কাজী নজরুল ইসলামের ১১৭তম জন্মজয়ন্তী

kazi-nazrul-islamজাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১১৭তম জন্মজয়ন্তী আজ। কবি যেমন তার কবিতায় বলেছেন ‘দুর্গম গিরি, কান্তার-মরু, দুস্তর পারাবার/লঙ্ঘিতে হবে রাত্রি নিশীথে, যাত্রীরা হুঁশিয়ার’ তেমনি প্রেমের পরশ বুলিয়ে লিখেছেন ‘আলগা করো গো খোঁপার বাঁধন, দিল ওহি মেরা ফাস গেয়ি।’ তিনিই লিখেছেন ‘গাহি সাম্যের গান-/যেখানে আসিয়া এক হয়ে গেছে সব বাধা-ব্যবধান/যেখানে মিশেছে হিন্দু-বৌদ্ধ-মুসলিম-ক্রীশ্চান/গাহি সাম্যের গান।’ জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে পৃথক বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

 

১৮৯৯ সালের ২৪ মে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার আসানসোল মহকুমার চুরুলিয়া গ্রামে তার জন্ম। ১৯৭৬ সালের ২৯ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন কবি। নজরুল তার একটি গানে লিখেছেন, ‘মসজিদেরই পাশে আমায়, কবর দিও ভাই/যেন গোরের থেকে মুয়াজ্জিনের আযান শুনতে পাই।’ কবির শেষ ইচ্ছা পূরণের জন্য তাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে সমাধিস্থ করা হয়। বাংলা সাহিত্য এবং সংস্কৃতিতে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৭৪ সালের ৯ ডিসেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কাজী নজরুল ইসলামকে সম্মানসূচক ডি’লিট উপাধিতে ভূষিত করে। ১৯৭৬ সালে বাংলাদেশ সরকার কবিকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব দেন। একই বছরের ২১ ফেব্রুয়ারি কবিকে একুশে পদকে ভূষিত করা হয়।

 

কর্মসূচি : মূল অনুষ্ঠান হবে চট্টগ্রামে। আজ বেলা ১১টায় চট্টগ্রামের এমএ আজিজ আউটার স্টেডিয়ামে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি থাকবেন গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, নজরুল ইন্সটিটিউট ট্রাস্টি বোর্ডের সভাপতি ইমেরিটাস অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম ও জাতীয় কবির পৌত্রী খিলখিল কাজী। স্বাগত বক্তব্য দেবেন সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব আক্তারী মমতাজ এবং ধন্যবাদ জ্ঞাপন করবেন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মেজবাহ উদ্দিন। এ বছর জাতীয় কবির ১১৭তম জন্মবার্ষিকী উদ্যাপনের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘সাম্প্রদায়িকতা ও ধর্মান্ধতা রোধে নজরুলের প্রাসঙ্গিকতা’। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ বিষয়ে স্মারক বক্তব্য দেবেন বিশিষ্ট নজরুল গবেষক আবুল মোমেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আলোচনার পর বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি ও নজরুল ইন্সটিটিউটের আয়োজনে ৩০ মিনিটের একটি সাংস্কৃতিক পর্ব থাকবে। দেশের বিশিষ্ট নজরুল সঙ্গীতশিল্পীরা এতে গান পরিবেশন করবেন।

 

Post MIddle

জাতীয় কবির জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে সকাল সাড়ে ৬টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়স্থ কবির সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় ও এর অঙ্গপ্রতিষ্ঠানসমূহ। বাংলা একাডেমির সহযোগিতায় নজরুল ইন্সটিটিউট জাতীয় কবির জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে স্মরণিকা ও পোস্টার মুদ্রণ করবে। নজরুল ইন্সটিটিউট কাজী নজরুল ইসলামকে বর্তমান প্রজন্মের সঙ্গে পরিচিত করার লক্ষ্যে কবির ছবি, পোস্টার ও বই প্রদর্শনীর আয়োজন করবে এবং গণগ্রন্থাগার অধিদফতর বই প্রদর্শনী, পাঠ প্রতিযোগিতা ও রচনা প্রতিযোগিতার আয়োজন করবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যথাযোগ্য মর্যাদায় কবির জন্মবার্ষিকী উদ্যাপন করবে। ঢাকাসহ দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দিবসটি উদযাপন করা হবে। বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসসমূহ এ উপলক্ষে কর্মসূচি পালন করবে। যেসব জেলায় জাতীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে নজরুল জন্মবার্ষিকী উদযাপন করা হবে না, সেসব জেলার জেলা প্রশাসকরা স্থানীয় সংসদ সদস্য, জনপ্রতিনিধি ও সুধীজনের সহযোগিতায় যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি উদযাপন করবে।

জাতীয় পর্যায়ের অনুষ্ঠান ও অন্যান্য অনুষ্ঠানমালা বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতারসহ বেসরকারি চ্যানেলসমূহ সম্প্রচার করবে। ঢাকাসহ জাতীয় কবির স্মৃতিবিজড়িত ময়মনসিংহের ত্রিশাল ও কুমিল্লার দৌলতপুরে স্থানীয় প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় তার ১১৭তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন করা হবে।#

 

আরএইচ

পছন্দের আরো পোস্ট