নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা নববর্ষ উদযাপিত
জাককানইবি প্রতিনিধি।
‘বরিষ ধরা-মাঝে শান্তির বারি’ শীর্ষক প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে নানা আয়োজনে উচ্ছ্বাস ও আনন্দের সাথে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে চৈত্রসংক্রান্তি ও বাংলা নববর্ষের প্রথমদিন পহেলা বৈশাখ-১৪৩০ উদযাপিত হয়েছে। শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী, শিশুসহ নানা বয়সের দর্শনার্থীদেরসহ উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখরের নেতৃত্বে বর্ণাঢ্য মঙ্গলশোভা যাত্রাও করা হয়।
পহেলা বৈশাখ উপলক্ষ্যে শুক্রবার (১৪ এপ্রিল) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের জয়ধ্বনি মঞ্চ থেকে দিবসের কার্যক্রম শুরু হয়। প্রথমেই জাতীয় সঙ্গীত ও বৈশাখকে আহ্বান করে ‘এসো হে বৈশাখ..এসো এসো’ গান পরিবেশন করেন সঙ্গীত বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। এরপর উপস্থিত দর্শকদের উদ্দেশ্যে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর।
তিনি বলেন, পাকিস্তানিরা আমাদের বাংলা নববর্ষ পালনে বাঁধা তৈরি করেছিলেন। তারা বলেছিলেন আমাদের এই সংস্কৃতি পাকিস্তানের সংস্কৃতির সাথে চলবে না। কিন্তু বাঙালি তার সংস্কৃতিকে বর্জন করেনি। পাকিস্তানকে বর্জন করেছে। পরবর্তীকালে যতরকমের সামরিক স্বৈরাচার এসেছে তারাও বাঙালি সংস্কৃতির বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান সুস্পষ্ট করেছিলেন, বাঙালি কিন্তু তার সংস্কৃতিকেই রক্ষা করেছেন। বাঙালি তার সংস্কৃতি সামনে নিয়ে এগিয়ে গেছেন।
উপাচার্য বলেন, এরপরেও আমাদের পেছনে নানা রকমের তত্ত্ব আসে, নানা রকমের ভয় আসে কিন্তু আমাদের তরুণ সমাজ;যারা বাঙালি সংস্কৃতি রক্ষার ধারক তারা সেই ভ্রুকুটিতে কখনোই ভয় পায় না। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আমরা এ কথাই বলতে চাই যে, বাঙালি সংস্কৃতি রক্ষার জন্য আমরা সবসময় জাগরুক আছি, আমরা সবসময় একতাবদ্ধ আছি। একারণে আমাদের বাঙালি সংস্কৃতি রক্ষার লড়াইয়ে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সদস্যবর্গ সকলেই ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে যাবো।
সামনের বছর অত্যন্ত সুন্দর ভাবে যেন কাটে, দেশে গণতন্ত্র যেন সুরক্ষিত থাকে, দেশে যাতে উন্নয়নের ধারা আরও বেগবান হয়, বৈশ্বিক পরিস্থিতিকে পেছনে ফেলে আমরা যেন আমাদের অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রাখতে পারি এটাই আমাদের প্রত্যয়, যোগ করেন তিনি।
এরপর জয়ধ্বনি মঞ্চ থেকে শুরু হয় মঙ্গল শোভাযাত্রা। শোভাযাত্রাটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। বিশ^বিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখরের নেতৃত্বে গোটা বিশ^বিদ্যালয় পরিবার মঙ্গল শোভাযাত্রায় অংশ নেন। বৈশাখী সাজে এই শোভাযাত্রায় সামনে-পেছনে বাদ্যের তালে তালে চলে নৃত্য, হাতে হাতে ছিল বাহারি মুখোশ। পুষ্পাকৃতির চরকি, টেপা পুতুল আর পাখির শিল্পকাঠামো শোভাযাত্রাকে দেয় বাঙালির চিরায়ত আবহ।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. নজরুল ইসলাম, ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন ও শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. মো. রিয়াদ হাসান, বিজ্ঞান ও প্রকৌশল অনুষদের ডিন ও প্রক্টর ড. উজ্জ্বল কুমার প্রধান, রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ ড. মো. হুমায়ুন কবীর, পরিচালক (ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা) তপন কুমার সরকার, শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জান্নাতুল ফেরদৌস, কর্মকর্তা পরিষদের সভাপতি আবদুল্লাহ আল মামুন, সাধারণ সম্পাদক রামিম আল করিম, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি নজরুল ইসলাম বাবুসহ অন্য শিক্ষক-কর্মকর্তা ও ছাত্র-ছাত্রীবৃন্দ।
এদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় চৈত্রসংক্রান্তি উপলক্ষ্যে জয়ধ্বনি মঞ্চের সামনে ফানুস উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর ফানুস উড়িয়ে উৎসবের উদ্বোধন করেন। এসময় উপস্থিত দর্শনার্থীদের দেশীয় ফল পরিবেশন করা হয়।