ইবির ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতি, লাখ টাকা জরিমানা
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় মোবাইল ও হেডফোনের মাধ্যমে জার্লিয়াতি করার দায়ে নাহিদ সুলতানা নামের এক ছাত্রীকে আটক করা হয়েছে। পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন করার দায়ে আটক ছাত্রীকে এক লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে দুই মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। সেই সাথে অসদুপায় অবলম্বনের কাজে সহযোগীতা ও মোবাইল হেডফোন সরবরাহ ও মোবাইলে উত্তর সরবরাহের দায়ে এক কর্মচারী ও এক সাজ্জাদ হোসেন নামের এক ছাত্রের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করেছে আদালত।
প্রক্টর অফিস সূত্রে জানা যায়, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান ভর্তি পরীক্ষার হলে সব ধরণের ইলেক্ট্রনিক্স ডিভাইস নিষিদ্ধ করে প্রশাসন। পরীক্ষা হলে প্রবেশের আগে মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে তল্লাশি করে পরীক্ষার্থীদেরকে প্রবেশ করানো হয়। জানা গেছে, নাহিদ ফারাজানা নামের এক ভর্তিচ্ছু বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষদ ভবনের ৩৩১ নং কক্ষে পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে। সমাজবিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ‘সি’ ইউনিটের তৃতীয় শিফটের পরীক্ষা চলাকালে ওই শিক্ষার্থী মোবাইল ও হেডফোনের মাধ্যমে উত্তরপত্র পুরণ করছিল। এসময় কর্তব্যরত শিক্ষকদের সন্দেহ হলে তারা ওই ছাত্রীকে তল্লাশী করে মোবাইল ও হেডফোন উদ্ধার করেন।
এসময় কর্তব্যরত শিক্ষকরা ওই ছাত্রীকে আটক করে প্রক্টর ও আইন শৃংখলা বাহিনীর কাছে হস্তান্তর করে। পরে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে কুষ্টিয়ার সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমান আদালত অভিযুক্ত ছাত্রীকে এক লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে দুই মাস বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন। পরীক্ষা বিধি না মেনে পরীক্ষায় জালিয়াতি ও ইলেক্ট্রনিক্স ডিভাইস ব্যবহারের অপরাধে এই দন্ড দেয়া হয়েছে বলে প্রক্টর অফিস জানিয়েছে।
এদিকে অভিযুক্ত ছাত্রীকে দন্ড দেয়ার পাশাপাশি জালিয়াতির অপরাধে সহযোগীতা ও মোবাইলে উত্তর সরবরাহের অপরাধে দুই জনের নামে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। প্রক্টর অফিসের ঘনিষ্ট সূত্র জানা গেছে, বাংলা বিভাগের কর্মচারী সজল কুমার দাশ পরীক্ষার হলে প্রবেশের আগে ওই ছাত্রীর কাছে মোবাইল ও হেডফোন সরবরাহ করে। এছাড়া বাংলা বিভাগের ২০০৯-১০ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র সাজ্জাদ হোসেন সাজু মোবাইলে ফোনকলের সাহায্যে ওই ছাত্রীর কাছে উত্তর সরবরাহ করে। সূত্রটি জানিয়েছে, মোবাইল ব্যবহারের এক পর্যায়ে কর্তব্যরত শিক্ষকরা ওই ছাত্রীকে হাতেনাতে সনাক্ত করে প্রক্টর ও আইন শৃংখলা বাহিনীর কাছে সোপর্দ করে।
ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুল ইসলাম বলেন-‘ছাত্রলীগের নাম ব্যবহার করে কেউ কোন অপরাধ করলে তার দায় ছাত্রলীগ নেবে না। অপরাধী যেই হোক না কেন তার কোন ছাড় দেয়া উচিত নয়।’ প্রক্টর ড. মাহবুবর রহমান বলেন-‘ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী পুলিশ প্রশাসন কাজ করবে বলে আশা করছি। তবে অভিযুক্ত কর্মচারী ও ছাত্রের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এব্যাপারে অভিযুক্তদের সর্বোচ্চ ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির সুপারিশ করবো। কোন অপরাধীকে ছাড় দেয়া হবে না।’
উল্লেখ্য, বাংলা বিভাগের সাজ্জাদ হোসেন সাজুর বিরুদ্ধে এর আগেও ভর্তি পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন, প্রশ্নফাঁস, উত্তরপত্র সরবরাহ সহ ডজনখানেক অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এসব ব্যাপারে যথাযথ কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। ছাত্রলীগের ঘনিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, অভিযুক্ত সাজ্জাদ ভর্তি পরীক্ষার সক্রিয় জালিয়াত চক্রের মুল হোতা। সাজ্জাদের সাথে কর্মকর্তা, কর্মচারীসহ কয়েকজন ছাত্রনেতা ও কর্মী জড়িত রয়েছে।
লেখাপড়া২৪.কম/ইবি/নবীন/এমএএ-০১৯৩