ভর্তি নিয়ে অনিশ্চয়তায় নাটোরের শিক্ষার্থীরা

ফলাফলরাজশাহী শিক্ষা বোর্ডসহ বিভিন্ন বোর্ডের অধীনে এবার ২০১৬ সালের এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ অনেক শিক্ষার্থী নাটোরের বিভিন্ন সরকারি কলেজে ভর্তির সুযোগ খুঁজছে। সরকারি কলেজ গুলোতে ভর্তি হতে পারলে মানসম্পন্ন লেখাপড়ার পরিবেশ পাবে বলে মনে করছে অনেক শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। সেজন্য কলেজ গুলোতে ভর্তি হতে জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে তারা। তবে ভালো রেজাল্ট করেও কলেজ গুলোতে ভর্তির সুযোগ পাওয়া নিয়ে শিক্ষার্থীদের মাঝে অনিশ্চয়তা বিরাজ করছে।

 

শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, বিগত বছর একাদশ শ্রেণীর ভর্তি নিয়ে ব্যাপক গোলযোগ দেখা দিয়েছিল। শিক্ষা বোর্ড থেকে খুব দ্রুত প্রথম মেধা তালিকা প্রকাশের পর শিক্ষার্থী নানা বিড়ম্বনায় পড়ে।

 

প্রকাশিত ফল সম্পর্কে ভর্তিচ্ছুদের অভিযোগ, এতে মেয়েদের কলেজে ভর্তির জন্য মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে ছেলেদের। বাণিজ্য শাখা নেই, এমন কলেজে পাঠানো হয়েছে বাণিজ্য শাখার শিক্ষার্থীদের। কোনো কোটায় আবেদনই করেনি, এমন ভর্তিচ্ছুদের কোটায় মনোনীত করা হয়েছে। মানবিক বিভাগ থেকে এসএসসি উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীকে দেওয়া হয়েছে বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তির অনুমতি। আবার বিজ্ঞানে আবেদন করে পেয়েছেন বাণিজ্য শাখায় ভর্তির মনোনয়ন।

 

বিগত বছরের একাদশ শ্রেণীতে ভর্তিচ্ছুক শিক্ষার্থী আনোয়ার হোসেন জানান, আমি এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়ে কয়েক দফা চেষ্টা করেও সার্ভারে ত্রুটি থাকার কারনে নাটোর নবাব সিরাজ উদ্-দৌলা (এনএস) সরকারি কলেজে ভর্তি হতে পারিনি।

 

এ বছরের একাদশ শ্রেণীতে ভর্তিচ্ছুক হাবিবুর রহমান বলেন, বিগত বছর সার্ভার ত্রুটির কারনে ভর্তি কার্যক্রম নিয়ে জটিলতা দেখা দিয়েছিল। জানি না এ বছর আমাদের ভর্তির বিষয়টি কতটুকু নিশ্চিত !

 

Post MIddle

অভিযোগের ভিত্তিতে বিষয়ে খোজ নিয়ে জানা য়ায়, বিগত বছর ভর্তি জটিলতার কারনে এনএস কলেজে ৭৬ভাগ আসন ফাকা ছিল। প্রথম দফায় ৯০০ আসনের বিপরীতে মাত্র ২১২ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হতে পারে দ্বিতীয় দফায় ভর্তি কার্যক্রম স্থগিত রাখে কর্তৃপক্ষ।

 

এনএস কলেজ সূত্রে জানা যায়, সার্ভার জটিলতার কারণে প্রথম দফার মতো দ্বিতীয় দফাতেও একাদশ শ্রেনীতে ভর্তির জন্য মেধা তালিকায় এনএস কলেজের নাম না আসায় ভর্তি কার্যক্রমে স্থবিরতা দেখা দিয়েছিল। এ বিষয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষ রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের সাথে যোগাযোগ করেও কোন সুফল পায়নি।

 

এনএস কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর মোঃ আব্দুল কুদ্দুস মৃধা জানান, বিগত বছরের মত যেন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা না ঘটে সেজন্য শিক্ষা বোর্ডের সাথে কথা হয়েছে। এ বিষয়ে ভর্তিচ্ছুক শিক্ষার্থীদের আতংকিত হওয়ার কিছু নেই বলে জানান তিনি।

 

নাটোর জেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, জেলার ১৪ হাজার ২৮০ জন শিক্ষার্থী এ বছর এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। ৯৪ দশমিক ৬৯ শতাংশ পাসের হার নিয়ে মোট পাস করেছে ১৩ হাজার ৫২২ জন শিক্ষার্থী। জিপিএ-৫ পেয়েছে এক হাজার ২৮৬ জন।

 

রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড থেকে জানানো হয়েছে , আগামী ২৬ মে থেকে একাদশ শ্রেণীতে শিক্ষার্থী ভর্তিতে দেশের সকল সরকারি-বেসরকারি কলেজে অনলাইন ও এসএমএসে আবেদন শুরু হবে । এবার ভর্তিতে শিক্ষার্থীরা পাঁচটির পরিবর্তে পছন্দের ১০টি কলেজের নাম দিতে পারবেন। বিগত কয়েক বছরের মত এবারো এসএসসির ফলের ভিত্তিতেই একাদশ শ্রেণীতে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে। ভর্তির আবেদন করা যাবে ২৬ মে থেকে ৯ জুন পর্যন্ত। শিক্ষা বোর্ড থেকে আরো বলা হয়েছে, একাদশ শ্রেণীতে ভর্তি নিয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের বিচলিত হওয়ার কোন কারন নেই সকল সরকারি-বেসরকারি কলেজে পর্যাপ্ত পরিমাণ আসন সংখ্যা আছে। ভর্তিচ্ছুক শিক্ষার্থীরা তার প্রাপ্ত জিপিএ অনুযায়ী কলেজ নির্ধারণ করলে একাদশ শ্রেণীতে সকলকে ভর্তি করে নেওয়া হবে।#

 

আরএইচ

পছন্দের আরো পোস্ট