রাবির গ্রন্থাগাগারে ‘গ্রুপ স্টাডি’ কক্ষ চালু

ru library photoরাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারে গ্রুপ স্টাডি বা আলোচনা কক্ষ চালু করা হয়েছে। গ্রন্থাগারের নিচতলায় পুরাতন ইস্যূ শাখার কক্ষটি এখন ব্যবহৃত হচ্ছে শিক্ষার্থীদের গ্রুপ স্টাডি কক্ষ হিসেবে। শিক্ষার্থীরা দীর্ঘ দিন ধরেই এমন একটি কক্ষের দাবি করে আসছিল। গত ৩০ নভেম্বর কক্ষটি চালুর পর শিক্ষার্থীরা সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সেখানে নিজস্ব বইপত্র নিয়ে ও বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার পড়াশুনা করছেন।

 

কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার সূত্রে জানা গেছে, রাবির কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সাধারণ ও বিজ্ঞান পাঠকক্ষসহ দুষ্প্রাপ্য শাখায় কম্পিউটারে লেখা কোনো কাগজ বা বই নিয়ে প্রবেশের অনুমতি নেই। এতে করে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন সময় গ্রন্থাগারে বই ও নোট নিয়ে প্রবেশের অনুমতি চায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে। কিন্তু নিরাপত্তার কারণে গ্রন্থাগার প্রশাসন ওই অনুমতি দেয়নি। শিক্ষার্থীরা তাই গ্রন্থাগারের একটি নির্দিষ্ট কক্ষ দাবি করে আসছিল। এ বছরের ১০ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে মানববন্ধ শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, ছাত্র উপদেষ্টা ও গ্রন্থাগার প্রশাসককে একটি স্বারকলিপি দেয়।

 

সাত দফা দাবি সংবলিত ওই স্বারকলিপিতে শিক্ষার্থীরা কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারে বই-পুস্তুক ও মুদ্রণলিপি নিয়ে প্রবেশের অনুমতিও চান। বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার প্রশাসক ওই সময়ে শিক্ষার্থীদেরকে একটি পড়ার কক্ষ বরাদ্দ দেওয়ার আশ্বাস দেন। যেখানে শিক্ষার্থীরা নিজেদের বই নিয়ে পড়াশুনা করতে পারেন। শিক্ষার্থীদের সেই দাবির পর কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের নিচ তলার দক্ষিণ ব্লকের অবস্থিত ইস্যূ শাখাটি দুই তলায় নিয়ে যাওয়া হয়। পুরাতন সেই ইস্যূ শাখাতে গত ৩০ নভেম্বর শিক্ষার্থীদের আলোচনা কক্ষ চালু করা হয়। ওই দিন ফিতা কেটে আলোচনা কক্ষটি চালু করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মুহম্মদ মিজানউদ্দিন, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক চৌধুরী সারওয়ার জাহান ও রাজশাহীর সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাংসদ আখতার জাহান। এসময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক সাদেকুল আরেফিন মাতিন ও কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের প্রশাসক অধ্যাপক সফিকুন্নবী সামাদীসহ আরও অনেকেই।

 

IMG_20151205_140621172বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বলছেন, ওই কক্ষটি চালুর পর তাদের অনেকেই দীর্ঘক্ষণ সেখানে গিয়ে চাকুরি বা বিভাগের বই নিয়ে গিয়ে পড়াশুনা করছেন। বই নিয়ে প্রবেশ করতে পারায় সেখানে নিজের মতো করে পড়াশুনা করা যাচ্ছে। এতে করে আগামীতে বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় রাবির অংশগ্রহণ বাড়বে বলেও মনে করেন শিক্ষার্থীরা।

 

Post MIddle

তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের পপুলেশন সায়েন্স এন্ড হিউম্যান রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী আবিদ হাসান অনীক বলেন, বিশাল কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারটিতে নতুন বইয়ের সংগ্রহ খুবই কম। বিভাগের চাহিদা মতো বই না পাওয়ায় গ্রন্থাগার ব্যবহার করার ইচ্ছা থাকে না। পুরনো বই থাকায় সেখানে গিয়ে আর নতুন বইয়ের চাহিদা মিটছে না। এতে করে দিন দিন সেখানে যাওয়া বন্ধ করে দিচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।

 

বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের প্রশাসক অধ্যাপক সফিকুন্নবী সামাদী বলেন, শিক্ষার্থীদের জন্য আলাদা একটি আলোচনা বা গ্রæপ স্টাডি কক্ষ চালু করার পরিকল্পনা অনেক আগে থেকেই ছিল। কিন্তু কক্ষের অভাবে তা করা সম্ভব হয়নি। পরে ইস্যূ শাখাটি দ্বিতীয় তলায় নিয়ে আসায় একটি কক্ষ ফাঁকা হয়। সেখানেই শিক্ষার্থীদের কক্ষ আলোচনা কক্ষ চালু করা হয়।

 

তিনি আরও বলেন, বিভাগের ক্লাসের ফাঁকে কিংবা অন্য সময়ে শিক্ষার্থীরা ওই কক্ষে এসে পড়াশুনা করছেন। এতে করে শিক্ষার্থীদের পড়াশুনার নতুন একটি ধারা শুরু হয়েছে। কক্ষটি চালুর পর শিক্ষার্থীরা সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সেখানে পড়াশুনা করছেন বলেও জানান তিনি।

 

লেখাপড়া২৪.কম/রাবি/তমাল/এমএএ-০৩০৭

পছন্দের আরো পোস্ট