের আসন ৬০০। এর মধ্যে ৯০ জন ভর্তি হয়েছে। আর ইংরেজি ভার্সনে আসন সংখ্যা ১০০। ভর্তি হয়েছে মাত্র তিনজন।’

 

আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মতিঝিলের অধ্যক্ষ ড. শাহান আরা বেগম বলেন, ‘আমাদের ইংরেজি ভার্সনে ১০০ আসনের মধ্যে ভর্তি হয়েছে মাত্র ৬৫ জন। বাংলা মাধ্যমে ভর্তি হয়েছে ৬০ শতাংশ শিক্ষার্থী।’

 

Post MIddle

বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ রাইফেলস স্কুল অ্যান্ড কলেজেও বাংলা ভার্সনের মোট আসনে ৩০ শতাংশ শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছে। ইংরেজি ভার্সনে ১২০টি আসনের মধ্যে ভর্তি হয়েছে ২৭ জন। রাজধানীর নামিদামি প্রায় সব কলেজের চিত্র একই বলে জানিয়েছেন ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তারা।

 

ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক ড. আশফাকুস সালেহীন বলেন, ‘এবার একেকজন শিক্ষার্থী ২০টি কলেজ পছন্দের সুযোগ পেয়েছে। তাই দেখা গেছে সেরা মেধাবীরা অনেকেই সাত থেকে ১০টি পর্যন্ত কলেজে মনোনীত হয়েছে। শেষ পর্যন্ত তারা তো ভর্তি হয়েছে একটি কলেজে। ফলে বাকি কলেজগুলোর ওই আসন খালি হয়ে গেছে। এ কারণে অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে শুক্রবার যে মেধাতালিকা প্রকাশ হবে তাতে অনেক শিক্ষার্থীই ভর্তির সুযোগ পাবে।’

 

জানা যায়, সারা দেশে প্রায় সাড়ে চার হাজার কলেজের আসন সংখ্যা প্রায় ১৯ লাখ। আর এবারের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় পাস করেছে ১৪ লাখ ৫২ হাজার ৬০৫ জন। চলতি বছরে উত্তীর্ণদের সঙ্গে ২০১৪ ও ২০১৫ সালের পাস করা শিক্ষার্থীদেরও আবেদনের সুযোগ রয়েছে। তবে আবেদন করেছে ১৩ লাখ এক হাজার ৯৯ জন। আবেদনকারীদের মধ্যে ৯ লাখ ৬০ হাজার শিক্ষার্থী পছন্দের কলেজে ভর্তির জন্য মেধাক্রমে স্থান পেয়েছে।

 

নীতিমালা অনুযায়ী, অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে মেধাতালিকা প্রকাশ করা হবে শুক্রবার। নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের ভর্তি ২৫ থেকে ২৭ জুন এবং ২৮ থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত। বিলম্ব ফিসহ ভর্তি হওয়া যাবে ১০ থেকে ২০ জুলাই পর্যন্ত। একাদশ শ্রেণিতে ক্লাস শুরু হবে ১০ জুলাই।

 

আন্তশিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, যেহেতু অনেক আসন খালি থাকবে। তাই কেউ যাতে ভর্তির সুযোগ থেকে বঞ্চিত না হয় সে ব্যাপারটি লক্ষ রাখা হচ্ছে। যারা এখনো অনলাইন বা এসএমএসে আবেদনই করেনি তাদের কিভাবে ভর্তির সুযোগ দেওয়া যায় সে চিন্তা করা হচ্ছে। প্রয়োজনে অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে নির্বাচিতদের ভর্তি শেষে আসন খালি থাকা সাপেক্ষে ভর্তি উন্মুক্ত করা যায় কি না সে বিষয়টিও ভাবনায় রয়েছে।#

 

আরএইচ

পছন্দের আরো পোস্ট