জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশেষ শিক্ষক প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অঙ্গীভূত বঙ্গবন্ধু মুক্তিযুদ্ধ বাংলাদেশ গবেষণা ইনস্টিটিউটের উদ্যোগে ‘স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস’ বিষয়ে বিশেষ শিক্ষক প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আজ মঙ্গলবার (১০ জানুয়ারি ২০২৩) গাজীপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাসে সিনেট হলে এই শিক্ষক প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু হয়।

মহান মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতার চেতনা ও মূল্যবোধ প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে ধারণ ও লালনের লক্ষ্যে ‘স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস’ শীর্ষক এই কোর্সটি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক ও স্নাতক (সম্মান) পর্যায়ে শিক্ষার সকল শাখার সিলেবাস-এ অবশ্য পাঠ্য হিসাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। কলেজ পর্যায়ে ইতিহাস চর্চায় সত্যনিষ্ঠ জ্ঞানপ্রবাহ সৃষ্টির প্রয়োজনে ইতিহাস বিষয়ের শিক্ষকদের সমন্বয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় বিশেষ এই শিক্ষক প্রশিক্ষণ কার্যক্রম আয়োজন করেছে।

১৫ দিনব্যাপী আয়োজিত এই প্রশিক্ষণ চলবে ২৪ জানুয়ারি ২০২৩ তারিখ পর্যন্ত। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতাধীন অনার্স, মাস্টার্স ও ডিগ্রি কলেজের ইতিহাস, রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিষয়ের ৮০ জন শিক্ষক এই প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করেছেন। প্রশিক্ষণের প্রথম দিনের দ্বিতীয় সেশনে রিসোর্স পার্সন হিসেবে অংশগ্রহণ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও ইউজিসির সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এ কে আজাদ চৌধুরী। তিনি ‘বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়’ শীর্ষক শিরোনামে প্রশিক্ষণার্থীদের পড়িয়েছেন।

Post MIddle

ড. এ কে আজাদ চৌধুরী আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন একজন নিবেদিতপ্রাণ গবেষক। দেশ-বিদেশের বিভিন্ন গবেষণা জার্নালে তাঁর শতাধিক প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। এ দিন সকালের সেশনে রিসোর্স পার্সন হিসেবে প্রশিক্ষণে অংশ নিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. মেজবাহ কামাল। তিনি ‘আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা এবং ‘৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান’ শীর্ষক শিরোনামে প্রশিক্ষণার্থীদের পড়িয়েছেন। তিনি দেশে ও বিদেশে ৪০ বছরেরও অধিক সময়কালীন শিক্ষকতাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সুনামের সঙ্গে কাজ করেছেন। তাঁর শতাধিক আর্টিক্যাল এবং বুক চ্যাপ্টার জাতীয় ও আন্তর্জাতিক রিসার্চ জার্নালে ও বইয়ে প্রকাশিত হয়েছে।

পর্যায়ক্রমে এই প্রশিক্ষণে রিসোর্স পার্সন হিসেবে যুক্ত হবেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা আ. ক. ম. মোজাম্মেল হক এমপি, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী প্রফেসর ড. হারুন-অর-রশিদ, বিশিষ্ট সমাজবিজ্ঞানী প্রফেসর ড. অনুপম সেন, বাংলা একাডেমির সভাপতি সেলিনা হোসেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর প্রফেসর ড. আতিউর রহমান, সাবেক শিক্ষাসচিব নজরুল ইসলাম খান, বীর প্রতীক সাজ্জাদ আলী জহির, বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রফেসর আবদুল মান্নান চৌধুরী, নাসিরউদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু, আশালতা বৈদ্য, প্রফেসর ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. আবু মো. দেলোয়ার হোসেনসহ দেশের খ্যাতিমান শিক্ষাবিদ, ইতিহাসবিদ, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ও অভিজ্ঞ রাজনীতিক। এই প্রশিক্ষণে কোর্স উপদেষ্টা হিসেবে যুক্ত আছেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কারিকুলাম উন্নয়ন ও মূল্যায়ন কেন্দ্রের ডিন ও বঙ্গবন্ধু মুক্তিযুদ্ধ বাংলাদেশ গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) প্রফেসর ড. মো. মনিরুজ্জামান শাহীন।

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. মশিউর রহমান বলেছেন, ‘জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার মানোন্নয়নে বদ্ধপরিকর। আমরা অচিরেই সারাদেশের অধিভুক্ত কলেজের সকল শিক্ষককে প্রশিক্ষণের আওতায় নিয়ে আসবো। প্রশিক্ষণে নতুন নতুন বিষয় যুক্ত করে শিক্ষকদের দক্ষ ও যোগ্য করে গড়ে তুলবো। আমার বিশ্বাস দক্ষ মানবসম্পদ তৈরিতে এ উদ্যোগগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।’

পছন্দের আরো পোস্ট