শেকৃবিতে হাঁস-মুরগির বাজার শুমারি প্রশিক্ষণ
ক্রমবর্ধমান খাদ্য চাহিদার সাথে দিন দিন বাড়ছে প্রোটিনের চাহিদা। ভারত থেকে গরু আমদানি কমায় বেড়ে যাচ্ছে পোল্ট্রি তথা হাঁস-মুরগির চাহিদা। তাই ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে গড়ে উঠছে নিত্য-নতুন হাঁস-মুরগির খামার, দোকান ও বাজার। অপরদিকে এসব বাজারে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে জীবন্ত হাঁস-মুরগির ক্রয়-বিক্রয় সংক্রামক রোগ-ব্যাধির বিস্তারসহ নানাভাবে জনসাস্থ্যের প্রতি বিরূপ প্রভাব ফেলছে। এসব সমস্যার সমাধানের জন্য দরকার জীবন্ত হাঁস-মুরগির বাজারের সংখ্যাগত ও গুনগত সঠিক তথ্য তথা হাঁস-মুরগির বাজারের বিজ্ঞানসম্মত শুমারি।
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের যৌথ উদ্যোগে এবং শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের এনিম্যাল সায়েন্স এন্ড ভেটেরিনারি মেডিসিন অনুষদের সহযোগিতায় এবছর এমন একটি হাঁস-মুরগির বাজার শুমারি হতে যাচ্ছে। যার অংশ হিসেবে গত ১৪ ও ১৫ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সম্মেলন কক্ষে অনুষদের ১ম ও ২য় ব্যাচের শিক্ষার্থীদের নিয়ে একটি প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করা হয়।
দুই দিনব্যাপী এ প্রশিক্ষণ কর্মশালায় খাদ্য ও কৃষি সংস্থার বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিবর্গ ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে বিজ্ঞানসম্মতভাবে হাঁস-মুরগির বাজার শুমারি করার পদ্ধতিগত কৌশলের উপর তত্ত্বীয় ও ব্যবহারিক প্রশিক্ষণ প্রদান করেন।
প্রশিক্ষণের প্রথম দিন, উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর মোঃ শাদাত উল্লা, সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এফএও ইসিটিএডি এর কান্ট্রি টিম লিডার (বাংলাদেশ) ড. এরিক ব্রুম। অনুষদের ডিন ও প্রকল্পের সমন্বয়ক প্রফেসর ড. মোঃ মোফাজ্জল হোসাইনের সভাপতিত্বে এবং সহ-সমন্বয়ক ও মেডিসিন এন্ড পাবলিক হেলথ বিভাগের চেয়ারম্যান ড. কে, বি, এম, সাইফুল ইসলামের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ শহীদুর রশীদ ভুঁইয়া, কোষাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. মোঃ হযরত আলী এবং পোল্ট্রি বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান ও শেকৃবি গবেষণা বিভাগের পরিচালক প্রফেসর ড. মোঃ আনোয়ারুল হক বেগ।

অনুষ্ঠানে বক্তারা ক্রমবর্ধমান চাহিদার বিপরীতে সঠিক গুণ ও মান সম্পন্ন হাঁস-মুরগির সরবরাহ নিশ্চিত করতে এধরনের শুমারির উপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন। জীবন্ত হাঁস-মুরগির ক্রয়-বিক্রয় নানাভাবে জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি স্বরূপ বিধায় সামগ্রিক জনসাস্থ্য ব্যবস্থাপনা ও নীতি নির্ধারণে এ ধরণের শুমারি অত্যাবশ্যক। জাতীয় স্বার্থ সংশ্লিষ্ট এমন একটি উদ্যোগ নেয়ার জন্য আয়োজক ও সহযোগী সকলকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন তাঁরা।
প্রশিক্ষণের প্রথম দিনে বৈশ্বিক অবস্থান নির্ণায়ক (জিপিএস) যন্ত্র ব্যাবহার করা এবং মাঠ পর্যায়ে কাজের পদ্ধতি সম্পর্কে ধারণা দেয়া হয় এবং দ্বিতীয় দিনে স্থানীয় ছয়টি বাজারে গিয়ে হাতে-কলমে যন্ত্র ব্যবহার চর্চা ও তা যাচাই করা হয়। সবশেষে দুই সিটি কর্পোরেশনের ৩০ জন ভেটেরিনারি ইন্সপেক্টরদের সাথে শিক্ষার্থিদেরকে পরিচিত করিয়ে দেয়া হয়, যারা মাঠ পর্যায়ে সকল প্রকার সহযোগিতা করবেন। প্রশিক্ষণ শেষে খাদ্য ও কৃষি সংস্থা ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদেরকে সনদ প্রদান করা হয়।
৩১ টি গ্রুপ ও ছয়টি দলে বিভক্ত হয়ে বাজার শুমারির মুল কাজ শুরু হবে দুইটি ধাপে। প্রথম ধাপে অনুষদের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থিরা কাজ শুরু করবে আগামী ২৮ জানুয়ারি থেকে এবং দ্বিতীয় ধাপে অনুষদের পঞ্চম বর্ষের শিক্ষার্থিরা কাজ শুরু করবে আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে। প্রাথমিক গণনার কাজ চলবে কাজ শুরু করার পর থেকে ১৪ দিন পর্যন্ত।#
লেখাপড়া২৪.কম/শেকৃবি/আরএইচ