আজ বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথের ১৫৫তম জন্মবার্ষিকী

robindroআজ রোববার ২৫শে বৈশাখ বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথের ১৫৫তম জন্মবার্ষিকী। ১২৬৮ বঙ্গাব্দের এই দিনে তিনি জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। জন্মের এত বছর পরেও তিনি বাঙালির জীবনে স্বরণীয় হয়ে আছেন, আরও কয়েক দশক পরেও থাকবেন। তিনি চির নতুনের কবি, বর্তমান এবং ভবিষ্যতের কবি। মৃত্যুহীন অনন্ত জীবনের সাক্ষর বয়ে যাবেন যুগ থেকে যুগান্তরে।

 

রবীন্দ্রনাথ বাংলার কবি, বাঙালির কবি। তবে তিনি নিজেকে বিশ্বচরাচরের অংশ হিসাবে বিশ্বাস করতেন। বাঙালিকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেছেন, তুমি নিছক বাঙালি নও, তুমি বিশ্বচরাচরের অংশ।

 

সকলের সঙ্গে মিলিত হয়ে প্রেমের মধ্যে বাঁচতে বলেছেন রবীন্দ্রনাথ। সঙ্গে যুক্ত করতে বলেছেন প্রণীজগৎ, নিসর্গ, প্রকৃতিকে। শুধু তাই নয়, শিল্পের জগৎ, কল্পনার জগতের সঙ্গে যুক্ত হয়ে নিজের বিস্তার ঘটাতে বলেছেন।

 

রবীন্দ্রনাথের ভাষায় যুক্ত করো হে সবার সঙ্গে মুক্ত করো হে বন্ধ। সঞ্চার করো সকল কর্মে শান্ত তোমার ছন্দ। চরণপদ্মে মম চিত নিস্পন্দি করো হে। নন্দিত করো, নন্দিত করো, নন্দিত করো হে।’

 

প্রতিবছরের মতো নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে নোবেল বিজয়ী এই বাঙালি কবিকে স্মরণ করবে তার অগণিত ভক্তরা। শুধু দুই বাংলার বাঙালিই নয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বাংলা ভাষাভাষী কবির জন্মবার্ষিকীর দিবসটি পালন করবে হৃদয় উৎসারিত আবেগ ও শ্রদ্ধায়।

 

বিশ্বকবির জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক পৃথক বাণী দিয়েছেন।

 

Post MIddle

জাতীয় পর্যায়ে কবিগুরুর জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে সরকার। ঢাকাসহ দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দিবসটি যথাযোগ্যভাবে উদযাপন করা হবে। বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনও বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।

 

জাতীয় পর্যায়ে কবির ১৫৫তম জন্মবার্ষিকী উদযাপনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকবেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। সভাপতিত্ব করবেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নুর। স্বাগত বক্তব্য দেবেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব বেগম আকতারী মমতাজ। স্মারক বত্তৃতা করবেন অধ্যাপক সনৎকুমার সাহা। আগামীকাল বিকাল তিনটায় সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় ঢাকাস্থ ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।

 

এদিকে, রবীন্দ্রনাথ এবং তার সহধর্মিনী মৃনালিনী দেবেীর স্মৃতি বিজড়িত খুলনার ফুলতলা উপজেলার দক্ষিণ ডিহিস্থ ‘রবীন্দ্র কমপ্লেক্স’ এ খুলনা জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে তিন দিনব্যাপী কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এতে রয়েছে প্রতিদিন লোকমেলা ও সাংস্কৃতিক আনুষ্ঠানসহ আলোচনা সভা। আজ বিকাল চারটায় অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচটি ইমাম। কবিগুরুর স্মৃতিবিজড়িত কুষ্টিয়ার শিলাইদহ, নওঁগার পতিসরেও কবির জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।

 

একশ বছরেরও বেশি আগে বাঙালি পাঠকদের প্রতি রবীন্দ্রনাথের জিজ্ঞাসা ছিল আজি হতে শতর্বষ পরে /কে তুমি পড়িছ বসি আমার কবিতাখানি / শত কৌতুহল ভরে / অথবা, আজি হতে শতর্বষ পরে / এখন করিছো গান সে কোন্ নুতন কবি /তোমাদের ঘরে !

কবির আশঙ্কার জবাবে বলা যায়, শত বছর পরে এখন অনেক নতুন কবি এসেছেন, নব নব সৃষ্টিতে প্রতিনিয়ত স্ফীত হচ্ছে আমাদের সাহিত্য এবং সংগীতের ভূবন। তারপরেও আমাদের রবীন্দ্রনাথ মাত্র একজন। এখনকার নবীনদের সৃষ্টির উৎসও তিনি। এখনো জীবনের সবকিছুতে হাত বাড়াতে হয় রবীন্দ্রনাথে। তাই কবির বসন্ত গান শতবছর পরেও ধ্বনিত হয় নবীন কবি আর পাঠকের বসন্ত দিনে।

 

প্রসঙ্গত, রবীন্দ্র নাথ প্রথম নোবেল বিজয়ী বাঙ্গালি কবি । ১৯১৩ সালে গীতাঞ্জলী কাব্যগ্রন্থের জন্য তিনি সাহিত্যে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হন। কবির গান-কবিতা, বাণী এই অঞ্চলের মানুষের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তির ক্ষেত্রে প্রভূত সাহস যোগায়। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধে শুধু নয়, চিরকালই কবির রচনাসমূহ প্রাণের সঞ্চার করে। আমাদের প্রতিটি সংগ্রামেই কবির চিরায়ত রচনাসমগ্র আজীবন স্মরণের শীর্ষতায় আবিষ্ট হয়ে আছে।#

 

আরএইচ

পছন্দের আরো পোস্ট